বাইরের চাপ নয়, বাংলাদেশের দরকার শক্তিশালী ঐক্য

ফজলে হাসান আবেদ

আমার জন্মভূমি বাংলাদেশ আবার অশ্রুতে ডুবে গেছে। রাজধানী ঢাকার শহরতলি সাভারে গত সপ্তাহে পোশাক কারখানা অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে গড়ে ওঠা খারাপভাবে নির্মিত একটি ভবন ধসে পড়েছে। ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে, মৃতের চূড়ান্ত সংখ্যা ৭০০-এরও বেশি হতে পারে।

বাংলাদেশের জন্য প্রাকৃতিক মনুষ্যসৃষ্ট কোনো দুর্যোগই অপরিচিত নয়। তবু ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে এটি সবচেয়ে দুঃখজনক অধ্যায়গুলোর একটি হয়ে থাকবে, কারণ এই ট্র্যাজেডিকে সহজে প্রতিরোধ করা যেত। কাঠামোগত দুর্বলতা পাওয়া গেলেও তা ঠিক করা হয়নি। ভুক্তভোগীরা আমাদের সমাজে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে ছিল। কঠোর পরিশ্রমী লোকেরা কম রোজগার করেও সত্ জীবনযাপন করে। অনেকে পশ্চিমা ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি করার সময় মারা গিয়েছিল।

তার পরিধানের কাপড়গুলো শ্রমিকরা একসঙ্গে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় কাজ করে সেলাই করেছিল, একজন পশ্চিমা মানুষের কথা জেনে অস্বস্তি বোধ করাকে আমি প্রশংসা করি। স্বভাবতই ধনী দেশগুলোর লোকেরা এখন জিজ্ঞাসা করছে কীভাবে তারা বাংলাদেশ পোশাক শিল্পের মালিকদের দেশের দুর্যোগ সুরক্ষা রেকর্ডকে উন্নত করতে চাপ দিতে পারে।

তবে বাংলাদেশী পণ্য ক্রয় বন্ধ করে দেয়া, যেমন কেই কেউ পরামর্শ দিয়েছেন কোনো দরদি কাজ হবে না। পোশাক শিল্পের অর্থনৈতিক সুযোগগুলো আমার দেশে সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, প্রায় ৩০ লাখ নারী বর্তমানে পোশাক খাতে কাজ করছেন। আমি আমার জীবনকে দারিদ্র্য বিমোচনে নিবেদিত করেছি এবং আমি জানি বাংলাদেশে ব্যবসা করে, এমন ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশকে বর্জন করলে তা কেবল যাদের টেবিলে খাবার দেয়া সর্বাধিক প্রয়োজন, তাদের আরো দরিদ্র করে তুলবে। সেক্ষেত্রে বিদেশী ব্র্যান্ডগুলো তাদের উত্পাদন চুক্তিগুলো অন্য দেশে নিয়ে যাবে।

এখানে উত্পাদন বৃদ্ধির ভালো প্রভাব রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আগে নবজাতক কন্যার ভবিষ্যতের জন্য একটি দরিদ্র পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল প্রায়ই তাকে যথাসম্ভব কম বয়সে বিয়ে দেয়া, যেহেতু একটি মেয়ের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বামীর পরিবারকে দেয়া যৌতুকের পরিমাণও বাড়তে থাকে। এমনকি ১৯৮০ সালে যৌতুক নিষিদ্ধ হওয়ার পরও প্রথা অব্যাহত ছিল। একটি মেয়েকে ১৩ বছর বয়সে বিয়ে দেয়া হতো এবং সে কখনো তার গ্রামের বাইরে যেতে পারত না, নিজের বা তার বাচ্চাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা কখনো জানতে পারত না।

এখন অনেক নারী এবং তাদের কন্যা পোশাক শিল্পে চাকরি করে, এমনকি এমন কারখানাতেও চাকরি করে, যেখানে শ্রমিকদের অধিকার কার্যত অস্তিত্বহীন। দারিদ্র্যে বসবাসকারী পরিবারগুলো তাদের ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টে ফেলেছে। অনেকেই দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যেমন তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষিত করা, নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য ক্ষুদ্রঋণ নেয়া, সঞ্চয় করা এবং থাকার জায়গাগুলো আরো বেশি স্বাস্থ্যকরভাবে তৈরি সংরক্ষণ করা।

বাংলাদেশ শব্দটি শুনলেই বাইরের লোকেরা কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা <

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন