টানবাজারে আরেক দফা কমল সুতার দাম

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

বাংলাদেশের সুতার অন্যতম পাইকারি মোকাম নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে আরেক দফা কমেছে সুতার দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব কাউন্টের সুতার দাম কমেছে -৪০ টাকা পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক বাজারে সুতা তৈরির কাঁচামাল তুলার দাম কমেছে। তাতেই দেশের বাজারে সুতার দাম কমছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০ কাউন্টের সুতা বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৪১-৮৭ টাকা দরে। দুই সপ্তাহ আগেও যার দাম ছিল ৪৩-৮৯ টাকা। সে হিসেবে ১০ কাউন্টের সুতার দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি টাকা। ২০ কাউন্টের কোয়ালিটি সুতার বাজারে দাম ৮৪-৯৫ টাকা। ১৫ দিন আগেও যা ছিল ৮৬ থেকে ৯৭ টাকা। অর্থাৎ সুতার দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি প্রায় টাকা।

এক্সপোর্ট কোয়ালিটির ২৪, ২৬ ৩০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা পাউন্ড দরে। আগে যা বেচাকেনা হয়েছিল ১৫৬-১৬৯ টাকা দরে। সুতার দাম কমেছে - টাকা পর্যন্ত। সুতাগুলো গার্মেন্টস সেক্টরে সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত হয়।

৪০ কাউন্টের (টানা) সুতার দাম দিতে হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা পাউন্ড। ১০-১৫ দিন আগেও যা বিক্রি হয়েছিল ১৬৫-১৭৮ টাকা দরে। সে হিসেবে দর কমেছে - টাকা। আগে ১৬৮-২০০ টাকা পাউন্ড দরে বিক্রি হওয়া ৫০ কাউন্টের সুতার দাম এখন ১৭৭-২১২ টাকা। এতেও কমেছে -১২ টাকা পর্যন্ত।

আগে যেখানে ৬০ কাউন্টের সুতার দাম ছিল ১৯০-২২৫ টাকা, এখন সেটা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি ১৭৫-২০৫ টাকা দরে। সুতার দাম কমেছে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত। আর ৮০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে প্রকারভেদে ৩১০-৩৩৫ টাকা দরে, দুই সপ্তাহ আগে যা ছিল ৩৩৩-৩৪৮ টাকা। সে হিসাবে ৮০ কাউন্টের সুতার দাম কমেছে ১৩-২৫ টাকা পর্যন্ত।

নারায়ণগঞ্জ ইয়ান মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি লিটন সাহা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সুতা তৈরির কাঁচামালের দাম বেশ কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে সুতার বাজারে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দফায় সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি কমেছে -৪০ টাকা পর্যন্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, তার প্রভাব পড়েছে দেশের গার্মেন্টস সেক্টরে। বিদেশী বায়ারদের অর্ডার অনেক কমে গিয়েছে। এছাড়া টানবাজারের বেশির ভাগ সুতার ক্রেতা উইভিং সেক্টরের তাঁতিরা। এমনিতেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের তাঁতিরা ভালো নেই। তার ওপর বিশ্বমন্দা দেখা দেয়ার তাঁতিদের কাপড় উৎপাদন অনেক কমে গিয়েছে। যে কারণে বাজারে সুতা বেচাকেনায় অনেক খারাপ অবস্থা চলছে।

বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন জানান, দাম কমলেও বেচাকেনা নেই বললেই চলে। বিশ্বমন্দার কারণে তাঁতিরা কাপড় উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশে কাপড় উৎপাদন খরচ অনেক কম হয়। দেশের বাজার ভারত চায়না কাপড়ে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় এবং দেশে তৈরি কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কিনছে কম। যে কারণে বাজারে সুতা বিক্রি অনেক কমে গিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের তাঁতি আসলাম হোসেন জানান, সুতা কিনে কাপড় তৈরি করলেও গ্রে কাপড় বেচাকেনা কমে গিয়েছে। যে কারণে আমাদের ঘরে গ্রে কাপড় পড়ে আছে। যে টাকা খরচ করে কাপড় উৎপাদন করেছি, সেই দামে গ্রে কাপড় বিক্রি করতে পারছি না। ফলে অনেক তাঁতি নতুন করে কাপড় উৎপাদনের জন্য সুতা নিচ্ছেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন