নিজস্ব বাজার সুরক্ষায় আমদানিতে শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের

বণিক বার্তা ডেস্ক

সৌদি আরব রাশিয়ার মধ্যকার চলমান মূল্যযুদ্ধের জেরে জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড কমতির দিকে রয়েছে। পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা পণ্যটির আমদানি বাড়াতে পারে। তবে তা যদি অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে, তাহলে জ্বালানি তেল আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে হোয়াইট হাউজের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কথা জানান।

বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, দেশের বাইরে থেকে যদি অধিক পরিমাণে জ্বালানি তেল যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকে আর তাতে যদি দেশটির সংশ্লিষ্ট খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে দেশটির সংশ্লিষ্ট জ্বালানি কোম্পানি খাতের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার শ্রমিককে রক্ষায় যা কিছু প্রয়োজন সব করবেন তিনি।

নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে চীনসহ বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের চাহিদা ব্যাপক হারে কমে গেছে। অন্যদিকে পণ্যটির উত্তোলন হ্রাসসংক্রান্ত চুক্তিতে মতানৈক্যের জেরে সৌদি আরব রাশিয়ার মধ্যে চলছে মূল্যযুদ্ধ। দুইয়ের মিশ্রণে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শীর্ষ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানিও ক্রমশ চাঙ্গা হয়ে উঠছে। পণ্যটির রফতানি বাণিজ্যে রাশিয়া অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজের (ওপেক) সঙ্গে প্রায়ই দেশটির প্রতিযোগিতা বিদ্যমান থাকে।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের রেকর্ড দরপতন তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেলের সঙ্গে জড়িত অনেক কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে পড়েছে এবং খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে পড়েছে। গত শুক্রবার শিল্পটির নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেছিলেন, মুহূর্তে জ্বালানি পণ্যটির আমদানিতে শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন না তিনি। তবে আমাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ না করা হলে ব্যবহারের জন্য এটি উপযোগী কার্যসিদ্ধান্ত হতে পারে।

তবে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে দেশটির কয়েকটি জ্বালানি তেল পরিশোধন কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দেশটির দুটি বড় শিল্প গ্রুপআমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট আমেরিকান ফুয়েল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স সম্প্রতি ট্রাম্পকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। যেখানে জানানো হয়েছে, অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে শুল্ক আরোপ করা হলে দেশটির পরিশোধন ব্যবসা বিপদে পড়তে পারে। বিশেষ করে যেসব প্লান্ট আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীল।

ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া সৌদি আরব থেকে সম্মিলিতভাবে দৈনিক গড়ে ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছিল।

গত মাসে জ্বালানি তেলের দাম কমতে শুরু করলে বিষয়টিকে খুব একটা পাত্তা দেননি ট্রাম্প। বরং তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, এটা দেশটির যানবাহন খাতের জন্য ভালো।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন