বরিশালের মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে চরম আতঙ্ক আর উত্কণ্ঠা নিয়ে বসবাস করছে বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার হাজারো মানুষ। চলতি বর্ষায় দুটি উপজেলার সদর ইউনিয়নেই তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বিলীন হচ্ছে সরকারি স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মেঘনার ভাঙনের সত্যতা স্বীকার করে জানায়, চলতি বর্ষায় দুটি উপজেলার নদীভাঙন রোধে প্রায় ৩ কোটি টাকার জরুরি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
হিজলার বাউসিয়া এলাকার ধান-চাল ব্যবসায়ী মো. রফিক বলেন, মেঘনার ভাঙনে চলতি বছরই ৮-১০টি ঘর বিলীন হয়ে গেছে। পাশের দক্ষিণ চর বাউসিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ও হুমকিতে রয়েছে।
দক্ষিণ বাউসিয়া ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ঝন্টু হাওলাদার বলেন, আমার বাড়ির ১০০ ফুট দূরে সাইক্লোন সেন্টার কাম স্কুল, মসজিদ, হাফিজি মাদ্রাসা মেঘনার ভাঙনঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, মেঘনার ভাঙনে উপজেলা পরিষদ চত্বরও হুমকিতে রয়েছে। ভাঙনপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে ভূমি অফিস তথ্য নিচ্ছে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আগামী সপ্তাহে পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
এদিকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা মেহেন্দীগঞ্জের সদর ইউনিয়নের রুকন্দি, সাদেকপুর, চানপুর মেঘনার মোহনা ইলিশা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের (হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত) উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সোহাগ তালুকদার বলেন, মেঘনা নদীবেষ্টিত হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার অনেকটা অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙন ঠেকাতে করোনা পরিস্থিতির আগেই মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে। হিজলা উপজেলার বাউসিয়া, পুরাতন হিজলা নিয়ে দুটি পয়েন্ট আড়াই কিলোমিটার এবং হরিনাথপুরে ২ দশমিক ২২ কিলোমিটার ভাঙন রোধে প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়া মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুর এলাকার ভাঙন নিয়ন্ত্রণেও একটি প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। চলতি বর্ষায় নদীভাঙন প্রতিরোধে ৩ কোটি টাকার বেশি জরুরি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দের তালিকায় হিজলার বাউসিয়া, হরিনাথপুর, মেহেন্দীগঞ্জের দরিচর খাজুরিয়া, সাদেকপুর, রুকন্দি এলাকা রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলেই কাজ শুরু করা হবে।