করোনার নমুনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে ছিদ্র হয়ে গেল মগজের পর্দা!

বণিক বার্তা অনলাইন

শুধু করোনাভাইরাস নয়, প্রাণঘাতী হতে পারে এর নমুনা পরীক্ষার প্রক্রিয়াও! এমন ঘটনাই ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এক নারী নমুনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে তার নমুনা দেয়ার সময় মস্তিষ্কের আবরণে আঘাত পান। এতে তার মস্তিষ্কের ব্রেন লাইনিং ক্ষতিগ্রস্ত (ছিদ্র) হয়ে নাক দিয়ে তরল বের হতে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার একটি মেডিকেল জার্নাল এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে। 

তবে জার্নালে বলা হয়েছে, ৪০ বছর বয়সী ওই নারীর ক্ষেত্রে যেটি ঘটেছে তা বিরল। তার নমুনা নেয়ার প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে হয়নি। নাকের সোয়াব পরীক্ষা করতে গিয়ে এমন ঘটনাকে একটা অসম্ভব ঘটনাক্রম বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ন্যাসাল সোয়াব পরীক্ষাই সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর।

জ্যামা ওটোলারিঙ্গোলজি-হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটির সিনিয়র লেখক জারেট ওয়ালশ বলেছেন, ওই নারীর ঘটনাটি স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের পরীক্ষার প্রোটোকলগুলো সঠিকভাবে অনুসরণে আরো যত্নবান হওয়া উচিত বলে মনে করিয়ে দিচ্ছে। যাদের তীব্র সাইনাসের সমস্যা বা মস্তিষ্কের আবরণে অপারেশন হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ওরাল টেস্টের ব্যবস্থা থাকলে সেটিই বিবেচনা করা উচিত। 

এ ব্যাপারে নিউইংর্কের লেনক্স হিল হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডেনিস ক্রুস বলেন, যারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। 

ইউনিভার্সিটি অব লোয়া বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ওয়ালশ জানান, ওই নারী হার্নিয়া সার্জারির আগে নাকের সোয়াব পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলেন এবং নমুনা দেয়ার পর দেখেন তার নাক দিয়ে স্বচ্ছ তরল বেরিয়ে আসছে। এরপরই তার মাথাব্যথা, বমিভাব, গলা শক্ত ও আলো সহ্য না হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। পরে চিকিৎসায় তিনি সেরে ওঠেন।

জানা গেছে, আসলে ওই নারীর বহু বছর আগে ইন্ট্রাক্রানিয়াল হাইপারটেনশনের চিকিত্সা করা হয়েছিল। এর অর্থ হলো মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দেয়া ও পুষ্টি জোগানো সেরিব্রোস্পাইনাল তরলের চাপ ছিল। সেসময় চিকিত্সকরা তরল নিষ্কাশনের জন্য শান্ট ব্যবহার করেন এবং তিনি সেরে ওঠেন। কিন্তু এর ফলে তার এনসোফ্লোসিল নামে এক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। অর্থাৎ মস্তিষ্কের গোড়ায় এমন একটি ত্রুটি তৈরি হয়েছিল যে নাকের গোড়ার সঙ্গে যুক্ত অংশে থাকা আস্তরণ কোমল হয়ে যায়। বিষয়টি নমুনা পরীক্ষার আগে জানা ছিল না। চিকিত্সকরা গত জুলাইয়ে অস্ত্রোপচার করে ত্রুটি সারিয়ে তোলেন। তখন থেকে তিনি পুরোপুরি সুস্থ। 

তবে সঠিক সময়ে চিকিত্সা না হলে ওই নারীর নাক থেকে জীবাণু মস্তিষ্কে গিয়ে প্রাণহানী ঘটানোর মতো সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারতো। কিংবা বাতাস প্রবেশ করে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতো।

এএফপি অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন