কিছু না করেই বেতন পান তিনি

বণিক বার্তা অনলাইন

শোজি মরিমোতোর বসবাস টোকিওর মতো দুনিয়ার অন্যতম ব্যয়বহুল শহরে। তার পেশার কথা শুনলে প্রথমে অবাক হতে পারেন। আসলে চাকরি একটা করেন বটে; তবে শুনলে মনে হবে কোনো কাজই নেই তার।

গড়পরতা চেহরার তরুণ শোজি। তার কাজ বলতে গেলে শুধু গ্রাহকদের সঙ্গ দেয়া। গল্প-গুজব বা চা-নাশতা খাওয়া, অথবা হাঁটাহাঁটি করা। এতে ঘণ্টা প্রতি তার আয় ১০ হাজার ইয়েন বা ৭১ ডলার।

মনে হতে পারে, শুধু সঙ্গ দেয়ার জন্য কেউ টাকা দেয় নাকি। কিন্তু এটা সত্যি। বিশ্লেষকরা মনে করেন, মানুষ দিনকে দিন অনেক ব্যস্ত ও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে। কারো জন্য কারো কোনো সময় নেই। একটু মন খুলে কথা বলবে সে সুযোগও নেই। এমন তাড়াহুড়োর জীবনের মাঝে মাঝে কেউ কেউ শোজির কাছ থেকে সময় ভাড়া নেন।

রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শোজি মরিমোতা বলেন, বলতে গেলে আমি সময় বিক্রি করি। গ্রাহক বা সেবাগ্রহীতারা যেখানে যেতে বলে, যাই। আদতে তেমন কিছুই করি না।

গড়ে প্রতিদিন দুজন করে গ্রাহক মিলে যায় শোজির। কভিড-১৯ এর আগে ছিল তিন থেকে চারজন।

গত চার বছরে চার হাজারের মতো সেশন পেয়েছেন তিনি। এ কাজ করে শোজি রীতিমতো সেলিব্রিটি। টুইটারে তার ফলোয়ার আড়াই লাখের মতো। তার অধিকাংশ মক্কেল তরুণ প্রজন্মের। তাদের সিকি ভাগই আবার বারবার আসা সেবাগ্রহীতা। অর্থাৎ, শোজির সঙ্গ তাদের খুবই পছন্দের। এর মধ্যে একজন গ্রাহকের সঙ্গেই তার সেশন আছে ২৭০ বার।

অদ্ভুত এই চাকরির সুবাদে কোন সেবাগ্রহীতার সঙ্গে পার্কে গিয়েছেন তো কারো জন্য ট্রেনের জানালা থেকে অচেনা মানুষকে ইশারা করেছেন। সপ্তাহ খানেক আগে শোজি মরিমোতোর গ্রাহক ছিল ২৭ বছর বয়সী ডাটা অ্যানালিস্ট অরুনা চিদা। সময় কাটে চা, কেক ও গল্পে। কিন্তু ব্যাপারটা সব সময় এত সহজ নয়। গ্রাহকের সব প্রস্তাব মেনেও নেয়া যায় না। যেমন- কম্বোডিয়া যাবার প্রস্তাব বা কোন প্রকার যৌন সম্পর্ক গড়ার ইঙ্গিত।

আগে মরিমোতো একটা প্রকাশনা কোম্পানিতে ছিলেন। সে তুলনায় এখনকার কাজ একদমই সহজ। তিনি উপভোগও করেন খুব। এই সঙ্গ দেয়াটাই তার সংসার চালানোর প্রধান উপায়। অবশ্য শোজি মরিমোতো উপার্জনের পরিমাণ স্বীকার করতে নারাজ।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন