চা শিল্প

আন্দোলন অব্যাহত, দাবিতে অনড় চা শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন চা শ্রমিকরা। গতকালও শ্রম অধিদপ্তরে আলোচনার পর মালিকদের দেয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন শ্রমিক নেতারা। ২৩ আগস্ট অধিদপ্তরে মালিকদের সঙ্গে আবারো বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান সচিব এহছানে এলাহীর উপস্থিত থাকার কথা। ওই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সে পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চা শ্রমিকরা। গতকাল যোগাযোগ করা হলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান শ্রমিক নেতারা।

সরেজমিনে দেখা গিয়েছে, চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। কর্মবিরতির সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন বাগানে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। গতকাল সিলেটের বিভিন্ন বাগানে শ্রমিকদের বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছে। গতকাল প্রতিদিনের মতো বেলা ১১টায় লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকায় এসে জড়ো হন শ্রমিকরা। সেখানে তারা অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল করেন। উপস্থিত চা শ্রমিকদের একটাই দাবি ছিল ৩০০ টাকা মজুরি। পাশাপাশি তারা তাদের বঞ্চনার নানা কথা তুলে ধরেন।

গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চা বাগান মালিক চা শ্রমিকদের নিয়ে ঢাকায় দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে বসে শ্রম অধিদপ্তর। দীর্ঘ ঘণ্টা ত্রিপক্ষীয় আলোচনা শেষে রাত ১১টার দিকে শেষ হয় বৈঠক। পুরো বৈঠকে নিজেদের ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনড় ছিলেন চা শ্রমিক নেতারা। বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য একদিন সময় নেন শ্রমিকরা। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও পুনরায় সময় নিয়ে শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেন শ্রমিক নেতারা। সময় সারা দেশের চা শ্রমিক নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রাখেন।

বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালেন্দি বণিক বার্তাকে বলেন, বাগান মালিকরা আবারো আন্দোলন স্থগিত রাখার কথা বলছেন। কিন্তু তা মেনে নেয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আমরা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনড় আছি। ২৩ আগস্ট আবার সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক হবে। তখন দেখা যাবে সিদ্ধান্ত কী হয়। সে পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালি সভাপতি রাজু গোয়ালা জানান, আমাদের দাবি মেনে নেয়নি মালিক পক্ষ। অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। তবে আন্দোলন চলবে, পাশাপাশি আলোচনাও চলবে। আমাদের দাবি একটাই মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীত করতে হবে।

বাংলাদেশ চা সংসদ নর্থ সিলেট ভ্যালির ভাইস চেয়ারম্যান নোমান হায়দার চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন অন্তত ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।  শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সংকট নিরসনের বিষয়ে সরকারের উচ্চমহল থেকে দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, টানা চারদিন ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন শেষে ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন চা শ্রমিকরা। শোক দিবস উপলক্ষে রবি সোমবার কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে পুনরায় লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। কর্মবিরতি চলাকালে বাগানগুলোতে মিছিল সমাবেশ করবেন চা শ্রমিকরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন