আমার এবারের ঈদ কাজলরেখাময়

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সিনেমার অন্যতম পরিচিত নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম। দর্শকপ্রিয় অনেক সিনেমাই নির্মাণ করেছেন। এর মাঝে সম্প্রতি তাকে দেখা গেছে অভিনয় করতেও। ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাচ্ছে গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত সিনেমা ‘‌কাজলরেখা’। মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। সিনেমা ও ঈদের প্রস্তুতি নিয়ে গিয়াস উদ্দিন সেলিম কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আহমেদ দীন রুমি

‌কাজলরেখা নিয়ে কেমন সাড়া পেয়েছেন? 

খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। যেখানে যাচ্ছি সবাই কাজলরেখা নিয়ে তাদের মতামত জানাচ্ছে। প্রমোশনের ধারাটা সবাই পছন্দ করেছে। সবাই সিনেমা দেখতে যাবে। যাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বা কথা হচ্ছে, কেউ কেউ আমাকে মেসেজও দিচ্ছে। আমাদের পেজেও আমরা দেখছি জনতারা উৎসাহী এ সিনেমা দেখার জন্য। 

এ সিনেমার আইডিয়া কবে থেকে লালন করেছিলেন? 

মনপুরার পর পরই আমি এর স্ক্রিপ্ট লেখা শুরু করি। প্রায় ১৪ বছর ধরেই এর ভাবনা ছিল মাথায়। দুই থেকে আড়াই বছর ধরে স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ করেছি। বিভিন্ন সময় অ্যাটেম্প নিয়েছি এটা করার জন্য, পারি নাই। ২০১৯-২০ সালে সরকারের একটা অনুদান পাই, সেটা সাহস হিসেবে কাজ করে। পাল্কি প্রডাকশন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয় কো-প্রডিউসার হিসেবে। ফলে সফলভাবে শেষ করতে পারছি আরকি। প্রসঙ্গত, আরেকটি ব্যাপার বলে নিই, কাজলরেখা এ যাবতকালে আমার সবচেয়ে বড় অ্যারেঞ্জমেন্ট এবং সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি।

সিনেমা মুক্তির বাইরে ঈদ নিয়ে আলাদা করে পরিকল্পনা আছে? 

না, তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। শুধু কাজলরেখাকে ঘিরেই সবকিছু। পুরো ঈদ কাজলরেখাময়। 

সিনেমা নির্মাণ নিয়ে কোনো অভিজ্ঞতা যদি শেয়ার করতেন... 

অনেক ধরনের অভিজ্ঞতাই আছে, কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব। একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি, যা বেশ চমৎকার। যেদিন শুট শুরু হবে, সেদিন নিয়ে। আমরা এপ্রিল-মে মাসে শুট শুরু করেছিলাম। সেটা সুসং দুর্গাপুরের লক্ষ্মীপুর গ্রামে। সে সময় কাজলরেখার বাড়ি সেট করেছে, সেখানে শুট করব। আগের দিন রাতে আমরা হোটেলে আছি, কালবৈশাখী শুরু হলো, ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি। আমরা হোটেলে বসে বসে অস্থির। ভাবছি সেটের কী থাকল না থাকল। তারপর রাত ১টার সময় আমরা পুরো টিম হোটেল থেকে সেট পরিদর্শনে যাই। গিয়ে দেখি ওখানে এরই মধ্যে একটা বাড়ি উড়ে চলে গেছে। কিছু কাঁঠাল গাছ ভেঙে পড়েছে। বেশকিছু গাছ উপড়ে গেছে। ভয়ে ভয়ে সামনে যাই, কিন্তু দেখি আমাদের সেটটা পুরোপুরি অমলিন। এটার মূল কারণ আর্কিটেকচার। যার কারণে সেটটা পুরোপুরি ঠিকঠাক ছিল, কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আমাদের বঙ্গীয় হাটের যে ভঙ্গি, হাতির পিঠের মতো চালা, মাঝখান দিয়ে বাইন চলাচলের পথ, ওই কারণেই কালবৈশাখী আমাদের বঙ্গীয় হাটগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে নাই। একইভাবে সেটও ক্ষতিগ্রস্ত হয় নাই। সেটের আর্কিটেক্ট সাইফুল হক ভাই, তাকে আমি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই বণিক বার্তার মাধ্যমে।

ঈদ সাধারণত কোথায় করেন? 

ঈদ আমি প্রতিবারেই ভোর বেলা উঠে গাড়িতে করে ফেনী চলে যাই। আমার মা থাকেন সেখানে। সারা দিন মায়ের সঙ্গে কাটিয়ে ঈদের দিন রাতে বা পরের দিন ঢাকায় ফিরে আসি। এবারের ঈদে হয়তো যেতে পারব না। 

এবারের ঈদ নিয়ে পরিকল্পনাটা যদি বলতেন

পরিকল্পনা বলতে কাজলরেখাকে ঘিরেই। এটা আমার প্রথম সিনেমা, যা ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এর আগে আমার কোনো ছবি ঈদে মুক্তি পায়নি। ফলে এটা আমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। সুতরাং আমি হলে যাব। আমি ও আমাদের পুরো টিম যাবে সিনেমা হলে। দর্শকের প্রতিক্রিয়া জানব। তারা কী বোধ করছেন, কেমন লাগছে এসব আরকি। 

ঈদ নিয়ে বিশেষ কোনো স্মৃতি 

আমরা গ্রামে থাকতাম তখন। ঈদের দিন আমাদের অবাধ স্বাধীনতা ছিল। ঈদের দিন সালামি পেতাম আট আনা-একটাকা। খুচরা পয়সা। নোট হয়তো একটা দুটা। আর সবই খুচরা পয়সা। সে খুচরা পয়সার খেলা খেলতাম আমরা। ছোট ছোট বাচ্চাদের খেলা ছিল এটা। বন্ধুর জায়গায় একজন মুদ্রা ছুড়ে মারতাম। অন্য কেউ যদি ওই মুদ্রার চার আঙুলের মধ্যে তার মুদ্রাটা ছুড়ে ফেলতে পারে, তাহলে ওই মুদ্রাটাও তার। ওই স্মৃতিটা আমি কখনো ভুলব না। 

কাজলরেখা নিয়ে দর্শক কিংবা পাঠকদের জন্য কিছু বলতে চান কি?

কাজলরেখা একটি মিউজিক্যাল ফিল্ম। গল্পগুলোয় খুব ছোট ছোট টুইস্ট। খুব সহজ-সরল বাঙালি ভঙ্গিটা পুরো সিনেমায় আছে। ২০-এর বেশি গান রয়েছে। যেটা দর্শক বড় পর্দায় হলে বসে উপভোগ করবে বলে আমার স্থির বিশ্বাস।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন