সাড়ে ৫ কোটি ডলার মূল্যের প্যাঙ্গোলিনের দেহাংশ-হাতির দাঁত জব্দ

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বের প্রতিটি দেশেই বন্যপ্রাণী বা এর দেহাংশ পাচার ও ক্রয় বিক্রয় রোধে কড়া আইনের বিধান রয়েছে। যদিও এসব আইনের তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন দেশের কলোবাজারিরা বিরল জীব-জন্তু হত্যা এবং পরে তাদের দেহাংশ বিক্রি ও পাচারের কাজ করে আসছে।  

সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়ায় বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর দেহের অংশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মূলত হাতির বড় দাঁত, প্যাঙ্গোলিন, হরিণের চামড়া বা কিছু প্রজাতির সাপ নিয়ে তাদের অবৈধ এ ব্যবসা পরিচালিত হয়। 

সম্প্রতি নাইজেরিয়ার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তারা রেকর্ড পরিমান প্যাঙ্গোলিনের দেহের আঁশ, নখ ও হাতির দাঁত জব্দ করেছেন। নাইজেরিয় কাস্টমস প্রধান বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজেরিয়ায় অবৈধ বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের কাছ থেকে দুটি প্রাণীর রেকর্ড পরিমান দেহাংশ জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত দেহাংশের মূল্য রেকর্ড ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার (২২ বিলিয়ন নাইরা)। সরকারি এক অভিযানে দুটি প্রাণীর দেহের এসব অংশ জব্দ করা হয়। 

নাইজেরিয়া কাস্টমসের শুল্ক বিভাগের নিয়ন্ত্রক জেনারেল কর্নেল হামিদ ইব্রাহিম আলীর এক বিবৃতির বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, কর্মকর্তারা ১৭ হাজার ১৩৭ কেজি প্যাঙ্গোলিনের শরীরের ওপরের শক্ত অংশ, ৬০ কেজি নখ ও ৪৪ কেজি হাতির দাঁত জব্দ করেছে। 

কর্নেল আলী বলেন, কর্তৃপক্ষ তিনজন বিদেশী নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। এই তিনজনের সঙ্গে আরও একজন সম্পৃক্ত আছেন। তাকে অনুসরণ করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শীঘ্রই আদালতে তোলা হবে। কারণ, এনসিএস তাদের বিচারের আওতায় আনতে কোনো জটিলতা রাখতে চায় না। 

আফ্রিকান প্যাঙ্গোলিনকে এশিয়ায় পাঠানো দলগুলোর কেন্দ্র হয়ে উঠেছে নাইজেরিয়া। এসব ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তাহীন সীমান্ত, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দুর্নীতি এবং বড় বন্দরে প্রবেশাধিকারকে দায়ী করছেন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। 

কর্নেল আলী বলেন, চোরাচালানবিরোধী অভিযান জোরদার করতে ব্রিটিশ, মার্কিন ও জার্মান কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে কাস্টমস। তাদের এই ‘ব্যাপক সহযোগিতার’কারণে নাইজেরিয়ার প্রধান বন্দর লাগোসের কাছে লেক্কি থেকে এসব প্রাণীর দেহাংশ জব্দ করা হয়। 

প্যাঙ্গোলিন একটি লাজুক ও বিপন্ন প্রাণি, যা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি পাচারকৃত স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে একটি। চীনের ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে এই প্রাণীর দেহাংশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 

জাতিসংঘের ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনডিওসি) অনুসারে, প্যাঙ্গোলিনের দেহাংশ পাচার গত ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দশগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ১৮৫ টন প্যাঙ্গোলিনের দেহের বিভিন্ন অংশ জব্দ করা হয়, যার জন্য প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার প্রাণীকে হত্যা করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন