ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাস্তার মোড়ে মোড়ে ভ্রাম্যমাণ
পশু খাদ্যের অসংখ্য দোকান বসেছে রাজধানীর অলিগলি এবং মূল সড়কের আশপাশে। এসব অস্থায়ী
দোকানে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পশুখাদ্য। ছাগলের জন্য কাঁঠাল পাতার দুটি ডাল মিলিয়ে
তৈরি করা একটি আঁটির দাম রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা। আর গরুর জন্য একমুঠো শুকনো খড় ২০ টাকা
এবং সবুজ ঘাস মান ও জাতভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়।
রোববার (১৬ জুন) রাজধানীর হাজারীবাগ, ঝিগাতলা,
ধানমন্ডি এবং নিউমার্কেট, জুরাইন, গেন্ডারিয়া, পেস্তগোলাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়
এমন চিত্রই চোখে পড়ে। সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানগুলোতেই খড়, নেপিয়ার ঘাস, ভুসি,
কাঁঠাল পাতা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তবে এসব পশু খাদ্যের দাম চাওয়া হচ্ছে
অস্বাভাবিক বেশি।
বিক্রেতারা জানান, শহরে যারা কোরবানি দেওয়ার
উদ্দেশ্যে গরু-ছাগল কিনেছেন তাদের যেন পশুর খাবারের জন্য চিন্তা করতে না হয় সেজন্যই
এসব ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝিগাতলা ফুটপাতের ওপর অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসা মনির হোসেন
বলেন, সাভার মানিকগঞ্জ থেকে এসব পশুখাদ্য নিয়ে আসা হয়েছে। দাম কিছুটা বাড়তি হওয়ার
কারণ হচ্ছে দূর থেকে এসব আনতে পরিবহন খরচ বেশি হচ্ছে। পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে দাম
রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে শুকনো খড় ১০ টাকা আঁটি থেকে শুরু হয়েছে। এখন যে যত পরিমাণে
নেবে সে হিসেবে টাকা দিতে হবে। বিভিন্ন জাতের সবুজ ঘাসের আঁটির দাম ২০-৫০ টাকা। আবার
ছোলার ভুসি ৬০ টাকা, গমের ভূষি ৫০ টাকা এবং মোটা লবণ ৩০-৫০ টাকা কেজি দাম রাখা হচ্ছে।
রাজধানীর হাজারীবাগের শেরে বাংলা রোডের তিন
মাজার এলাকায় কাঁঠালের পাতা বিক্রি করতে দেখা যায়। বিক্রেতা সাকিব হোসেন বলেন, আমাদের
নিজস্ব গাছ আছে। সেখান থেকেই এসব কাঁঠাল পাতা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতি আঁটি ৫০ টাকা
বিক্রি হচ্ছে। যারা ছাগল ও ভেড়া কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন তারা এই পাতা কিনছেন। ঢাকায়
সবাই কাঁঠাল পাতা পাবে না। সেজন্য আমরা গাছ কেটে নিয়ে এসেছি। ভালো বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি এসব দোকানে রাখা হয়েছে বাঁশের
বা হোগলা পাতার তৈরি দাঁড়ি (পাটি)। যার প্রতিটির দাম হাঁকা হচ্ছে আকারের উপর ভিত্তি
করে। তবে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যেই রয়েছে এসব পাটির দাম।
এমন অবস্থায় অনেকটা নিরুপায় হয়েই রাজধানীর
মানুষজনও চড়া দামেই এসব পণ্য কিনছেন। তারা বলছেন, দিন পেরিয়ে রাত পোহালেই ঈদুল আজহা।
এরপরেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে মুসলমানরা পশু কোরবানি করবেন। এরই মধ্যে
যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী গরু-ছাগল কিংবা অন্যান্য পশুও কিনে ফেলেছেন অধিকাংশ মানুষজন।
শহুরে বাস্তবতায় এসব পশুর খাবার যোগাড় করা কঠিন। কারণ গ্রাম থেকে নিয়ে আসা ছাগল,
ভেড়া, গাড়ল কিংবা গরু, মহিষ প্রাকৃতিক খাবারে অভ্যস্ত। আর শহরে ঘাস কিংবা কাঁঠাল পাতা
জোগাড় করা কঠিন কাজ। সেজন্য দাম বেশি হলেও পশুকে সতেজ রাখার জন্য কিছুটা বাড়তি দামেই
খাবার কিনতে হচ্ছে।
রবিউল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, দুটি
ডালের কাঁঠাল পাতার দাম ৫০ টাকা। এটা অবিশ্বাস্য। তারপরও শহরের বাস্তবতায় নিতেই হবে।
আরিফুর রহমান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, গরুর
জন্য খড় এবং ভুসি নিয়েছি। দাম বেশি কি কম সেটা বলতে পারছি না। কারণ, আমরা এগুলো নিয়মিত
কেনাকাটা করি না।