বছরের প্রথমার্ধ

ভারতে কমছে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হিস্যা

বণিক বার্তা ডেস্ক

সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ ছবি: রয়টার্স

জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে বিদ্যুৎ খাতে সৌরশক্তির ব্যবহার বর্তমানে অন্যতম বৈশ্বিক এজেন্ডা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাতে ভারত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে শুরু করলেও ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবার বিপরীত চিত্র দেখা গেল। চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) দেশটিতে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লেও তা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের তুলনায় পিছিয়ে গেছে। খবর রয়টার্স।

দেশটির সঞ্চালন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রকদের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, অর্ধ যুগের মধ্যে চলতি বছরের প্রথমার্ধে সবচেয়ে ধীরগতিতে বেড়েছে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন। মূলত ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মোকাবেলায় কয়লার ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর প্রভাব পড়েছে ভারতের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ খাতে।

গ্রিড-ইন্ডিয়ার দৈনিক উৎপাদন তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ দশমিক শতাংশ বেড়েছে। হার সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির চেয়ে বেশি। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধের তুলনায় সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে দশমিক শতাংশ।

বিশ্বে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত। ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে দেশটির সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কোটি ৩৬ লাখ কিলোওয়াট-ঘণ্টায় পৌঁছেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১৪ দশমিক শতাংশ। এছাড়া বার্ষিক হিসাবে উৎপাদন বৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক শতাংশ।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনসাপেক্ষে ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিতে কিছু বিষয়ে একমত হয় অংশীদার দেশগুলো। এর মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য টেকসই জ্বালানি খাতের সম্প্রসারণ। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতি ভারত বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদা পূরণে কয়লাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। প্যারিস চুক্তির পর গত বছর প্রথমবারের মতো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদনের হার নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদনকে ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া জলবিদ্যুতের ব্যবহারও দেশটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

কভিড-পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ এশীয় দেশের জ্বালানি ব্যবহারের ধরনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আঞ্চলিক প্রবণতায় ভারতের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। অঞ্চলের ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম বাংলাদেশের মতো দেশগুলোও সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লার ব্যবহার বাড়িয়েছে বলে জানানো হয় রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির হিস্যা ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ৭৭ দশমিক শতাংশে পৌঁছেছে। অন্যদিকে গত বছরের একই সময়ে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ছিল ৭৬ দশমিক শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে, চার বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির হিস্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

২০২৫ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরের জন্য ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এক দশকের মধ্যে দ্রুততম হারে বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। প্রবৃদ্ধিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের বড় ধরনের ভূমিকা থাকবে। সময় কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বার্ষিক দশমিক শতাংশ বাড়বে। একই সময়ে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে দশমিক শতাংশ হারে।

অবশ্য বিশ্লেষকরা আশা করছেন, গ্রিন এনার্জি খাতে দেশটিতে প্রকল্প আহ্বান বরাদ্দ শিগগিরই বাড়বে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন।

বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিসের ভারতীয় ইউনিট আইসিআরের বিশ্লেষকরা এক পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, দেশটির নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে ২০২৫ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে ২৫ গিগাওয়াট হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন