সৌদি আরামকোর আইপিও (ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং) ছাড়তে সবুজসংকেত দিয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। শুক্রবার যুবরাজ সালমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিষয় সম্পর্কে অবগত কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। খবর ব্লুমবার্গ ও রয়টার্স।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রগুলো বলছে, রোববার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। সৌদি আরামকোর আংশিক বেসরকারীকরণ ও আইপিও ছাড়ার বিষয়টি দেশটির তেল শিল্পে বড় একটি পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। ১৯৭০-এর দশকে কোম্পানিটি জাতীয়করণ করা হয়েছিল। বিশ্বের ১০ শতাংশ তেল উত্তোলন ও বিক্রির মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানি হিসেবে দাঁড়িয়েছে আরামকো। সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার মেরুদণ্ড হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে কোম্পানিটি।
২০১৬ সালে প্রথম আইপিও ছাড়ার ইঙ্গিত দেন যুবরাজ সালমান। তারপর বেশ কয়েকবার কাছাকাছি গিয়েও স্থগিত করা হয়। কোম্পানিটির ভ্যালুয়েশন ২ ট্রিলিয়ন ডলার করায় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হন। এর চেয়ে কম ভ্যালুয়েশন করা হলে যুবরাজ রাজি হবেন কিনা, সে বিষয়টি জানা যায়নি।
কয়েকটি সূত্রের বরাতে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সৌদি আরামকোর ১ দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন ডলার ভ্যালুয়েশন হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী চীনসহ এশীয় ও উপসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে আরামকোর কর্তাব্যক্তিরা যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। তিনটি সূত্র বলছে, চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্ক ও লন্ডনে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আরামকোর সিইও আমিন নাসের।
সৌদি অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে ও তেল রফতানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে যুবরাজ সালমানের গৃহীত রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নে সৌদি আরামকোর আইপিও ছাড়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইপিও থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ ওপেকভুক্ত দেশটির সার্বভৌম অর্থ তহবিল শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
আরামকোর এ আইপিও ছাড়ার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে তীব্র লড়াইয়ে আছে বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রায় ২০টিরও বেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে এবং শীর্ষ দায়িত্বের জন্য বিবেচিত কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটিগ্রুপ, গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ ও জেপি মরগান চেজ।
আইপিও ছাড়ার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে রয়েছে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের ভ্যালুয়েশনের বিষয়টি। সৌদি সরকারের উপদেষ্টা ও কাছের মানুষেরা একে অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা মনে করছে। এক্ষেত্রে ১ দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন ডলার অনেকটা বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হতে পারে বলে মনে করছে সূত্রগুলো।
শুক্রবারের বৈঠক এবং আইপিও ছাড়ার তারিখ সম্পর্কে জানতে আরামকোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক ই-মেইল বার্তায় রয়টার্সকে কোম্পানিটি জানায়, কোনো ধরনের গুঞ্জন বা ধারণার ওপর মন্তব্য করে না সৌদি আরামকো।