সংবাদ সম্মেলনে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ

দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে পারিবারিক বার্ষিক ব্যয় ৭৭০ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে পারিবারিক পর্যায়ে বার্ষিক ৭৭০ কোটি (৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন) ডলার অর্থ ব্যয় হয়। এ অর্থ পরিবারগুলো তাদের পারিবারিক আয় থেকেই ব্যয় করে বলে দাবি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ। সংস্থাটি বলছে, প্রতি অর্থবছরে জলবায়ু অর্থায়নের চাহিদা ২৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার হলেও গত অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ও আন্তর্জাতিক উৎস থেকে অর্থায়ন হয়েছে যথাক্রমে ৩ দশমিক ১ ও শূন্য দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। তবে দুর্যোগের কারণে হারানো কর্মদিবসের আর্থিক মূল্য বিবেচনায় নিলে সার্বিক জলবায়ু অর্থায়নে ঘাটতি দাঁড়ায় বছরে ৩৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘সবুজ অর্থনীতি ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু, পরিবেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এসব দাবি করেন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান।

তিনি বলেন, ‘প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে জলবায়ু পদক্ষেপের জন্য প্রতিশ্রুতি জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ১১৪ দশমিক ২ মেগাওয়াট নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বছরে সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দ প্রয়োজন ৩ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নবায়নযোগ্য শক্তি বাবদ ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা প্রয়োজনের ৩ দশমিক ২ শতাংশ।’

জাকির হোসেন খান বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু সম্পর্কিত বাজেট বরাদ্দ জিডিপির ১ শতাংশেরও কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাড়লেও মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় প্রকৃত বরাদ্দ ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। জলবায়ু সহনীয়তা ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতে বাজেটে জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ ব্যয় করা প্রয়োজন। অথচ দেশে দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়লেও প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু সম্পর্কিত বরাদ্দ রাখা হয়েছে জিডিপির শূন্য দশমিক ৭০৬ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায়ও কমেছে।’

জলবায়ু অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার তহবিল থেকে অনুদান পেতে বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার আহ্বান জানান তিনি।

২০২৩ সালের মধ্যে জলবায়ু সম্পর্কিত বাজেট জিডিপির ৩ শতাংশ না হলে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে পড়বে। সেজন্য আমদানীকৃত জ্বালানির ওপর কার্বন করারোপের অনুরোধ জানান জাকির হোসেন খান। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ভারতের ক্লিন এনভায়রনমেন্ট ফির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘কয়লা, তেল ও এলপিজি গ্যাসের ওপর ৫ শতাংশ কার্বন করারোপ করা হলে রাজস্ব খাতে বার্ষিক ১ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। আর ১০ শতাংশ হলে এ আয় হবে ৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা।’

ক্রমবর্ধমান পানি ও মাটি দূষণসহ শ্রমিকের দেহের ভেতরে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তৈরি পোশাকের ভোক্তার ওপর পরিবেশ সংরক্ষণ ফি বা করারোপের সুপারিশও জানিয়েছে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন