কুয়েতে অবৈধ প্রবাসীদের জন্য ১ মাসের সাধারণ ক্ষমা

মনজুরুল ইসলাম

অবৈধ অভিবাসীদের দেশত্যাগে থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে কুয়েত সরকার। এর আওতায় অবৈধ অভিবাসীরা ছাড়পত্র জরিমানা ছাড়াই সে দেশ ছাড়তে পারবেন। যারা সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে নিজ দেশে চলে যাবেন, তাদের উড়োজাহাজের টিকিট যাবতীয় খরচ বহন করবে কুয়েত সরকার। কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

সাধারণ ক্ষমার বিষয়টি উল্লেখ করে কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য গতকাল একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস। এতে বলা হয়, সাধারণ ক্ষমার আওতায় অবৈধভাবে বসবাসকারীরা কোনো রকম আর্থিক জরিমানা ছাড়া দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন। উড়োজাহাজের টিকিট তথা যাবতীয় খরচ কুয়েত সরকার দেবে। কুয়েত ছেড়ে যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট স্থানে কিছু সময়ের জন্য থাকতে হবে। সময় কুয়েত সরকার থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অন্যদিকে সময়ের মধ্যে যারা দেশে ফিরে যাবেন, তারা সাধারণ নিয়মে আবার কুয়েতে আসার সুযোগ পাবেন।

১৬ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশীদের তিন কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ যোগাযোগ করতে হবে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কুয়েতের ফরওয়ানিয়া এলাকার ব্লক--এর আলাদা দুটি স্কুলে অবৈধ অভিবাসীদের সেবা দেয়া হবে।

ওই ব্লকের ১২২ নম্বর রোডে আল মুথানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বালক) পুরুষদের ৭৬ নম্বর রোডের ফরওয়ানিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (মেয়ে) নারীদের সেবা দেয়া হবে।

কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, কোনো ধরনের কাগজপত্রের জন্য দূতাবাসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সরাসরি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে যোগাযোগ করতে হবে। সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সপ্তাহে সাতদিন সেবা দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও কুয়েত সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল। তখন অনেকেই সুযোগ নিয়েছিলেন। বর্তমানে দেশটিতে বৈধভাবে প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশী কর্মী আছেন।

ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৬ থেকে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যাওয়া মোট শ্রমিকের সংখ্যা লাখ ৩০ হাজার ৪৭৩। এর মধ্যে নারী শ্রমিক হাজার ১০৯ জন। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে ৩০-৪০ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক যান। ২০০৬ সালে কুয়েতে শ্রমিক গিয়েছিলেন ৩৫ হাজার ৭৭৫ জন। এর পর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কুয়েতে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হতে শুরু করে। ২০০৭ সালে দেশটিতে যান হাজার ২১২ জন, ২০০৮ সালে ৩১৯, ২০০৯ সালে ১০, ২০১০ সালে ৪৮ ২০১১ সালে ২৯ জন শ্রমিক। আর ২০১২ ২০১৩ সালে দেশটিতে যান মোট আটজন শ্রমিক।

তবে ২০১৪ সালে কুয়েতে আবারো শ্রমিক রফতানি শুরু হয়। ওই বছর বিএমইটির ছাড়পত্র নিয়ে দেশটিতে যান মোট হাজার ৯৪ জন বাংলাদেশী। ২০১৫ সালে কুয়েতে যান ১৭ হাজার ৪৭২ জন, ২০১৬ সালে ৩৯ হাজার ১৮৮, ২০১৭ সালে ৪৯ হাজার ৬০৪, ২০১৮ সালে ২৭ হাজার ৬৩৭, ২০১৯ সালে ১২ হাজার ২৯৯ জন। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে দেশটিতে গেছেন মোট হাজার ৫২৩ জন শ্রমিক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন