স্বল্প সুদে এবং দীর্ঘমেয়াদে ঋণের অর্থ পরিশোধের সুযোগ প্রয়োজন

মোহাম্মদ সরওয়ার আলম , পরিচালক, গোল্ডেন ইস্পাত লিমিটেড এইচএম স্টিল অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড

একটি দেশের অবকাঠামো নির্মাণসামগ্রীগুলো বিশেষত ইস্পাত-সম্পর্কিত শিল্পগুলোর বিকাশ এবং -জাতীয় পণ্যের সহজলভ্যতা ব্যবহারের ওপর দেশটির প্রগতিশীল অর্থনীতির উন্নয়ন দৃঢ়ভাবে নির্ভর করে। শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশের অর্থনীতিতে উন্নয়ন ইস্পাত ব্যবহারের বিকাশের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। যদি একটি দেশের জিডিপি শতাংশ পর্যন্ত হয়, সেক্ষেত্রে ইস্পাত শিল্প প্রতি বছর কমপক্ষে ১৬ শতাংশ বাড়বে।

ইস্পাত শিল্প কেবল অর্থনৈতিক বিকাশ গতিময় করে না, ভারী প্রকৌশল নির্মাণের মতো অন্যান্য প্রশংসামূলক শিল্পেও একটি সুনির্দিষ্ট মৌলিক ভূমিকা পালন করে। বিগত দশকের তুলনায় ইস্পাতের চাহিদা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ক্রমান্বয়ে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। গত দশকে মাত্র দশমিক মিলিয়ন টন চাহিদা থেকে বর্তমানে থেকে দশমিক মিলিয়ন টন চাহিদা দাঁড়িয়েছে। চাহিদা ২০৩০ সালের মধ্যে ১৮ মিলিয়ন টনে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২০১২-১৪ সালে ইস্পাতের মাথাপিছু ব্যবহার ছিল মাত্র ২৫ কেজি, যা ২০২১-২২ সালের মধ্যে ৭০-৭৫ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশের ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দশমিক শতাংশ, যা গত দশকেও ছিল শতাংশ। এর মধ্যে ইস্পাত শিল্পের প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। আমাদের দেশে ইস্পাত শিল্পের চাহিদা মূলত দুটি পরিকল্পনার ওপর নির্ভরশীল। একটি হলো সরকারের এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি সরকারের অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম, অন্যটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাহিদা। মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ ইস্পাত সরকারের অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবহার হয়। আর ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাহিদা ২৫ শতাংশ বেসরকারি খাতে চাহিদা ১৫ শতাংশের মতো। কিন্তু আসন্ন বছরগুলোয় চাহিদা দ্রুত বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের ইস্পাত রি-রোলিং শিল্প দেশের সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া শিল্প প্রয়োজনীয় ইস্পাত পণ্য সরবরাহ করে পরিবহন শিল্প, পাওয়ার ভারী প্রকৌশল শিল্প এবং নির্মাণ শিল্পের মতো অন্যান্য শিল্পকে সমর্থন সহায়তা করে আসছে।

বিগত বছরে সরকার অনেক মেগা প্রকল্প নিয়ে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন শিল্পায়নের কাজ শুরু করেছিল। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পারমাণবিক প্রকল্প কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক মেগা প্রকল্পের কারণে দেশের স্থানীয় ইস্পাত বাজার ১৫-২০ শতাংশ বেড়েছে। এর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সরকার মেগা প্রকল্পের সঙ্গে সঙ্গে যদি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে, তবে সামগ্রিক ইস্পাতের চাহিদা আরো বাড়বে। আসন্ন বছরগুলোয় বেসরকারি খাত এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইস্পাত ব্যবহার হবে।

১৯৫২ সালে বাংলাদেশের ইস্পাত শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। বিএসআরএম সর্বপ্রথম স্টিল উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে কয়েকটি স্টিল মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। মোস্তফা হাকিম গ্রুপ ১৯৮৪ সালে তার প্রথম স্টিল প্ল্যান্ট গোল্ডেন আয়রন ওয়ার্কস লিমিটেড এবং ১৯৮৭ সালে গোল্ডেন স্টিল অ্যালয় ওয়ার্কস লিমিটেড নামে আরেকটি প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করে। আধা স্বয়ংক্রিয় মিলগুলো ৩৬ বছর ধরে এমএস বার তৈরি করছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাথাপিছু ইস্পাত ব্যবহার বাড়ায় গত দশকে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ইস্পাত নির্মাতারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে এগিয়ে এসেছেন। আমাদের দেশে ছোট-বড় মিলে প্রায় ৪০০টি স্টিল মিল রয়েছে। তাদের মোট বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় নয় লাখ মিলিয়ন টন। সর্বাধিক উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে AKS, BSRM, GPH Ispat, KSRM, Rahim Steel, Salam steel উল্লেখ্যযোগ্য। ইস্পাত শিল্পে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

দেশে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য মানসম্পন্ন নির্মাণসামগ্রীর অবদান অপরিহার্য। এটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনীতি উন্নত জীবনকে ত্বরান্বিত করে। এক্ষেত্রে আমরা ক্রমাগত সর্বোচ্চ মানের পণ্য উৎপাদন বাজারজাত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের উৎপাদিত দুটি ব্র্যান্ড (গোল্ডেন ইস্পাত এইচএম স্টিল) দেশের মানুষের নিরবচ্ছিন্ন আস্থা অর্জন করতে তা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। কারণ আমরা সর্বদা গুণগত মান, সঠিক ওজন সঠিক সময়ে মূল্যবান গ্রাহকের কাছে পণ্য সরবরাহের ধারাবাহিকতা বজায় রাখি।

আমাদের ইস্পাত শিল্পে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেগুলো আমাদের ব্যবসার ধারাবাহিকতাকে প্রভাবিত করে। আমি মনে করি, শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দিষ্ট নীতিমালা শিল্পের বিকাশকে ত্বরান্বিত করবে।

কাঁচামালের সহজলভ্যতা: ইস্পাত তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো বেশির ভাগ আমদানীকৃত কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে। বর্তমানে আমাদের দেশের শিপইয়ার্ড শিল্পটি দেশের চাহিদা অনুযায়ী পুরো কাঁচামাল সরবরাহ করতে পারে না। দেশে কাঁচামালের অপর্যাপ্ততা আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দামের অস্থিরতা আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। তদুপরি আমাদের উৎপাদনে ব্যবহূত বেশির ভাগ রাসায়নিক বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। কেননা আমাদের দেশে কাঁচামাল আহরণের তেমন কোনো খনিজ উৎস নেই।

করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশের ইস্পাত খাতটি বর্তমানে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। এই কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে কাঁচামাল আমদানিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় ইস্পাত শিল্পটি হাজার কোটি টাকা লোকসান করেছে।

তাছাড়া বিগত বছর থেকে এলসি সংকট মুদ্রাস্ফীতির কারণে শিল্পটির ধারাবাহিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব পড়ছে। সরকারের উচিৎ বিষয়টি নিয়ে দেশের শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে বাজেট-পূর্ববর্তী আলোচনার মাধ্যমে নীতিনির্ধারণ করা।

ব্যাংক সুদহারের তারতম্য ঝুঁকি: সরকারের মূল্যনীতিতে পরিবর্তন, ঋণ বা বিনিয়োগের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুদহার বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে। সুদহারের ধরনের বৃদ্ধি বেশির ভাগই ফ্লোটিং রেট লোন বা ঋণ সিকিউরিটিতে বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলোকে প্রভাবিত করে। ব্যাংকের সুদহার এককের অংকে নামিয়ে আনার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের যে যৌক্তিক দাবি তা পরিপালন একমাত্র বাজেটের মাধ্যমেই সম্ভব। উচ্চসুদের কারণে ব্যবসার ব্যয় বাড়ছে। শিল্পগুলো তাদের প্রতিযোগিতামূলক বাজার হারাচ্ছে। আমি মনে করি, এবারের বাজেটে ব্যাংকগুলোর নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি বাজেট-পূর্ববর্তী কমিটি তৈরি করা উচিত। যাতে বাজেটে ব্যবসায়ীদের মনোভাবের প্রতিফলন ঘটে। বিনিয়োগ না বাড়লে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন হবে।

বিদ্যুৎ গ্যাসের সহজলভ্যতা: ইস্পাত শিল্পগুলোয় বেশি পরিমাণ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন। সরকারের বিদ্যুৎ গ্যাস নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সহায়ক ভূমিকা শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। কেননা এদের নিয়মনীতিতে যেকোনো প্রতিকূল পরিবর্তন শিল্পকে প্রভাবিত করে।

নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা: সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তৈরি নীতিমালার যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন (যেমন কাস্টম আইন, আয়কর, মূল্য সংযোজন কর অন্যান্য) আমাদের ব্যবসায় বিরূপ প্রভাব ফেলে। ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা না থাকায় অনেক সময় ইস্পাত বাজারে অস্তিরতা দেখা দেয়। অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়াতে সরকার বিভিন্ন উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের স্টিল প্রস্তুতকারকদেরও এর আওতায় আনতে হবে। সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয় যানবাহন দ্বারা পণ্য স্থানান্তরের নিয়ম কঠোর করার পর এখন ইস্পাত উৎপাদনকারীরা পণ্য বহনে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। সরকারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালাই পারে ইস্পাত শিল্প বিকাশে ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে।

বন্দরের সুবিধা বাড়ানো: আমাদের দেশে বন্দরগুলোর সুবিধা অপর্যাপ্ত। এজন্য বড় জাহাজ বহনকারী স্ক্র্যাপ চট্টগ্রাম মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না। তবে নতুন বন্দর নির্মাণের সময় সরকারের বিদ্যমান বন্দরগুলো বিকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ প্রস্তাবিত মিরসরাই ওশান ফ্রন্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, বে টার্মিনাল পায়রা বন্দরের কথা বলা যেতে পারে। যদি চট্টগ্রামে বে টার্মিনালের গভীরতা বাড়িয়ে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সমন্বয়ে তৈরি করা হয় এবং ৩০-৪০ হাজার টন কার্গো সরাসরি বে-টার্মিনাল জেটি থেকে ছাড়তে পারে, তাহলে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের গতি বাড়বে খরচ কমবে। লাভবান হবে শিল্প-প্রতিষ্ঠান ভোক্তারা। প্রস্তাবিত বন্দরগুলো তৈরি হয়ে গেলে ইস্পাত নির্মাতারা সহজে স্ক্র্যাপ আনতে সক্ষম হবে। ফলে এখনকার চেয়ে আরো দ্রুত পণ্য উৎপাদন করা যাবে। এছাড়া বর্তমানে বন্দরগুলোতে বিদ্যমান জটিলতা দূরীকরণে বন্দর কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

অপর্যাপ্ত সরকারি নতুন প্রকল্প: এটি আমাদের ইস্পাত শিল্প বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের বার্ষিক উৎপাদনের ৬০ শতাংশ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহার হয়। তাই সরকারের সুদূরপ্রসারি উন্নয়নমূলক প্রকল্প শিল্পের বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। তাছাড়া বেসরকারি খাতের আবাসন প্রকল্পগুলো বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একটি প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে চললে পণ্যের সরবরাহকারীরা (স্টিলমেকার) ন্যায্য কার্যকারী মূলধনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারে। কিন্তু একটি প্রকল্পের বিলম্ব কোম্পানির আর্থিক ক্ষতিকে প্রভাবিত করে। সরকারের নীতিনির্ধারক প্রতিষ্ঠানদের আবাসন শিল্পটির উন্নয়নে কাজ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তাহলে সুফল পাওয়া যাবে।

ডলার সংকট অস্থিতিশীল বিনিময় হার: কয়েক মাস ধরেই ডলার সংকটের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের ইস্পাত শিল্প উৎপাদন খাতে। পর্যাপ্ত ডলার না থাকার কারণে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংকও আমদানিতে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) দিতে পারছে না। ডলার সংকটের কারণে গত বছরের আমদানিনির্ভর শিল্পটি তাদের কাঁচামাল আমদানিতে জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে। তাছাড়া ডলার রেটের ঊর্ধ্বমুখীতার কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বিশাল অংকের লোকসানে পড়েছে। ডলারের বাড়তি দামের কারণে তাদের ঋণের খরচ ২০-২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। সামগ্রিকভাবে এটি একটি বড় লোকসান। বছরের শুরুতে আমরা কাঁচামাল কেনার সময় ৮৬-৮৭ টাকা ডলার ধরে ঋণপত্র খুলেছি। সে হিসাবে পণ্য বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ঋণপত্র নিষ্পত্তি করার সময় ডলারপ্রতি ১১০-১১২ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। ফলে আমাদের বড় ধরনের মূলধন ঘাটতিতে পড়তে হয়েছে। তাছাড়া অস্থিতিশীল বিনিময় হারের কারণে আমাদের কাঁচামাল আমদানির খরচই ২০-৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে। সরকার যদি বাড়তি খরচ মেটাতে সহায়তা না দেয়, অর্থাৎ পেনডেমিক-পরবর্তী সময়ে শিল্প-প্রতিষ্ঠানদের যেভাবে প্রণোদনা দিয়েছিল, সেভাবে যদি এগিয়ে না আসে, তবে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান টিকে থাকবে না। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক কাঁচামালের দাম কমতে শুরু করলেও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে সে সুবিধা আমরা পাচ্ছি না। এমতাবস্থায় ইস্পাত শিল্পের বিশাল অংকের লোকসান মোকাবেলায় দেশে সরকারি-বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি স্বল্প সুদে এবং দীর্ঘমেয়াদে ঋণের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা করে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ায়, তাহলে শিল্পটি কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। এছাড়া বাজেটের আগে  উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে দেশের বিভিন্ন শিল্পগ্রুপের সঙ্গে সরকারের নীতিনির্ধারকদের আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট করণীয় ঠিক করা জরুরি বলে আমি মনে করি।

আমি আশা করি, সর্বোপরি সরকারের প্রগতিশীল নীতি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহায়ক ভূমিকা আমাদের দেশে ইস্পাত শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন