আশুগঞ্জ পাওয়ারের বন্ডের আইপিও

ন্যূনতম সাবস্ক্রিপশনের বাধ্যবাধকতা শিথিল করবে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাবলিস ইস্যু রুলস অনুসারে পুঁজিবাজারে আসার জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) সাবস্ক্রিপশনে ন্যূনতম ৬৫ শতাংশ আবেদন জমা পড়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর কমে হলে আইপিও বাতিল হয়ে যায়। সম্প্রতি আশুগঞ্জ পাওয়ারের সেকেন্ডারি বাজারে লেনদেনযোগ্য বন্ডের ক্ষেত্রে মাত্র ৩৫ শতাংশ আবেদন জমা পড়েছে। এর ফলে আইনানুসারে কোম্পানিটির বন্ড বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের স্বার্থে আশুগঞ্জ পাওয়ারের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সাবস্ক্রিপশনের বাধ্যবাধকতা শিথিল করার বিষয়টি বিবেচনা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)

বিএসইসির একজন কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, সরকার বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরাও চাইছি বন্ড মার্কেট গড়ে উঠুক। আমাদের এখানে সেকেন্ডারি বাজারে লেনদেনযোগ্য বন্ড তেমন একটা নেই। এ কারণে বন্ডের আইপিওর জন্য আলাদা কোনো আইন নেই। ফলে পাবলিক ইস্যু রুলসের মাধ্যমেই বন্ডের আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। আশুগঞ্জ পাওয়ারের বন্ডে মাত্র ৩৫ শতাংশ সাবস্ক্রিপশন হওয়ার কারণে আইনানুসারে এটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। আর এমনটি হলে দেশে বন্ডের মার্কেট গড়ে উঠবে না। তাই কমিশন আশুগঞ্জ পাওয়ারের বন্ডের ক্ষেত্রে পাবলিক ইস্যু রুলসের বিধিবিধান শিথিল করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। বন্ডের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সাবস্ক্রিপশন থাকার বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে নেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। তাছাড়া সাবস্ক্রিপশনের সময় শেষে বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ থাকার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য বন্ডের আইপিও সাবস্ক্রিপশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেখা যায় কোম্পানিটির বন্ডে ৩৫ শতাংশ আবেদন জমা পড়েছে।

জানতে চাইলে আশুগঞ্জ পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএমএম সাজ্জাদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, আমরা কমিশনের কাছে সাবস্ক্রিপশনের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করেছি। এ বিষয়ে কমিশন যা নির্দেশনা দেবে, আমরা সেভাবে কাজ করব।

উল্লেখ্য, আইপিওর মাধ্যমে সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য বন্ড ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে ৪০০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের পরিকল্পনা ছিল আশুগঞ্জ পাওয়ারের। এর মধ্যে ভূমি উন্নয়ন ও সিভিল ওয়ার্কের জন্য ৪৬ কোটি ৮০ লাখ, প্রাথমিক জ্বালানি ৩০ কোটি, যানবাহন ক্রয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ, প্রকৌশলী ও পরামর্শক সেবার জন্য ৪ কোটি ৪০ লাখ, চলতি মূলধন বাবদ ১০ কোটি ৯৯ লাখ এবং আইপিওর খরচ খাতে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা ছিল। দেশে সরকারি কিংবা বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে কোনো প্রতিষ্ঠান আইপিওর মাধ্যমে সেকেন্ডারি বাজারে বন্ড ছাড়ার ঘটনা এটাই প্রথম।

প্রসঙ্গত, বিএসইসির ৬৯২তম কমিশন সভায় আশুগঞ্জ পাওয়ারের আইপিও অনুমোদন করা হয়। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। ট্রাস্টি হিসেবে ছিল আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং নিরীক্ষক এসএফ আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন