চট্টগ্রামের সব পাহাড়ের তালিকা চেয়েছেন আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বিভাগের সব কয়টি পাহাড়ের তালিকা (দাগ,খতিয়ানসহ) এবং এসব পাহাড়ের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা একটি আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মাহমুদুল হক এবং বিচারপতি মাহমুদুল হাসান তালুকদার এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত ২০১২ সালের ১৯ মার্চে  দেয়া রায়ের আলোকে পাহাড় কাটা রোধে সরকারের সংস্থাগুলো কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সে বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিবাদীদের প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
 
চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ জেলায় (চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি) অবস্থিত সব পাহাড় কাটা বন্ধে ২০১১ সালে একটি জনস্বার্থে একটি মামলা করে বেলা। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১২ সালে ১৯ মার্চ আদালত উল্লেখিত জেলাগুলোয় অবস্থিত সব পাহাড় কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ওইসব জেলায় পাহাড় কেটে কোনো আবাসন প্রকল্প বা ইটভাটা স্থাপন করা হয়ে থাকলে তা ভেঙে ফেলারও নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বন উজাড় বন্ধ করতে এবং পাহাড়ি অঞ্চলে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

বেলার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আদালতের সুষ্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড় (গরিবুল্লাহশাহ হাউজিং এর মুখে), ষোলশহর, শেরশাহ, আরেফিননগর, আকবরশাহ, ফিরোজশাহ এবং উপজেলার মধ্যে সীতাকুন্ড, বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়ন, সাতকানিয়ার লোহাগাড়া এসব এলাকার পাহাড় কাটা অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা ট্রাংক রোডের ফৌজদারহাট অংশ থেকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ১৮ টি পাহাড় কেটে প্রায় ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়ক নির্মাণ করা হয়। কক্সাবাজার জেলার ইদগাহ, ইসলামপুর, পিএমখালি, খুরুস্কুল, বাদশাগোনা, বৈদ্যঘোনা, পাহাড়তলী, ফাতেরঘোনা, সাহিত্যকা পল্লী ও কলাতলী ও রামু উপজেলার উখিয়ারঘোনা, জোয়ারিয়ানালা এবং উখিয়া উপজেলায় নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটা।

তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে যেইসব স্থানে পাহাড় কাটা চলছে তার মধ্যে রাঙ্গামাটি উপজেলার কাউখালি, নামিয়ারচর, লংগদু, রাজস্থালি, বাঘাইছড়ি ও কাপ্তাই, বান্দরবানের লামা ও ফাইতং এবং খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, রামগড়, পানছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা, সাজেক ও মহালছড়ি উল্লেখযোগ্য। এসব পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছ মহাসড়ক, রেললাইন, আবাসন, শিল্পকারকাখানার সম্প্রসারণ ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড় কাটা বন্ধে আদালতের রায় বাস্তবায়ন চেয়ে বেলা আবেদন করলে আদালত এসব দেন।

বেলা‘র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং তাঁকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন