আন্তর্জাতিক বাজারে আবারো কমেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। দুই মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ের কাছাকাছি অবস্থান করছে পণ্যটির বাজার। জি ৭ ভুক্ত দেশগুলো রুশ জ্বালানি তেলের ওপর প্রাইস ক্যাপ (সর্বোচ্চ মূল্যসীমা) প্রস্তাব করেছে। বর্তমান দামের তুলনায় প্রস্তাবিত দামের রেঞ্জ অনেক বেশি, যা সরবরাহ সংকটের উদ্বেগকে শিথিল করতে পারে। এ কারণেই মূলত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসোলিনের মজুদ প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বেড়ে যাওয়া এবং চীনে কভিড-১৯ প্রতিরোধে আরোপিত নানা বিধিনিষেধ বাজারে আরো নিম্নমুখী চাপ তৈরি করেছে।
গতকাল আইসিই ফিউচারসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজর আদর্শ ব্রেন্টের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য ৫০ সেন্ট বা দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৮৪ ডলার ৯১ সেন্ট।
অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৪৬ সেন্ট বা দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৭ ডলার ৪৮ সেন্টে।
প্রাইস ক্যাপে বেঁধে দেয়া দাম বর্তমান বাজারদরের তুলনায় বেশি হতে পারে, এমন খবর প্রকাশের পর বুধবারই বাজার আদর্শ দুটির দাম ৩ শতাংশেরও বেশি কমেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জি ৭ সমুদ্রপথে সরবরাহকৃত রুশ জ্বালানি তেলের সর্বোচ্চ মূল্যসীমা ব্যারেলপ্রতি ৬৫-৭০ ডলার বেঁধে দিতে পারে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এখনো এ দামে একমত হয়নি।
উচ্চ প্রাইস ক্যাপ রাশিয়াকে জ্বালানি তেল বিক্রি বাড়াতে আগ্রহী করে তুলতে পারে। ফলে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ সংকটের ঝুঁকি প্রশমিত হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
কমনওয়েলথ ব্যাংকের কমোডিটি অ্যানালিস্ট ভিভেক ধর বলেন, প্রাইস ক্যাপ প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হতে পারে। ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের উদ্বেগ কিছুটা শিথিল হতে পারে। যদি চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যারেলপ্রতি ৬৫-৭০ ডলারের এ প্রাইস ক্যাপে রাজি হয়, তবে চলতি প্রান্তিকে জ্বালানি তেলের গড় মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৯৫ ডলারের নিচে নামবে।
সম্প্রতি সব শীর্ষ অর্থনীতির দেশে মন্দার আশঙ্কা তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও ইউরো জোন বেশি ঝুঁকিতে। এ পরিস্থিতিতে সরবরাহ সংকটের উদ্বেগ কমেছে। কারণ মন্দা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা কমবে। অন্যদিকে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ আবারো ৭৫ বেসিস পয়েন্টে সুদের হার বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা জ্বালানি তেলের দামকে আরো নিম্নমুখী করে তুলবে।