প্রতিকূলতার মধ্যেও হুয়াওয়ের বিক্রি বেড়েছে ১৯.১%

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০১৯ সালে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লেও স্মার্টফোন এবং অন্যান্য পণ্য বিক্রিতে দুই অংকের প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে হুয়াওয়ে। গত বছর প্রতিষ্ঠানটির মোট বিক্রি ৮৫ হাজার ৮৮০ কোটি চাইনিজ ইউয়ানে (১২৩ বিলিয়ন ডলার) পৌঁছেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৯ দশমিক শতাংশ বেশি। এছাড়া গত বছর প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছে হাজার ২৭০ কোটি ইউয়ান ( বিলিয়ন ডলার), যা এক বছর আগের চেয়ে দশমিক শতাংশ বেশি। চীনের শেনঝেন থেকে এক অনলাইন বিবৃতিতে প্রকাশিত গত বছরের আর্থিক খতিয়ানে এমন তথ্যই জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর এপি।

চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৯ সালে অর্জিত রাজস্বের প্রায় ১৫ দশমিক শতাংশ বা ১৩ হাজার ১৭০ কোটি ইউয়ান (১৮ দশমিক বিলিয়ন ডলার) গবেষণা উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ করেছে। নিয়ে গত এক দশকে গবেষণা উন্নয়ন খাতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয়ের অংক ৬০ হাজার কোটি ইউয়ান অতিক্রম করেছে। 

প্রতিকূলতার মধ্যেও গত বছর হুয়াওয়ের জন্য অসাধারণ ছিল মন্তব্য করে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এরিক যু বলেন, মার্কিন চাপ থাকা সত্ত্বেও আমাদের কর্মীরা কেবল গ্রাহকদের জন্য ভালোমানের নতুন পণ্য সেবা তৈরির প্রতিই অধিক মনোযোগ দিয়েছেন। গ্রাহক আস্থা অর্জনে আমরা এবং বিশ্বজুড়ে আমাদের অন্য অংশীদাররা কঠোর পরিশ্রম করেছি। যে কারণে ব্যবসা ভালো হয়েছে।

গত বছরজুড়ে হুয়াওয়ে ক্যারিয়ার ব্যবসা ফাইভজি নেটওয়ার্কের বাণিজ্যিক সম্প্রসারণে জোর দিয়েছে। ফাইভজির অধিকতর বাণিজ্যিক ব্যবহার এবং ফাইভজিসংশ্লিষ্ট নতুন অ্যাপ্লিকেশন উদ্ভাবন বাড়াতে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্য ক্যারিয়ারগুলোর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ফাইভজি উদ্ভাবন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এর রুরালস্টার বেজ স্টেশন প্রত্যন্ত অঞ্চলের নেটওয়ার্ক সমস্যার কার্যকর সমাধান করতে পারে। ধরনের সমাধান এখন ৫০টির বেশি দেশ অঞ্চলে ব্যবহূত হচ্ছে, যা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত বিশ্বের চার কোটিরও বেশি মানুষের কাছে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা পৌঁছাতে পেরেছে। গত বছর হুয়াওয়ের ক্যারিয়ার ব্যবসা বিভাগের বিক্রি ২৯ হাজার ৬৭০ কোটি ইউয়ানে (৪২ দশমিক বিলিয়ন ডলার) পৌঁছেছে, যা আগের বছরের চেয়ে দশমিক শতাংশ বেশি।

ডিজিটাল বিশ্বের ভিত্তি স্থাপনে হুয়াওয়ের এন্টারপ্রাইজ ব্যবসা শিল্প খাতের ডিজিটাল রূপান্তরে গ্রাহকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। বিশ্বব্যাপী ৭০০টির বেশি শহর এবং ২২৮ ফরচুন গ্লোবাল ৫০০ কোম্পানি হুয়াওয়েকে তাদের ডিজিটাল রূপান্তরের অংশীদার হিসেবে বেছে নিয়েছে। বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্বের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র প্রস্তুত করার লক্ষ্যে গত বছর নিজস্ব কম্পিউটিং কৌশল ঘোষণা করেছে হুয়াওয়ে। কৌশলের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের দ্রুততম এআই প্রসেসর অ্যাসেন্ড ৯১০ এবং এআই প্রশিক্ষণ ক্লাস্টার অ্যাটলাস ৯০০ চালু করেছে। গত বছর হুয়াওয়ের এন্টারপ্রাইজ ব্যবসা বিভাগের বিক্রি হাজার ৯৭০ কোটি ইউয়ানে (১২ দশমিক বিলিয়ন ডলার) পৌঁছেছে, যা এক বছর আগের চেয়ে দশমিক শতাংশ বেশি। 

হুয়াওয়ের বার্ষিক আর্থিক খতিয়ান অনুযায়ী, গত বছর তারা ২৪ কোটি স্মার্টফোন বিক্রি করেছে। এছাড়া পার্সোনাল কম্পিউটার (পিসি), ট্যাবলেট, পরিধেয় প্রযুক্তিপণ্য, স্মার্ট স্ক্রিনসহ সব ধরনের যন্ত্রে এআই ব্যবহার করে জীবনধারায় অধিকতর অগ্রগতি সাধনে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত বছর প্রতিষ্ঠানটির কনজিউমার ডিভাইস ব্যবসা বিভাগের বিক্রি ৪৬ হাজার ৭৩০ কোটি ইউয়ানে (৬৬ দশমিক বিলিয়ন ডলার) পৌঁছেছে, যা এর আগের বছরের চেয়ে ৩৪ শতাংশ বেশি। 

এরিক যু বলেন, এগিয়ে যাওয়ার পথে বাইরের পরিবেশটা আগামীতে আরো জটিল হবে। আমাদের পণ্য সেবার মান বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া উন্মুক্ত উদ্ভাবন প্রসারের পাশাপাশি গ্রাহক সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে আরো ভালো কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। শিল্প খাতের ডিজিটাল বুদ্ধিবৃত্তিক রূপান্তরের সুযোগ কাজে লাগানোর মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা বজায় রাখার এটাই একমাত্র উপায়। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন