নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নোয়াখালী

নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক জেলা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষ চলাকালে সম্মেলনের ব্যানার, ফেন্টুন ও বিলবোর্ড ভাংচুর করা হয়। এ সময় ককটেল বিষ্ফোরণ ও গুলির শব্দে শহরে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ১০২ জনকে নোয়াখালী জেনালের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আরিফ নামে গুলিবিদ্ধ একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খাঁন সোহেল অনুসারীরা জজকোর্ট সড়ক থেকে একটি মিছিল নিয়ে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছিল। পথে গণপূর্ত অফিসের সামনে যাওয়া মাত্র সম্মেলন স্থল শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম থেকে আসা জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর গাড়ি বহর থেকে মিছিলকারীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয়পক্ষ মুখোমুখি হলে প্রথমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও পরে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। 

এ সময় দ্রুত একরামুল করিম চৌধুরীর গাড়িটি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে চলে যায়। এক পর্যায়ে পুরো শহরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ লেগে যায়। ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ আহত আরিফ জানান, সকালে তারা শহিদ উল্যাহ খান সোহেলের সমর্থনে মিছিল নিয়ে সম্মেলন স্থলে যাচ্ছিলেন। পথে গণপূর্ত বিভাগের সামনে গেলে মিছিলটি বর্তমান সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীকে বহনকারি পুলিশের গাড়ির সামনে পড়ে। এ সময় একরামুল করিম চৌধুরী গাড়ি থেকে বের হয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে মিছিল লক্ষ্য করে শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এতে তিনিসহ আরো কয়েকজন আহত হন। 

তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ দিকে কাউন্সিল ছাড়াই সম্মেলন স্থলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার সময় সাবেক কমিটি বহাল ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রী সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এতে পুনরায় সভাপতি হিসেবে খায়রুল আনম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একরামুল করিম চৌধুরীর নাম ঘোষণা দেন। 

ওবায়দুল কাদের এ সময় বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের আনুগত্য চায় না, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায়। আর বিএনপি সব সময় ভারতের আনুগত্য কামনা করে। কিন্তু বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। সবার কাছে নালিশ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন গুজবের রাজনীতি শুরু করছে।

বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি এখন নানানভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে শুরু করেছে। পেঁয়াজ দিয়ে শুরু করে এখন সড়ক-পরিবহন আইন নিয়ে শুরু করেছে। তবে যাই করুক বিএনপি স্বার্থক হবে না।’

সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও সংসদ সদস্য মির্জা আজম। 

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম। সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন