ইরান হামলার ব্যাপারে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দ্বিমত

বণিক বার্তা অনলাইন

সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্থাপনা বা স্বার্থে হামলা চালালে পাল্টা হামলার জন্য ৫২টি লক্ষ্যবস্তু ঠিক করে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে ইরানের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনায় হামলার ইঙ্গিতও রয়েছে। তবে ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার। গতকাল সোমবার তিনি বলেন, ইরানের হামলার পাল্টা ব্যবস্থা যদি নিতেই হয় তাহলে আমরা সামরিক সংঘাতের আন্তর্জাতিক আইন মেনেই তা করবো। খবর সিএনএন।

ইরাকে ড্রোন হামলা চালিয়ে কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পর ইরান-মার্কিন উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। ইরানি কর্তৃপক্ষ এর কঠিন প্রতিশোধ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তু ঠিক করে রাখার কথা জানিয়ে টুইট করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে গত রোববার এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ইরানের পারস্য ও ইসলামী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনায় হামলার ইঙ্গিত দেন তিনি। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিমতের বিষয় স্পষ্ট করেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।

সোমবার সাংবাদিকরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এস্পারকে জিজ্ঞেস করেন, সামরিক সংঘাতের আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার মানে কি ইরানের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাকে টার্গেট না করা? জবাবে তিনি বলেন, সামরিক সংঘাতের আন্তর্জাতিক আইন এটিই বলে।

এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, তারা আমাদের জনগণের ওপর হামলা করতে পারবে, অত্যাচার করতে পারবে, পঙ্গু করে দিতে পারবে, তারা রাস্তার পাশে বোমা পেতে আমাদের জনগণকে উড়িয়ে দিতে পারবে, আর আমরা তাদের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ছুঁতেও পারবো না- এটা হতে পারে না।

আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাবস্থায়ও সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা নিষিদ্ধ। আইনে হামলা আক্রমণ শুধু সামরিক স্থাপনায় সীমাবদ্ধ রাখার ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে। এ কারণে ওই বক্তব্যের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছেন। এমনকি প্রশাসনের মধ্যেও এ ব্যাপারে স্পষ্ট দ্বিমত রয়েছে বলে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে সিএনএন।

একজন কর্মকর্তা বলেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রিয় সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনায় হামলাকে কেউই সমর্থন করে না। আইসিসের ধর্মীয় স্মৃতি সৌধ ধ্বংসই হোক আর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ল্যুভর লাইব্রেরি পুড়িয়ে দেয়ার মতো ঘটনাই হোক, ইতিহাস থেকে আমরা জেনেছি, মানবসভ্যতার চিহ্নবাহী এসব স্থান ও স্থাপনাতে হামলা শুধু অনৈতিকই নয়, এটি আত্মবিধ্বংশীও বটে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন