বিচ্ছিন্ন দ্বীপের জাম্পার ফ্যাশন

বণিক বার্তা অনলাইন

আজ থেকে ৫০ বছর আগে ফেয়ার আইল্যান্ডের অধিবাসীদের বুননকাজে মুগ্ধ হয়ে ক্যামেরা নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন শৌখিন আলোকচিত্রী ক্রিস মোরফেট। যুক্তরাজ্যের মূল ভূখণ্ড সবচেয়ে দূরবর্তী এলাকা এটি। ক্রিসের আলোকচিত্রেই উঠে এসেছে শেটল্যান্ড দ্বীপ অঞ্চলের এই অধিবাসীদের জীবন এবং তাদের বুনন শিল্পের স্বতন্ত্র ও অনন্য ডিজাইন। এই ডিজাইন আধুনিককালের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। 

লন্ডনের রাস্তায় বুননের কাজ ও সুয়েটার দেখার পরই ফেয়ার আইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেন ক্রিস। ১৯৭০ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে দূরবর্তী ওই দ্বীপে একা একটি ক্যামেরাকে সঙ্গী করে যাত্রা করেন তিনি। স্কটল্যান্ডের মূল ভূখণ্ড থেকে এ দ্বীপ ৮০ মাইল গভীরে।

ক্রিসের বয়স এখন ৭৬ বছর। সেই দ্বীপবাসীর আতিথেয়তার কথা তিনি এখনো ভুলতে পারেননি। সেখানে গিয়ে নিজের হাতে দুটি সুয়েটার বুনেছিলেন ক্রিস। এর একটি এখনো তিনি পরেন। ৫০ বছর আগে বোনা একটি টপ পরে সম্প্রতি ক্যামেরার সামনে পোজও দেন ক্রিস।

৫০ বছর আগের ও পরের ছবিতে আলোকচিত্রী ক্রিস

ক্রিসের সেই ছবিগুলো শেটল্যান্ড দ্বীপবাসীর বিশেষ ডিজাইনের একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে রয়েছে। তাদের ডিজাইনগুলো উনিশ শতকের জেলেদের টুপি ও জাম্পারের মধ্যে বেশি দেখা যেত। ১৯২০ এর দশকে সেগুলো ব্রিটেনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এরপর থেকে ফেয়ার আইল্যান্ডের বুননশিল্পীরা রঙিন সুয়েটার বোনা শুরু করেন।

এখনো একটি ক্ষুদ্র অংশ সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বেশিরভাগ ডিজাইনে চারটি রঙ থাকে। একটি সারিতে দুটির বেশি রঙ ব্যবহার করা হয় না। 

নিজের তাঁতে কাজ করছেন ডিজাইনার মাতি

ফরাসি ভেনেজুয়েলান ডিজাইনার মাতি ভেন্ত্রিলন ফেয়ার আইল্যান্ডের জাম্পার ডিজাইন টিকিয়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০৭ সালে তিনি লন্ডন ছেড়ে ওই দ্বীপে স্থানীয়ভাবে চলে যান। ওই সময় স্থানীয় তাঁতীরাও নতুন লোক খুঁজছিলেন। মাতি এখন সেখানে নিজস্ব তাঁত করেছেন এবং নিজের ডিজাইন করা সুয়েটার ও অন্যান্য পোশাক বোনেন। এসব সুয়েটার বিক্রি হয় ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায়। ফ্যাশন কোম্পানি শ্যানেল তাদের একটি ডিজাইনে মাতির অনুপ্রেরণা অস্বীকার করার পর ক্ষমা চায়। ২০১৫ সালে এ ঘ্টনায় গণমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসেন মাতি।

বিবিসি অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন