বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য সংকট হিসেবে দেখা গেছে মূল্যস্ফীতি, উচ্চ সুদহার ও ভোক্তাব্যয় বৃদ্ধি। এসব সংকট মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো। সে তুলনায় পরিস্থিতি ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছে এশিয়ার প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিগুলো। এর কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের নীতির দিকে না তাকিয়ে স্বাধীনভাবে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে এসব দেশে। এর ফল হিসেবে ভালো অবস্থানে রয়েছে এশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। খবর রয়টার্স।
রিজিওনাল ইকোনমিক আউটলুক প্রতিবেদনে সম্প্রতি আইএমএফ বলেছে, এশিয়ার দেশগুলোয় বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার তুলনামূলক কম। কারণ এ অঞ্চলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো দেশীয় পরিস্থিতির ওপর বেশি মনোযোগ দিয়েছে। পাশাপাশি মুদ্রানীতি নির্ধারণের সময় ভবিষ্যতে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ কী করতে পারে তার ওপর খুব বেশি নির্ভর করেনি।
আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি প্রতিবেদনে বলেছে, এশিয়ায় মূল্যস্ফীতি কমে আসছে। এ চাপ এখন সফট ল্যান্ডিংয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থিক নীতিগুলো সহজ করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তবে আগামী দুই বছরে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের গতি কিছুটা ধীর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর এশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মনোযোগ আকর্ষণ করেন আইএমএফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন। তিনি বলেন, ‘ফেড যা করে তার সঙ্গে নিজেকে খুব শক্ত করে বেঁধে রাখবেন না। অভ্যন্তরীণভাবে মুদ্রাস্ফীতির কী অবস্থা তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিন।’
এশীয় দেশগুলো বর্তমানে মুদ্রার বিনিময় হারের গতিবিধি মোকাবেলায় ভালো অবস্থানে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন।
এদিকে আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে, এ অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালের ৫ শতাংশ থেকে কমে চলতি বছর ৪ দশমিক ৫ ও ২০২৫ সালে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। ধীরতা সত্ত্বেও স্বল্পমেয়াদি ঝুঁকিগুলো সুষমভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব।
প্রতিবেদনে চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে গুরুত্বের সঙ্গে আনা হয়েছে। আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালে ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। তবে সামনে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাবে। চলতি বছর প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৬ ও ২০২৫ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশ হবে।