ডাকাতিয়ার ভাঙনের কবলে চাঁদপুরের মৈশাদী ইউনিয়ন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, চাঁদপুর

চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে হঠাৎ করেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে টানা বৃষ্টিতে ভাঙন আরো তীব্র হয়েছে। সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের বেশকিছু বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নদীতীরের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত এক দশকে শুধু মৈশাদী ইউনিয়নে ডাকাতিয়া নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার অনেক বাড়িঘর ও ফসলি জমি। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বসভিটা হারিয়ে পথে বসবে ওই এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার। ডাকাতিয়া নদীতে প্রতি বছরই ঘরবাড়ি ভাঙলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের।

তবে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, ডাকাতিয়া নদীর বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন রোধে একটি ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এটি পাস হলেই ভাঙন রোধে কাজ করা হবে। তবে সম্প্রতি যে ভাঙন দেখা দিয়েছে, তা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তারা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, নদী থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে রেলস্টেশন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজারসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি। নদীভাঙন রোধ না হলে হুমকির মুখে পড়বে এসব প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। তাই নদীভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানায় তারা। একই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করেছে।

নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা সোলেমান বলেন, ‘প্রতি বছর নদী আমাদের জমি ভেঙে নিয়ে যায়। বিষয়টি আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ সবাইকে জানিয়েছি। সবাই আশ্বাস দিয়ে যায়। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। কেউ আমাদের দিকে নজর দেয় না। ১০ বছরে দুই কিলোমিটার এলাকার জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে গেছে শতাধিক পরিবার। এখন আমাদের ভিটেবাড়ি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িই যদি নদীতে তলিয়ে যায়, তাহলে থাকব কোথায়। ঘরবাড়ি ভেঙে গেলে রাস্তায় থাকতে হবে আমাদের।’

একই এলাকার আসমা বেগম জানান, এখন নদীটি যেখানে ভাঙছে, সেখানে তাদের বসতঘর ছিল। প্রতি বছর এখানে নদীভাঙন দেখা দেয়। গত বছর ঘরগুলো সরিয়ে নিয়েছেন। এরপর আর ঘর করার জায়গা নেই তাদের।

মৈশাদী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, ডাকাতিয়া নদীভাঙনের বিষয়টি বহুবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এখনো স্থায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মৈশাদী ইউনিয়নের মানুষের দুর্দশা লাঘব হয়নি এখনো।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত জানান, ভাঙনের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। বিষয়টি দেখার জন্য তার দপ্তর থেকে লোক পাঠিয়েছেন। তিনি নিজেও ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শনে যাবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন