একই সঙ্গে বিদ্বান, গবেষক ও প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ড. মসিউর রহমান একজন কৃতবিদ্য ব্যক্তি। একজন সফল প্রশাসক ও উজ্জ্বল নীতি প্রণেতা। একই সঙ্গে একজন বিদ্বান, গবেষক ও প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ। তবে সাম্প্রতিককালে উনার পরিচয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে। ড. মসিউর রহমানের কাছে আসার প্রথম সুযোগ হয় ১৯৯৬ সালে। তিনি তখন বহিঃসম্পদ বিভাগে সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। বিশ্বব্যাপী বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রণীত কাঠামোগত সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে প্রচুর আলোচনা ও সমালোচনা চলছিল। সে সময় বৈশ্বিক মূল্যায়ন সূচিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে গবেষকরা কাজ করেন, সেটার নেতৃত্ব দেয়ার জন্য উনি আমার নাম প্রস্তাব করেন। সে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলতে পারি, নীতি সম্পর্কিত সম্যক জ্ঞানকে তিনি পরবর্তী সময়ে নীতি সংস্কারের ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়েছেন। নীতি সংস্কারের প্রশ্ন উঠলেই অন্তত চারটি ক্ষেত্রে তার অবদান উল্লেখ করা যায়। প্রথমটি অবশ্যই বৈদেশিক সাহায্য সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উনার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সম্পৃক্ততা। দ্বিতীয়ত, অবদান রেখেছেন জ্বালানি খাতের বিকাশে। তৃতীয়ত, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং চতুর্থত, ভারতের ট্রেন শিপমেন্টের ক্ষেত্রে। এসব ক্ষেত্রে উনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থেকে সুনির্দিষ্ট চেহারা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। সুনির্দিষ্ট প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিকল্প যে হয়নি, তা না। ড. মসিউর রহমানকে আমরা অবশ্যই একজন প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ এবং বিদ্বান গবেষক হিসেবেও চিহ্নিত করতে পারি। সেখানে উনার যে বহুবিধ লেখা আছে। তার ভেতর থেকে গুরুত্বপূর্ণ উনার অভিসন্দর্ভটি, যার বিষয় ছিল শ্রীলংকার আয় বণ্টন এবং তার রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ। এটি পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত হয়। এটি উনার প্রথম দিককার লেখার ভেতরে অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য ও আকর্ষণীয় রচনা ছিল। এর পরও উনি প্রচুর লেখা লিখেছেন। সেই লেখাগুলো বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। হয়তো সংগ্রহ করে দুয়েকটি ভলিউমে নিয়ে আসতে পারলে ভালো হবে। ড. মসিউর রহমানের যে সম্মাননা বণিক বার্তা থেকে দেয়া হচ্ছে, সেটা যথোপযুক্ত ও সময়োপযোগী। আমি তাকে সে জন্য অভিনন্দন জানাই। তার সুস্বাস্থ্য ও কর্মময় জীবন কামনা করি। 

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: সম্মাননীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন