শীতেও ইলিশে সয়লাব বাগেরহাটের মৎস্য আড়ত

বণিক বার্তা প্রতিনিধি বাগেরহাট

সাধারণত শীতকালে নদী সাগরে ইলিশ ধরা পড়ে তুলনামূলক কম। কিন্তু চলতি বছর ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। বরিশালের পর এবার বাগেরহাটেও ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। বাগেরহাট কেবি বাজার পাইকারি মোকাম এখন ইলিশে সয়লাব। বিভিন্ন আকারের ইলিশের দামও নাগালের মধ্যে। ইলিশ কিনতে সকাল থেকে আড়তে ভিড় করছেন পাইকারি খুচরা ক্রেতারা।

এদিকে অসময়ে বাজারে ইলিশের প্রাচুর্য থাকলেও শীতকালে সাগরের অন্যান্য মাছ তুলনামূলক অনেক কম দেখা গেছে।

গতকাল ভোরে বাগেরহাট কেভিবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন আকারের ইলিশ বাজারে তুলছেন জেলেরা। পাইকারি খুচরা ক্রেতারা বাজার ঘুরে দাম করছেন। দাম কম থাকায় অনেক খুচরা ক্রেতা ১০ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত ইলিশ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, অন্য বছর শীত মৌসুমে বাজারে ইলিশ পাওয়া যায় না। তবে এবার অনেক ইলিশ আড়তে উঠছে। দামও অনেক কম। এজন্য প্রচুর ইলিশ কিনছেন ক্রেতারা।

সাগর থেকে মাছ নিয়ে আসা ট্রলার মালিক সুজন বলেন, শীতের সময়ে সাধারণত মাছ কম পাওয়া যায়। কিন্তু এবার শীত মৌসুমে প্রচুর মাছ পাচ্ছি আমরা। গত ১০ বছরের তুলনায় বছর শীতে সবচেয়ে বেশি মাছ পেয়েছি। গভীর সাগর থেকে মাছ কম পানিতে চলে আসায় জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।

মাছ ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান বলেন, শীত মৌসুমে সাগরের ঢেলা, চেলা, মেদ, কঙ্কনসহ অন্যান্য মাছ বেশি পাওয়া যেত। তবে এবার এসব মাছ একদমই কম পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। দামও নাগালের মধ্যে। মাছের আকার ছোট হলেও পেটে ডিম রয়েছে। ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি মাছ ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ইলিশ মৌসুমে যে পরিমাণ মাছ আড়তে ওঠে, এখন তার চেয়ে বেশি উঠছে। বর্তমানে মাছের দাম অনেক কম। এজন্য একসঙ্গে বেশি পরিমাণ মাছ কিনেছি।

বাগেরহাট কেবি বাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি আবেদ আলী বলেন, এবার শীত মৌসুমে তুলনামূলক অনেক বেশি পরিমাণ ইলিশ বাজারে উঠেছে। এজন্য জেলে, ব্যবসায়ী ক্রেতা সবাই খুশি। বাগেরহাট আড়তে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। আড়ত থেকে ইলিশ যাচ্ছে অন্য জেলায়ও।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা . খালেদ কনক বলেন, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকাসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে সমুদ্রে ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে। ফলে জেলেদের জালে বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। সরকারের সচেতনতামূলক কার্যক্রম বিভিন্ন সময় ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকলে ইলিশের আকার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছর উৎপাদনও বাড়বে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন