লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বরাদ্দ চাল আমদানিতে অনিশ্চয়তা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

দুই ধাপে বেনাপোল বন্দর দিয়ে মাত্র ২৮০ টন চাল আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা ছবি: ফাইল/নিজস্ব আলোকচিত্রী

ভারত থেকে চাল আমদানির সময়সীমা শেষ হয়েছে বুধবার। তবে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল আমদানি করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। ভারত সরকারের শুল্ককর আরোপ ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় ডলার সংকটের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বরাদ্দ চাল আমদানি সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে সময় শেষ হওয়ায় ও শুল্ক বৃদ্ধি বহাল থাকায় বরাদ্দ অবশিষ্ট চাল আমদানি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা।

গত ২১ মার্চ ও ১৬ এপ্রিল দুই ধাপে দেশের ৮০টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৭ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। চলতি বছরের ১৫ মে পর্যন্ত ছিল আমদানি ও বাজারে সরবরাহের শেষ সময়সীমা। তবে ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দুই ধাপে বেনাপোল বন্দর দিয়ে মাত্র ২৮০ টন চাল আমদানি করেছে। 

বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর দেশের চালের চাহিদা রয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ টনের মতো। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ টন। চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হলেও মজুদ করতে চাল আমদানি করা হয়ে থাকে। সম্প্রতি দেশে চালের দাম বাড়লে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে গত ১৩ মার্চ দেশের ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। এর মধ্যে সেদ্ধ চাল রয়েছে ৪৯ হাজার টন ও আতপ চাল ৩৪ হাজার টন। পরে ১৬ এপ্রিল আরো ৫০টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে ১ লাখ ২৫ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সেদ্ধ চাল রয়েছে ৯১ হাজার টন ও আতপ চাল ৩৩ হাজার টন। 

বাংলাদেশ সরকারের বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে নানা শর্ত জুড়ে দেয় ভারত সরকার। এমনকি ২৫ শতাংশ শুল্ককর আরোপ করে দেশটি। 

এ বিষয়ে চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেনাপোলের নিপুণ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী লিপু হোসেন জানান, এবার তারা সরকারের কাছ থেকে ছয় হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। তবে চালের ওপর ভারত সরকারের নানা শর্ত এবং শুল্ককর আরোপ ও দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট থাকায় এখন পর্যন্ত চাল আমদানি করতে পারেনি। এর মধ্যে আমদানির সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের অনেক টাকা লোকসান গুনতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

চাল আমদানিকারক হাজি মুছা করিম অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সামাদ জানান, চাল আমদানিতে ভারতে ২৫ শতাংশ ও বাংলাদেশে ১৫ শতাংশ শুল্ককর পরিশোধ করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় চাল আমদানি করলেও লাভবান হতে পারবেন না বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় তিনি চাল আমদানির সময়সীমা বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্যদ্রব্যের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, ‘নতুন করে চাল আমদানির অনুমতি পেলে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হবে।’ 

বেনাপোল বাজারের চাল বিক্রেতা সুশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে চালের দাম বাড়তি। খুচরা বাজারে মোটা চাল ৫০ টাকা, কাজল লতা ৫৫ টাকা, বাসমতি ৭৪ টাকা, তেষট্টি চাল ৬৮ টাকা ও মিনিকেট ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আমদানি হলে আর নতুন ধানের চাল কৃষকের ঘরে উঠলে দাম কমবে আশা করছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন