শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান শুরু ২২ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সশরীরে পাঠদান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে ১২ বছরের ওপরে কভিডের পূর্ণ ডোজের টিকা নেয়া শিক্ষার্থীরাই কেবল সরাসরি শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে। এক্ষেত্রে যারা দুই ডোজ টিকা পায়নি, তাদের ক্লাস চলবে অনলাইনে বা টিভিতে।

গতকাল সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, কভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। যেহেতু সংক্রমণ নিম্নমুখী, তাই তারা ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রেণীকক্ষে সশরীরে পাঠদান শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ওইদিন স্কুল-কলেজে সশরীরে পাঠদান শুরু হবে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেয়া হবে না। আপাতত তারা অনলাইনেই ক্লাস করবে। ২২ ফেব্রুয়ারি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ১০ দিন বা দুই সপ্তাহ পর আমরা প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।

সশরীরে পাঠদানের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা ক্লাসের সংখ্যা আগের মতোই কম রাখব। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অনুযায়ী বাড়ানোর চেষ্টা করব।

মাধ্যমিক স্তরের কোটি ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ২২২ শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রথম ডোজ টিকা প্রায় সবাই পেয়ে গেছে। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৮ জন। আমরা আশা করছি, ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া সম্ভব হবে। যেসব শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে, শুধু তারাই সশরীরে ক্লাস করতে পারবে। এছাড়া অন্যরা অনলাইন বা টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস করবে। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দীপু মনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা না থাকায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের এখনো টিকার আওতায় আনা যায়নি। তবে এরই মধ্যে ১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেখছে। ডব্লিউএইচওর অনুমোদন পেলে তাদেরও টিকার আওতায় আনা হবে।

এর আগে বুধবার রাতে কভিড-১৯-বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় দেশের মাধ্যমিক থেকে উচ্চপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তবে ওমিক্রনের বিস্তারের পর কভিড-১৯ সংক্রমণ আবারো বেড়ে যাওয়ায় গত ১৩ জানুয়ারি থেকে ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। ২১ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ নতুন করে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপিরষদ বিভাগ। তাতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর আরো দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন