সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা থেকে ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহারসহ তিন দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ফলে গতকাল তৃতীয় দিনের মতো দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল।
এদিকে একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও আন্দোলনে নেমেছেন। এতে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।
‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহারের পাশাপাশি শিক্ষকদের অন্য দুটি দাবি হলো প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। এসব দাবিতে সোমবার থেকে সর্বাত্মক কর্মসূচি পালন করছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি অনেক ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।মঙ্গলবার শিক্ষকদের আন্দোলনকে অযৌক্তিক হিসেবে মন্তব্য করেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তার এ বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেই সঙ্গে তাকে আলোচনায় বসার চ্যালেঞ্জও জানিয়েছেন।
গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, ‘পেনশন কর্তৃপক্ষের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এবং অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। সারা দেশের ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, আলোচনায় বসুন। অর্থমন্ত্রী কেন আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছেন? যারা এ স্কিম করেছেন, তারা নিজেরা এর আওতায় আসুন এবং দেখুন। আলোচনা ও আন্দোলন একসঙ্গে চলবে।’
জিনাত হুদা বলেন, ‘বক্তব্য পরিষ্কার, আমরা তিন দফা দাবি জানিয়েছি। প্রত্যয় স্কিম বাতিল করতে হবে; সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করতে হবে। এসব দাবি মেনে না নিলে আমরা লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।’
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘দাবি মেনে নিলে আমরা আগামীকালই (বৃহস্পতিবার) কাজে ফিরে যাব। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে যাব না।’
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা প্রত্যয় স্কিম করেছেন, তারা হয়তো মন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। তিনি তার জায়গা থেকে কথা বলেছেন। আমরা যখন তাকে বোঝাতে পারব, তখন হয়তো তিনি আমাদের সঙ্গে একমত হবেন।