উত্তরা ব্যাংকের ৩০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ

সাবেক মন্ত্রীর ৪ পুত্রকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক I চট্টগ্রাম ব্যুরো

ছবি : সংগৃহীত

উত্তরা ব্যাংকের ৩০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতায় সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির চার পুত্রকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। গতকাল চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ৩০ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ৪৪৯ দশমিক ৩৯ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে উত্তরা ব্যাংক পিএলসি ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি (নং-৬৫২/২০২৩) দায়ের করে। মামলায় সানোয়ারা ডেইরি ফুডস লিমিটেড ও ইউনিল্যাক সানোয়ারা (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান, চেয়ারম্যান সানোয়ারা বেগম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল ইসলাম, পরিচালক সাইফুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম ও ওয়াহিদুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়েছিল। এর মধ্যে নুরুল ইসলাম সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আদালত বাদী পক্ষের আবেদন আংশিক মঞ্জুর করে নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সানোয়ারা বেগমকে বাদ দিয়ে চার ছেলের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। 

আদেশে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, নালিশি ঋণ সুদ মওকুফ সুবিধা দিয়ে পুনঃতফসিল সুবিধা দেয়ার পরও বিবাদীরা পরিশোধ করছে না। নালিশি ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক নেই। বিবাদীদের পারসোনাল গ্যারান্টিতে ও ট্রাস্ট রিসিটের ভিত্তিতে নালিশি ঋণ বিতরণ করা হলেও বিবাদীরা সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধ না করে দেশে-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। মামলার সব বিবাদী একই কোম্পানির পরিচালক ও একই পরিবারের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও ৬ নং বিবাদী অর্থাৎ পরিচালক সাইফুল ইসলাম ছাড়া অন্য বিবাদীরা অদ্যাবধি মামলায় হাজির হননি। খেলাপি গ্রাহকরা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ১২ মার্চের বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাসহ কতিপয় নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। বিবাদীরা দেশত্যাগ করার সুযোগ পেলে এ মামলার সম্ভাব্য ডিক্রিকৃত অর্থ আদায় অযোগ্য হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে মনে করছেন আদালত। 

নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৬ নং বিবাদী লিখিত বর্ণনায় ঋণের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করলেও মামলার নথিতে উপস্থাপিত পারসোনাল গ্যারান্টিতে তার স্বাক্ষরের বিষয়টি স্বীকার করেন। সুদ মওকুফ সুবিধা নিয়ে নালিশি ঋণ পুনঃতফসিলের কথাও স্বীকার করেন। সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে মামলার ৩ নং বিবাদী মুজিবুর রহমান, ৭-৯ নং বিবাদী যথাক্রমে জাহিদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, ওয়াহিদুল ইসলামকে আদালতের অনুমতি ব্যতীত দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন বিচারক। বিবাদীরা যাতে আদালতের অনুমতি ব্যতীত দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশের কপি বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) শাখায় প্রেরণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন