বাংলা ব্লকেড

তৃতীয় দফায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, জাবি

ছবি : বণিক বার্তা

কোটা বিরোধী আন্দোলনের ৭ম দিনে তৃতীয় দফায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মে ঘোষিত 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৭ জুলাই) সকাল ১১ টা থেকে মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। অবরোধ চলে দুপুর ১ টা পর্যন্ত। এ সময় রাস্তার উভয় লেনে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধের আগে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার হতে একটি মিছিল নিয়ে মহাসড়কে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে বিকেল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবরোধ চলার কথা থাকলেও সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান রথযাত্রা ও এইচএসসি পরীক্ষার কারণে সময়সূচি পরিবর্তন করেছেন তারা।

আন্দোলনে অংশ নিয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, কোটার যৌক্তিক সংস্কার না করে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরাসরি কোটা বাতিল করা হলো। এখন আবার সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা বহাল করা হচ্ছে। কোটার বাতিল বা বহাল নয় অবিলম্বে কোটার উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে এর যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্মের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ বলেন, ‘বায়ান্ন থেকে একাত্তরের চেতনা ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রত্যয়। মুক্তিযোদ্ধারা সাম্য, ন্যায় ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা সাম্যের পথে বড় বাঁধা। এ কোটাসহ সবমিলিয়ে ৫৬ শতাংশ কোটা সমাজে বৈষম্যকে প্রকট করবে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়ন করতে হলে দ্রুততম সময়ে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার জরুরি। না হলে ছাত্র সমাজ দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

আজকের অবরোধকে প্রতীকী কর্মসূচি বলছেন সংগঠকরা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী শিগগিরই দাবি আদায় না হলে সারাদেশ অচলের কর্মসূচিতে যাবেন তারা।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন- এর সদস্য সচিব ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালসহ ৪ দফা নিয়ে আন্দোলনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। এতেই আমরা থেমে থাকব না। দাবি আদায় না হলে সারাদেশ অচল করার কর্মসূচিতে যাবো আমরা। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) কোটা বাদ দেয়া, সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা  সংরক্ষণ, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান, দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন