ঢাকা টেস্টে লংকানদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে মাঠ ছাড়েন মুমিনুল ও তার সহযোদ্ধারা ছবি: বিসিবি শ্রীলংকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়েও অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। এমন বীরোচিত ঘুরে দাঁড়ানোর পুনরাবৃত্তি হলো না। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দুই হাফসেঞ্চুরির পরও অলআউট ১৬৯ রানে। তাতে জুটল ১০ উইকেটের বড় পরাজয়। কোনো উইকেট না হারিয়েই গতকাল ৩ ওভারে প্রয়োজনীয় রানগুলো তুলে নেয় অতিথিরা। এতে ১-০ ব্যবধানে দুই টেস্টের সিরিজ জিতে নিল দিমুথ করুনারত্নের দল।
এমন পরাজয়ে সবার কাঠগড়ায় ব্যাটাররা। তবে হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর কাঠগড়ায় ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিং ইউনিটও। নিজেদের দুর্গখ্যাত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এ নিয়ে টানা তিন টেস্টে হারল টাইগাররা। আর শ্রীলংকার কাছে টানা তিনটি হোম সিরিজে চট্টগ্রামে ড্র করার পর ঢাকায় এসে হেরেছে বাংলাদেশ।
গতকাল বড় পরাজয় শেষে বিমর্ষ বাংলাদেশ কোচ দলের বোলিং ইউনিট নিয়ে বলেন, আমার কোচিং ক্যারিয়ারে দেখিনি, কোনো দল মিড উইকেট ও ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে এত বেশি রান তুলেছে। তারা খুব বেশি স্ট্রেইটে বল করেছে, খুব বেশি সোজাসুজি বল করেছে। আমি মনে করি না এটা ৫০০ রানের উইকেট। যেভাবে বল করা উচিত ছিল সেভাবে আমরা পারিনি। তাদের ওপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করতে পারিনি। এসব বিষয়ই কিন্তু ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।
শীর্ষ সারির বোলারদের অনুপস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডে আমরা টেস্ট জিতেছি এবাদত (হোসেন), শরিফুল (ইসলাম), তাসকিন (আহমেদ) ও মিরাজকে (মেহেদী হাসান) নিয়ে। এই টেস্টে তাদের মধ্যে শুধু এবাদতকে আমরা পেয়েছি। এটা সম্পূর্ণ নতুন বোলিং অ্যাটাক।
মিরাজের জায়গায় মোসাদ্দেক হোসেনকে নেয়া হলেও তিনি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। তাকে নিয়ে কোচ বলেন, মোসাদ্দেক খেলেছে, কারণ আমরা পঞ্চম বোলারের অপশন রেখেছিলাম। ভেবেছিলাম সে ১৫ ওভার করতে পারবে। এটা আমাদের ক্ষতি করেছে, কারণ মোসাদ্দেক আমাদের প্রত্যাশামতো বল করতে পারিনি। আমরা ভেবেছিলাম, সে মিরাজের কাজটি করতে পারবে, কিন্তু পারেনি। মিরাজের না থাকা আমাদের জন্য বড় ক্ষতি ছিল। সে প্রচুর ওভার করতে পারে, উইকেট নেয়, ব্যাটও করে।
এরপর ব্যাটিং দৈন্য নিয়ে কথা বললেন প্রোটিয়া কোচ। তিনি বলেন, আমাদের ভিন্ন কিছু করতে হবে, সেখানে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করলেও। এক ম্যাচে ২৪ রানে ৫ উইকেট ও ২৩ রানে ৪ উইকেট হারালে আপনি কখনই টেস্ট জিততে পারেন না। আমাদের কিছু জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে। গত ৬-৮ মাসে এটা কিন্তু বহুবার ঘটেছে। আমরা ভালো অবস্থানে যাচ্ছি, এর পরই পরিস্থিতি খারাপ করে ফেলছি। আমরা চারদিন দারুণ খেলার পর একটি খারাপ সেশনে এতটাই খারাপ করি যে, সেখান থেকে আর ফেরা সম্ভব হয় না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৩৬৫ ও ১৬৯ (সাকিব ৫৮, লিটন ৫২; আসিথা ৬/৫১, কাসুন ২/৪০)। শ্রীলংকা: ৫০৬ ও ২৯/০ (ওশাদা ফার্নান্দো ২১*, দিমুথ করুনারত্নে ৭*)। ফল: শ্রীলংকা ১০ উইকেটে জয়ী। সিরিজ: শ্রীলংকা ১-০-তে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আসিথা ফার্নান্দো (শ্রীলংকা)। ম্যান অব দ্য সিরিজ: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস (শ্রীলংকা)
