বিশ্ব নদী দিবস

বাংলার নদী বাংলার জল কেন হারায় প্রবাহ হয় নিশ্চল

ড. এএসএম সাইফুল্লাহ

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ‘হোম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড, এ মেমোয়ার’ পড়ছিলাম আর যখন ‘রিভারস ইন বেঙ্গল’ অংশে প্রবেশ করলাম তখন গতি থেমে গেল। মনে হচ্ছিল নদীতে নৌকায় ভাসছি, জোয়ার-ভাটায় সামনে পেছনে যাচ্ছি আসছি, ঢেউয়ের তালে দোল খাচ্ছি। নদী থেকে আর সরে আসতে পারছি না। আহা! নদীময় বাংলাদেশের চিরায়ত দৃশ্য যেন ধরা দিল নোবেল বিজয়ীর স্মৃতিকথায়। আমার শৈশব-কৈশোরজুড়েও রয়েছে নদীময় স্মৃতি। যোগাযোগের সবচেয়ে মজার এবং ভয়ানক অভিজ্ঞতাও নদীকেন্দ্রিক। সেই নদীগুলো এখন কেমন আছে খুব জানতে ইচ্ছা করে। আগের মতো যে নেই সেটা নিশ্চিত। পরিবর্তিত অবস্থা কেমন এবং কেনইবা এমন হলো সেটা জানা খুব দরকার টিকে থাকার প্রয়োজনেই। আজ যেসব নদীর কথা এখানে আলোচনা হবে কালের চক্রে সেগুলোও হারিয়ে যাবে এবং হয়ে থাকবে ইতিহাসের অংশ।

বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী প্রবাহিত হয়েছে যার মধ্যে ৫৪টি নদী সরাসরি ভারত থেকে এবং তিনটি মিয়ানমার থেকে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক ‘বাংলাদেশের-নদী’ নামক প্রকাশনায় বলা হয়েছে, গ্রীষ্মে ৩১০টি নদী প্রবাহিত হয়, বোর্ডটি তাদের অন্য গবেষণায় পুনরায় প্রকাশ করেছে যেখানে ৪০৫টি নদীর কথা বলা হয়েছে। তবে নদীর এ সংখ্যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে পাওয়া যাচ্ছে, কারণ নদীকে সংজ্ঞায়িত করা এবং সে অনুসারে সংখ্যা নিরূপণে পর্যাপ্ত গবেষণার অভাব রয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক সূত্র বলছে দেশে নদীর সংখ্যা ৭০০ থেকে ৮০০। এও বলা হচ্ছে যে অনেক নদী এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে এবং দূষণ ও দখলের কবলে বেশকিছু হারিয়ে যাওয়ার পথে। উল্লেখ করার মতো ১৭টি নদী এখন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। যা হোক, ব্রহ্মপুত্রকে “নদ” বলা হয় এবং সেটাকে সাধারণ শব্দ “নদী” হিসেবে নিলে আন্তর্জাতিক নদীর সংখ্যা ৫৮টি হতে পারে। নদী কীভাবে ‘নারী’ এবং নদ কীভাবে ‘নর’ হলো সে নিয়ে বিস্তর আলোচনা কিংবা বিতর্ক হতেই পারে। সংক্ষেপে বলা চলে, নদীগুলোর লিঙ্গ বিভাজন ইতিহাস থেকে বিভিন্নভাবে এসেছে তবে তা প্রধানত নদীর উৎসের ওপর নির্ভর করেই হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আকার বা প্রবাহের দ্রুততার ভিত্তিতে হতেও পারে।

সময়ের সঙ্গে আমরা অনেক নদীর নামও ভুলতে বসেছি। এই যে কত নদী, যেমন বালু, বংশী, বড়াল, বিশখালী, ব্রহ্মপুত্র, বুড়াগৌরাঙ্গ, বুড়িগঙ্গা, বুড়িশ্বর, বলেশ্বর, ভৈরব, চিত্রা, চিকনাই, চিরি, চিত্রা, চন্দনা, ডাকাতিয়া, ধলেশ্বরী, ধানসিঁড়ি, ধনু, ধরলা, ধিপা, ধলাই, দলু, গড়াই, গোমতী, গড়াল-মধুমতী, হালদা, জলঢাকা, যমুনা, মনু, মধুমতী, মহানন্দা, মাকুন্দ, মুক্তেশ্বরী, সোমেশ্বরী, সুগন্ধা, সুরমা, হালদা, ইছামতী, ঝিনাই, কালীগঙ্গা, কংস, করতোয়া, কর্ণফুলী, কীর্তনখোলা, কপোতাক্ষ, কুশিয়ারা, কপোতাক্ষ, কুমার, খোয়াই, খিরু, নাংতাই, আতিয়া, আন্ধারমানিক, আত্রাই, মহানন্দা, মনু, নবগঙ্গা, নাফ, পশুর, পুংলি, পুনর্ভবা, রাইমঙ্গল, রূপসা, সাংগু, শীতলক্ষ্যা, সুরমা, তিস্তা, তিতাস, তুলসী গঙ্গা, তুরাগ, শিবসা, রূপসা, ভদ্রা, মাথাভাঙ্গা, ছোট ফেনী নদী, বড় ফেনী নদী, মুহুরী, পদ্মা, সন্ধ্যা, লৌহজং, লোহালিয়া, নরসুন্দা, নীলগঞ্জ, নবগঙ্গা, তেঁতুলিয়া, পায়রা, দুধকুমার, ঘাগটের বাইরেও আরো কত ছোট-বড় নদী সারা দেশকে জালের মতো জড়িয়ে রেখেছে তার ইয়ত্তা নেই। অনেক নদী আছে যার স্বতন্ত্র নামও নেই, বরং যে এলাকায় প্রবাহিত হচ্ছে সে এলাকার নামে পরিচিত। নদীগুলোর নামের সঙ্গে রয়েছে আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ধর্মাচার আরো কত কী!

বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও সংস্কৃতি দুটোই নদীবিধৌত বদ্বীপ দ্বারা প্রভাবিত এবং অনেকাংশে জলবায়ুও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ নামের বদ্বীপটি মূলত গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনাবাহিত টনকে টন পলি দীর্ঘকাল ধরে জমে সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক নদীর বাইরে সাঙ্গু এবং হালদা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তি লাভ করে এবং দেশের ভেতর সমাপ্ত হওয়া দুটি অভ্যন্তরীণ নদী। একদিকে ব্রহ্মপুত্র দীর্ঘতম নদ, অন্যদিকে পদ্মা যেমন সবচেয়ে দ্রুতগতির নদী তেমনি যমুনা সবচেয়ে প্রশস্ত নদী। যমুনা, বৃষ্টির সময় প্রায় চার মাইলের মতো প্রশস্ত হয়, পশ্চিমে প্রবাহিত হয়। দেশের মধ্য দিয়ে বিস্তৃতভাবে যেসব উপনদী প্রবাহিত হয়েছে তার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার (১৫ হাজার মাইল) বলে মনে করা হয়। দেশের বেশির ভাগ ভূমি নদীবাহিত পলি দ্বারা গঠিত, ফলে এগুলো হয়েছে উর্বর। বলা চলে, আমরা যে খাদ্যশস্য উৎপাদন করি তার পেছনে রয়েছে অপরিসীম অবদান।

বাংলাদেশের ভূভাগ ও জলভাগ অনেকাংশেই গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র দ্বারা প্রভাবিত। গঙ্গা নদীটি ভারতের বাইরে যখন বাংলাদেশে প্রবাহিত হলো তখন গঙ্গার প্রধান চ্যানেলটি পরিচিতি পায় পদ্মা নদী নামে। একইভাবে তিস্তা নদীর সঙ্গে সঙ্গমের পর ব্রহ্মপুত্র নদীর প্রধান চ্যানেলটি যমুনা নদী নামে পরিচিতি পায়। বগুড়া জেলায় বেশ কয়েকটি নদী রয়েছে। করতোয়াকে জেলার কেন্দ্রীয় জল বিভাজক হিসেবে চিন্তা করে অন্য নদীগুলোকে পূর্ব ও পশ্চিম অংশে আলাদা করা যেতে পারে।

বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার নদীগুলো এক সময় ‘নদীয়া নদী’ (রিভার্স অব নদীয়া) নামে পরিচিত ছিল। নদীয়া জেলার একটি অংশ ছিল বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলা এবং এ অঞ্চলে প্রবাহিত নদীগুলো একত্র হয়েই ‘নদীয়া নদী’ নামে পরিচিতি লাভ করেছিল এবং সাবেক নদীয়া জেলার (বর্তমান কুষ্টিয়া) সব নদী পদ্মার (ভাটির গঙ্গা) শাখা ছিল। ইতিহাস বলে, এক সময় গঙ্গা ভাগীরথীর গতিপথ ধরে সমুদ্রের দিকে যাত্রা করে, কিন্তু ধারণা করা হয় এরও আগে দার্জিলিং-হিমালয়ের পানিকে সমুদ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্য কোনো প্রবাহ ছিল এবং ভৈরবকে সেই নদীগুলোর মধ্যে একটি মনে করা হয়। পরবর্তী সময়ে গঙ্গা পূর্বদিকে প্রবাহিত হয় এবং পদ্মা শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং উত্তরাঞ্চলের উজানে অবস্থিত বাংলার সব পানি প্রবাহিত করে ভাটির নিম্নাঞ্চলের দিকে। বর্তমানে পদ্মা, ভৈরব, ভদ্রা, মাথাভাঙ্গা, গড়াই, কালিগঙ্গা, ইছামতী (পাবনা) কুষ্টিয়া এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোয় প্রবহমান দেখা যায়। ‘নদীয়া নদীর’ বিস্তার খুলনাতেও রয়েছে। এ অঞ্চলের নদীগুলোর মধ্যে বলেশ্বর, ভৈরব, কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, ময়ূর, পশুর, রূপসা, শিবসা বাহারি সব নামে চুলের বেণির মতো বিস্তৃত হয়েছে বিশাল অঞ্চলজুড়ে।

নদী তার গতিপথে যে বাঁক এবং ভাঁজে ভাঁজে ভূমি তৈরি করে সেগুলোর প্রকৃতি উত্তর কিংবা দক্ষিণাঞ্চল যেদিকেই তাকাই প্রায় একই ধরনের। দেশের পশ্চিমাঞ্চলের সব নদীই আত্রাই নদীর উপনদীর শাখা বলা চলে এবং এগুলো পদ্মার সঙ্গে গোয়ালন্দে এসে মিলিত হওয়ারও ১৯ কিলোমিটার (১২ মাইল) আগে উত্তরে যমুনায় মিলিত হয়। পশ্চিম অংশের খিয়ার অঞ্চলের মধ্য দিয়ে নগর, তুলসীগঙ্গা এবং অন্য ছোট ছোট নদী প্রবাহিত হয়।

ছোটবেলায় দেশের প্রধান নদীর নাম শিখতে গিয়ে আমরা অনেকেই সুর দিয়ে পড়তাম ‘কর্ণফুলীর কানে ফুল দেখে নাই কেউ, পদ্মার বুকে আছে বড় বড় ঢেউ... ব্রহ্মের মেয়ে নেই আছে শুধু পুত্র বাংলার বড় নদী এই তার সূত্র’। ধারণা করা হয় অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে, সম্ভবত ১৭৮৭ সালে তিস্তায় ভয়াবহ বন্যার ফলস্বরূপ, ব্রহ্মপুত্র তার গতিপথ পরিবর্তন করে এবং গোয়ালন্দে এসে পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়। তিস্তা এক আশ্চর্য চঞ্চলা নদী, গতি পরিবর্তনে যেন সে পায় অপার আনন্দ। নদীটি কখনো গঙ্গার সঙ্গে মিলিত হয়েছে, কখনো গঙ্গার শক্তির কাছে হার মেনে বাইরের দিকে স্থানান্তরিত হয়েছে এবং অবশেষে ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছে। মনে করা হয়, এক সময় গারো পাহাড়ের পাদদেশে পূর্বদিকে ব্রহ্মপুত্র প্রবাহিত হতো। সম্ভবত ১৮৩০ সালের মধ্যে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পূর্ণতা পায় এবং এর ফলস্বরূপ টাঙ্গাইল জেলার নদীপ্রবাহে ধীরে ধীরে আমূল পরিবর্তন ঘটে এবং কালের চক্রে ব্রহ্মপুত্রের পুরনো চ্যানেলটি তার বর্তমান অবস্থায় গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। ব্রহ্মপুত্র অনেক প্রাচীন নদ। ব্রহ্মপুত্র যে প্রাচীনতম নদ তার প্রমাণ হলো, ব্রহ্মপুত্রের আকৃতি একটি বৃহৎ নদীর চিহ্ন যা শিলং মালভূমির দক্ষিণ প্রান্ত বরাবর সিলেট অববাহিকায় বিস্তৃত। ওয়ার্ল্ড এটলাসের তথ্য অনুযায়ী দীর্ঘতম নদীর তালিকা করতে হলে নদীগুলোর পর্যায়ক্রম হতে পারে; ব্রহ্মপুত্র (১৮০২ মাইল), গঙ্গা (বাংলাদেশে পদ্মা ১৫৬৯ মাইল), সুরমা (৫৫৯ মাইল), আত্রাই (২৪২ মাইল), মহানন্দা (২২৪ মাইল), তিস্তা (১৯২ মাইল), কর্ণফুলী (১৬৮ মাইল), মেঘনা (১৬৪ মাইল), বংশী (১৪৮ মাইল)। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র ভুটান, চীন, ভারত ভ্রমণ করে বাংলাদেশে এসেছে, গঙ্গা, মহানন্দা ও তিস্তার রয়েছে ভারতের সঙ্গে অংশীদারত্ব।

যে স্রোতধারায় এসব নদীর জন্ম সেসব নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করায় বাংলাদেশ অংশের অনেক নদী শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে পড়ে। বাঁধের মাধ্যমে জল প্রত্যাহার, পরিকাঠামো নির্মাণের মতো কর্মকাণ্ড যেমন শুষ্ক মৌসুমে এ দেশে পানির সংকট সৃষ্টি করে তেমনি বর্ষাকালে বন্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। উজানে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত একতরফাভাবে বহু আন্তঃসীমান্ত নদী, যেমন তিস্তা, গোমতী, খোয়াই, ধরলা, দুধকুমার, মনুর উৎসে একাধিক বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছে, ফারাক্কা বাঁধ তো রয়েছেই। মুহুরী, ছাগলনাইয়া, ফুলছড়িসহ অনেক নদী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের মোট প্লাবনভূমির প্রায় ৮০ শতাংশ এ গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশে মোট অববাহিকায় মাত্র ৭-৮ শতাংশ এবং অবশিষ্ট অঞ্চল চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে অবস্থিত। তাই বলা চলে, এ নদীগুলোর প্রবাহের ওপর নির্ভর করে বাংলার জল, ফুল ও ফসল আর সব মিলিয়ে প্রাণপ্রাচুর্য এক কথায় আমাদের বেঁচে থাকা। আরেক কথায়, এ নদী অনেক ক্ষেত্রে কেড়ে নিচ্ছে কারো সর্বস্ব, আবার ফিরিয়ে দিচ্ছে আরেকজনকে। নদী তার চলার পথে এ দেয়া-নেয়ার খেলা খেলেই চলছে। সে যা-ই বলি না কেন নদীগুলো দেশটাকে বাঁচিয়ে রেখেছে শিরা ও ধমনীতে প্রবাহ সঞ্চালনের মাধ্যমে। শত নদী পুরো দেশটাকে মানবদেহের শিরা, উপশিরা আর ধমনীর মতোই জড়িয়ে রেখেছে, যেমনটা দেখি প্রাণিদেহে। মানবশরীরে বহমান হাজারো রক্তপ্রবাহ নালির আলাদা নাম না থাকলেও মাতৃভূমির শরীরজুড়ে বহমান নদীরূপী প্রবাহ নালিগুলোকে আমরা ভালোবেসে কত বাহারি নাম দিয়েছি। কিন্তু দিন দিন নদীরূপী শিরা আর ধমনীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে, পথে পথে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। দক্ষিণ বাংলার ধমনী পায়রা, লোহালিয়া, তেঁতুলিয়া, আন্ধারমানিকের মতো উন্মত্ত নদীগুলোও আজ অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। এ যেন ‘যে নদী হারায়ে স্রোত চলিতে না পারে সহস্র শৈবালদাম বাঁধে আসে তারে’। খরস্রোতা নদীগুলো গভীরতা যেমন হারিয়েছে তেমনি হারাচ্ছে স্রোত এবং প্রতি বছর উজান থেকে পানির সঙ্গে আসা মিলিয়ন টন পলি নদীর বুকে জমা হয়ে তৈরি করছে কেবল চর আর চর। নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে দ্রুত, বাড়ছে ভাঙন, ঘরবাড়ি সহায়-সম্পদহীন হচ্ছে নদীতীরের মানুষ। একদিকে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, জলাশয় কমছে সঙ্গে হারাচ্ছে মাটির উর্বরতা, অন্যদিকে মাটির শুষ্কতা, অনুর্বরতার কারণে ব্যাহত হচ্ছে কৃষি। শুরুতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের স্মৃতিতে থাকা সেই নদী আর নেই। কে বাঁচাবে নদী, কে বাঁচাবে দেশের প্রকৃতিকে? আর কত হারাবে বাংলার নদী, বাংলার জল আর কত হবে এ দেশের নদী নিশ্চল? বিশ্ব নদী দিবসে বরাবরের মতো সে প্রশ্ন পুনরায় থাকল।

ড. এএসএম সাইফুল্লাহ: অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগ

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন