চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ার কয়লা উত্তোলন বাড়ার পূর্বাভাস

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি বছর নিজেদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার কয়লা খনিগুলো। গত চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জ্বালানি ধাতুটির শক্তিশালী আর্থিক অবস্থায় এমন আশা দেখছে দেশটি। সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ কয়লা রফতানিকারক দেশটির এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা এমনটা জানান। খবর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্লাটস।

ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের খনিজ কয়লা বিভাগের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফিসের কোল বিজনেস ডেভেলপমেন্টের পরিচালক লানা সারিয়া বলেন, ২০২২ সালের জন্য কিছু কোম্পানি তাদের সংশোধিত কর্মপরিকল্পনা বাজেট পেশ করেছে। খনি কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ কর্মপরিকল্পনাগুলো জুলাইয়ের শেষ নাগাদ অনুমোদন চূড়ান্ত করা হতে পারে বলেও জানান কয়লা খাতের সরকারি কর্মকর্তা।

কয়লা খনিগুলোর নতুন কর্মপরিকল্পনা বাজেট সরকারিভাবে অনুমোদনের পর চলতি বছরের জন্য ইন্দোনেশিয়ার কয়লা উত্তোলনের নতুন লক্ষ্যমাত্রা জানা যাবে। এমন একটা সময় কয়লা খাতে ইতিবাচক চিত্র দেখা গেল, যখন রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় বৈশ্বিক গ্রাহকরা জ্বালানি ধাতুপণ্যটির জন্য নতুন উেসর সন্ধান করছেন।

এর আগে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি খনিজমন্ত্রী আরিফিন তাসরিফ জানান, চলতি বছরের জন্য দেশটির কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৬ কোটি ৩০ লাখ টন। ২০২১ সালের জন্য ইন্দোনেশিয়ার কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬২ কোটি ৫০ লাখ টন, যদিও ওই বছর দেশটির মোট উত্তোলিত কয়লার পরিমাণ ছিল ৬১ কোটি ৪০ লাখ টন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ফলে কয়লার বৈশ্বিক সরবরাহ চাহিদা বেড়েছে। এতে ইন্দোনেশিয়ার খনিগুলো আশা করছে চলতি বছরে কয়লার দাম ২০২১ সালের চেয়ে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় বিরাজ করবে।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের তথ্যানুসারে, ২০২১ সালে প্রতি কেজি হাজার ২০০ কিলোক্যালোরি পরিমাণ জিএআর (গ্রস অ্যাজ রিসিভড) কয়লার ফ্রি অন বোর্ড প্রতি টনের দাম ছিল ৬৭ ডলার ৯৯ সেন্ট। ১৯ মে ইন্দোনেশিয়ার একই মানের কয়লার ফ্রি অন বোর্ড প্রতি টনের দাম দাঁড়ায় ৮৮ ডলার ২১ সেন্ট। ২০২১ সালে দেশটির কালিমান্টন কয়লা খনি থেকে উত্তোলিত প্রতি কেজি হাজার ৯০০ কিলোক্যালোরি পরিমাণ জিএআর কয়লার ফ্রি অন বোর্ড প্রতি টনের দাম ছিল ১১৩ ডলার ৮০ সেন্ট। ১৯ মে একই মানের কয়লার ফ্রি অন বোর্ড প্রতি টনের দাম দাঁড়ায় ১৭৪ ডলার ৮৯ সেন্ট। মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েকটি বৃহৎ কয়লা খনি চলতি বছরের জন্য নিজেদের উত্তোলন পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উত্তোলন বৃদ্ধির আশা করছে এসব কয়লা খনি।

সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার কয়লা খনি পিটি ভূমি রিসোর্সেস জানায়, চলতি বছর কোটি ৩০ লাখ থেকে কোটি ৯০ লাখ টন পর্যন্ত কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে কোম্পানিটির। ২০২১ সালে পিটি ভূমি রিসোর্সেসের উত্তোলিত কয়লার পরিমাণ ছিল কোটি ৮৮ লাখ টন। চলতি বছরের জন্য কয়লা খনি কোম্পানিটি ১১৮ দশমিক শতাংশ বার্ষিক মুনাফা প্রবৃদ্ধি আশা করছে। এতে চলতি বছরে প্রতি টন কয়লার দাম ৮৭-১০৪ ডলার হিসেবে পিটি ভূমি রিসোর্সেসের মুনাফার পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৪৮ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। ২০২১ সালে কোম্পানিটির প্রতি টন কয়লার দাম ছিল ৬৭ ডলার ৪০ সেন্ট, যা এর আগের বছর ছিল ৪৪ ডলার ২০ সেন্ট। অন্য কয়লা খনি পিটি বুকিট আসাম (পিটিবিএ) এপ্রিলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায়, চলতি বছর কোম্পানিটির বিক্রয়ের পরিমাণ বাড়তে পারে ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সময়ে বিক্রীত কয়লার পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি ৭১ লাখ টন।

পিটি ইন্দো তাম্বাংরায়া মেগাহ মে মাসে জানায়, চলতি বছর কোম্পানিটির বিক্রয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াতে পারে কোটি ১৫ লাখ টন, যা গত বছর ছিল কোটি লাখ টন। কোম্পানিটি আরো জানায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তাদের নিট মুনাফা দাঁড়ায় ২১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল কোটি ২০ লাখ ডলার চতুর্থ প্রান্তিকে ছিল ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অন্য কোম্পানি আদারো এনার্জি জানায়, চলতি বছর নিজেদের উত্তোলন ১৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে কোটি ৮০ লাখ থেকে ৬০ কোটি টন পর্যন্ত দাঁড়াতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন