সোনালী ব্যাংক

বান্দরবানে তিন শাখায় সীমিত কার্যক্রম শুরু

সুজিত সাহা I চট্টগ্রাম ব্যুরো

ছবি : বণিক বার্তা

বান্দরবানের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার পর তিনটি শাখার কার্যক্রম স্থগিত করে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম ৩ এপ্রিল থেকে বান্দরবান সদর শাখায় পরিচালিত হয়ে আসছিল। ঈদের পর ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চালু হলেও নগদ লেনদেন এখনো শুরু করেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পুলিশ চৌকি বসানোর মাধ্যমে আগামী সপ্তাহ থেকে নগদ লেনদেনে ফিরবে স্থগিত শাখাগুলো। 

ব্যাংক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা বাড়ার কারণে ব্যাংকিং কার্যক্রম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বিশেষত সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, সরকারি কাজের অর্থ সরবরাহসহ রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ কারণে ঝুঁকি ও সংকট থাকলেও সেখানে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করা জরুরি। সোনালী ব্যাংক স্থগিত হওয়া শাখায় নিরাপত্তা বাড়ানো, অন্যান্য শাখাগুলোয় তুলে নেয়া পুলিশ গার্ড পুনঃস্থাপন ও চেকপোস্ট বাড়ানোর আবেদন করেছে। 

এরই মধ্যে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে সোনালী ব্যাংকের শাখায় আগের ১০ জনের পাশাপাশি বাড়তি আরো ১০ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করেছে। ১৫ এপ্রিল থেকে স্থগিত থাকা তিনটি শাখার কার্যক্রম চালু হলেও আগামী সপ্তাহ থেকে আর্থিক লেনদেন চালু করবে সোনালী ব্যাংক।

সোনালী ব্যাংক, থানচি ও রুমা থানায় করা ব্যাংকের এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলা সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা করে পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র গ্রুপ কেএনএফ। ওই সময়ে ব্যাংকের ভল্ট খুলতে না পেরে হামলাকারীরা ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের আরেক দুর্গম উপজেলা থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা নিয়ে যায়। এ সময় কৃষি ব্যাংকের পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের ক্যাশে থাকা ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯২ টাকা লুট করে নেয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার পর ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যস্থতায় ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করা হয়। 

মূলত সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখায় আক্রমণ ও ম্যানেজারকে অপহরণের পরদিন থেকেই বান্দরবান সদর শাখায় রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি শাখার কার্যক্রম সাময়িকভাবে হস্তান্তর করা হয়। তিনটি শাখার ভল্ট খালি করে বান্দরবান শাখায় নিয়ে আসে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে ঈদের পর ১৫ এপ্রিল থেকে স্থগিত তিনটি উপজেলা শাখার ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে সোনালী ব্যাংক। শাখা চালু হলেও নগদ লেনদেন আপাতত বন্ধ রেখেছে ব্যাংকটি। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল রোববার কিংবা আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন থেকে সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করতে চায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম-উত্তর) মো. মুসা খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে ৩ এপ্রিল থেকে বান্দরবানের তিনটি উপজেলার কার্যক্রম বান্দরবান থেকে পরিচালিত হচ্ছিল। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্গম এ তিন উপজেলা শাখা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আমরা সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু করেছি। প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। প্রশাসনের আশ্বাস পেলে আগামী সপ্তাহ থেকে নগদ লেনদেনসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করতে পারব।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন