ঋণের জালে আটকে পড়ছে তরুণ মালয়েশিয়ানরা।
এর প্রধান কারণ হলো বেকারত্ব ও কম বেতন। গত বছর প্রকাশিত দুটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে
দেশটির একজন অর্থনীতিবিদ এ কথা বলেন। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকের শ্রম বাজার
পর্যালোচনা এবং একই বছরের বেতন ও মজুরি সমীক্ষা রিপোর্ট দেখায়, ২৫-৩৪ বছর বয়সীদের
মধ্যে মোট বেকারত্ব ছিল ৩২ শতাংশ।
রিপোর্ট উদ্ধৃত করে মালয়েশিয়া ইউনিভার্সিটি
অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমইউএসটি) জিওফ্রে উইলিয়ামস বলেন, এই বয়সীদের বড় অংশের
গড় আয় ছিল দুই হাজার ৫৩ রিংগিট। কারো কারো দুই হাজার রিংগিটের নিচে। যা জীবনধারণ ব্যয়ের
জন্য অপ্রতুল।
আরো বলেন, মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে
চলতি বছর কুয়ালালামপুরের একজন ব্যক্তির মজুরি প্রায় ৩ হাজার ৮৯ রিংগিট হওয়া উচিত।
দম্পতিদের জন্য হবে পাঁচ হাজার ১৪৯ রিংগিট।
নিম্ন আয় ও বেকারত্বের কারণে দেশটির তরুণরা
উচ্চ ঋণে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের অনেকেই ঋণ পরিশোধে অক্ষম বলে ঘোষণাও দিচ্ছে। সাধারণত এ
সব ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ নেয়ার প্রবণতা বেশি।
উইলিয়ামস বলেন, শুধু তরুণদের জন্য নয়,
কম আয়ের পরিবারের জন্যও সমস্যা এটি। পরিবারের ভরণপোষণের জন্য কম বেতনে চাকরি নিতে
হচ্ছে তরুণদের।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে
স্নাতক করা শিক্ষার্থীদেরও ঋণ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু কম মজুরির কারণে অনেকেই তা করতে
পারে না। যা তাদের আরো ঋণের মধ্যে ঠেলে দেয়।
দেশটির যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী হান্না ইয়েহ
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ক্রেডিট কার্ডের ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ ও উপার্জনের আগে
ব্যয়ের কারণে অনেক যুবককে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছিল।
মূলত মন্ত্রীর বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদমাধ্যমের
কাছে মন্তব্য করেন জিওফ্রে উইলিয়ামস।
তবে ইউনিভার্সিটি মালায়ার মার্কেটিং বিভাগের
শিক্ষক নাজারি ইসমাইল মনে করেন, তরুণরা প্রায়শই নিজেদের সামর্থ্যের বাইরে জীবনযাপন
করে। বিলাসবহুল জীবন, সুন্দর বাসস্থান ও ব্যয়বহুল গাড়ির আকাঙ্ক্ষা তাদের ঋণ নিতে
বাধ্য করে।
এই ধরনের মূল্যবোধকে ভুল বলে উল্লেখ করেন
তিনি। যেখানে বিলাসবহুল গাড়ি, বাড়ির মালিকানা ও খরুচে ভ্রমণকে সাফল্যের চূড়ান্ত
লক্ষণ হিসেবে বিবেচেনা করে মানুষ।
নাজারি মনে করেন, নতুন মূল্যবোধ তৈরি করা
দরকার। যাতে তরুণরা বুঝতে পারে যে ব্যাংকের কাছে দেনাধার হওয়া এড়ানো উচিত।