ঈদ আনন্দে ডিজিটাল কেনাকাটা

হাছান আদনান

ছবি : বণিক বার্তা

ঈদের কেনাকাটায় বাজারে যাচ্ছেন? পকেটে নিন ক্রেডিট কার্ড। ব্র্যান্ডভেদে পাবেন ১০-৫০ শতাংশ ছাড়। দৈনন্দিন কেনাকাটার জন্য গ্রোসারি স্টোরে গেলে সেখানেও মিলবে ১০-২০ শতাংশ ছাড়। উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাজারে এ ছাড়টুকুও কম কিসে? দেশ-বিদেশে ভ্রমণের সঙ্গী হিসেবেও স্বস্তি দেবে ক্রেডিট কার্ড। পাঁচ তারকা হেটেলে রাতযাপন থেকে শুরু করে কেনাকাটায়ও মিলছে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট সুবিধা। একজনের ইফতার কিংবা ডিনার কিনলে মিলছে আরো দুই-পাঁচজনের জন্যও। 

ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি উৎসব রাঙাতে প্রস্তুত বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়ের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসও (এমএফএস)। এমএফএস থেকে পেমেন্ট করেও উপভোগ করতে পারবেন নানা ছাড়। ডিজিটাল কেনাকাটায় গ্রাহকদের স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে ব্যাংকগুলোর চালু করা অ্যাপভিত্তিক ব্যাংকিংও। প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেনাকাটা মানে নগদ টাকা বহনের নিরাপত্তা ঝুঁকি শূন্যের মাত্রায় নামিয়ে আনা।

যেকোনো উৎসবকে রাঙিয়ে তুলতে পণ্য ও সেবার দামে বিশেষ ছাড় নিয়ে হাজির হয় ক্রেডিট কার্ড। প্লাস্টিক মানি বা ক্রেডিট কার্ড বিশ্বব্যাপী নগদ অর্থ বহনের বিকল্প মাধ্যমও হয়ে উঠেছে। উন্নত দেশগুলোয় প্লাস্টিকের এ কার্ড মানুষের পকেটে থাকছে জীবনের অনুষঙ্গ হিসেবে। তবে বাংলাদেশীদের কাছে ক্রেডিট কার্ড এখনো কেবলই ‘লাইফস্টাইল’ পণ্য। বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হলে এ দেশের মানুষেরও বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে ক্রেডিট কার্ড। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বরে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ২ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এ লেনদেনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশই হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের কেনাকাটায়। রিটেইল আউটলেট সার্ভিসেস, ইউটিলিটি বিল, কাপড়, ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটায়ও ব্যবহৃত হয়েছে ক্রেডিট কার্ড। প্লাস্টিকের এ কার্ড ব্যবহার করে গ্রাহকরা বিপদের সময় এটিএম বুথ থেকে নগদ টাকাও তুলছেন। পাশাপাশি ভ্রমণের সময় ভাড়া ও সেবার মাশুলও পরিশোধ করছেন। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে গত ডিসেম্বরে বিদেশে ৫৭৯ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন গ্রাহকরা।

ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নিয়ে বাজারে কিছুটা বিশৃঙ্খলা ছিল। গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো কোনো ব্যাংক ৩০ শতাংশেরও বেশি সুদ আদায় করত। এ অবস্থায় ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সুদ ও সার্ভিস ফি নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সুদ বেঁধে দেয়া হয় ২০ শতাংশ। ওই প্রজ্ঞাপনের পর দেশের সব ব্যাংকই ক্রেডিট কার্ডের সুদহার কমিয়ে এনেছে। এতে গ্রাহকের মধ্যে কার্ডভিত্তিক ঋণ সেবাটির জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।

দেশের ১৬ বছরের ঊর্ধ্বের যেকোনো নাগরিক ক্রেডিট কার্ড সেবা নিতে পারেন। তবে তার নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকতে হয়। পরিবারের অন্য কেউ উপার্জনক্ষম হলেও তার বিপরীতে কার্ড দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। আর এ কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ঋণ নেয়া যায়। কার্ডের ব্যবহার সহজ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংযুক্ত করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি।

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা নির্দিষ্ট পরিমাণ কেনাকাটা ও ঋণ নিতে পারেন। দেশে ইস্যু করা দ্বৈত মুদ্রার ক্রেডিট কার্ড বিদেশেও ব্যবহার করা যায়। এ কারণে টাকার পাশাপাশি ডলারেও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়ছে। দেশে-বিদেশে কার্ড ব্যবহার করে হোটেল বুকিং, থাকা-খাওয়া, ভ্রমণ, বিমান ভাড়া, রেস্তোরাঁ ও কেনাকাটার বিল পরিশোধে মিলছে নানা ছাড় ও পয়েন্ট জেতার সুযোগ। ক্রেডিট কার্ডে নেয়া ঋণের বিপরীতে ৪৫ দিন পর্যন্ত কোনো সুদ পরিশোধ করতে হয় না।

অবকাঠামো সুবিধা না থাকায় বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের বড় অংশই এখনো রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোয় সীমাবদ্ধ। তবে ব্যাংকগুলো এখন জেলা শহরগুলোয়ও এ কার্ড ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। জেলা শহরগুলোর মার্কেট ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় যদিও এখনো পিওএস মেশিনে বিল পরিশোধের সুযোগ খুবই কম। এটিকে ক্রেডিট কার্ডের বাজার সম্প্রসারণের অন্তরায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

দেশে জনপ্রিয়তার দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে ভিসা ব্র্যান্ডের ক্রেডিট কার্ড। মোট লেনদেনের প্রায় ৭০ শতাংশই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এ কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। দেশের ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা অন্য ক্রেডিট কার্ডগুলো হলো মাস্টারকার্ড, এমেক্স, ডিনারস, জেসিবি, কিউক্যাশ ও ইউনিয়নপে। দেশের প্রায় ৪০টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ইস্যু করা হয়েছে মোট ২৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৭৭টি ক্রেডিট কার্ড। অর্থনীতির আকার, জনসংখ্যার পরিমাণ, ক্রয়ক্ষমতা ও মধ্যবিত্তের সংখ্যা বিবেচনায় নিলে বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা খুবই কম বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, দেশে ক্রেডিট কার্ডের বাজারের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিশেষ এ কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে নানা শর্ত, প্রতিবন্ধকতা ও ব্যবহারকারীদের অনভিজ্ঞতা এর বাজার সংকুচিত করে রেখেছে।

বিশ্বের ১২১টি দেশের জনসংখ্যা ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে র‍্যাংকিং তৈরি করেছে বৈশ্বিক অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যাটিস্টা’। এর তথ্যমতে, ১২১টি দেশের ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। সেখানে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। ১২১টি দেশের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও প্রাপ্তবয়স্কদের ৪ দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এমনকি নেপালেরও ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে নেপালের অবস্থান ১০৩তম। আর থাইল্যান্ডের ২২ দশমিক ৬১ শতাংশ মানুষের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে সবার শীর্ষে কানাডা। দেশটির প্রাপ্তবয়স্কদের ৮২ দশমিক ৭৪ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এ তালিকায় শীর্ষস্থানে থাকা অন্য দেশগুলোর মধ্যে জাপানের ৬৯ দশমিক ৬৬, সুইজারল্যান্ডের ৬৯ দশমিক ২১, দক্ষিণ কোরিয়ার ৬৮ দশমিক ৪৪, যুক্তরাষ্ট্রের ৬৬ দশমিক ৭ ও যুক্তরাজ্যের ৬৬ দশমিক ১১ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমানও মনে করেন বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জনসংখ্যার বিবেচনায় ক্রেডিট কার্ডের বাজার খুবই ছোট। তিনি বলেন, দেশে এত ব্যাংক, এত জনসংখ্যা। তার পরও ক্রেডিট কার্ডের যে সংখ্যা সেটি হতাশাজনক। ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) টিআইএন সার্টিফিকেট ও আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ শর্ত ক্রেডিট কার্ডের বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধ্যবাধকতার কারণে ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অনুসরণ করে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের নথিপত্র জমা দেয়ার শর্ত পূরণ করতে না পেরে অনেক গ্রাহকই কার্ড না নিয়ে ফিরে যান। ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ও লেনদেন বাড়ানো সম্ভব হলে দেশে কালো টাকার দৌরাত্ম্য কমে আসত। কারণ কার্ডে যেকোনো লেনদেন নজরদারি করা যায়।

দেশে ৪০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করলেও বাজারে সবার কার্ড জনপ্রিয়তা পায়নি। ক্রেডিট কার্ড বাজারের বড় অংশই ৫-৭টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায় এগিয়ে থাকা ব্যাংকগুলো হলো—সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, বিদেশী স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। তবে অন্য ব্যাংকগুলোও নিজেদের ক্রেডিট কার্ডকে জনপ্রিয় করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছে। দেশের নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) মধ্যে ক্রেডিট কার্ড রয়েছে কেবল লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের। ক্রেডিট কার্ডের বাজারে এ প্রতিষ্ঠানের অবস্থান শীর্ষ পাঁচের মধ্যে রয়েছে।

ঈদসহ যেকোনো উৎসব উপলক্ষে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটায় আকর্ষণীয় ছাড়সহ বিভিন্ন অফার ঘোষণা করছে ব্যাংকগুলো। ক্রেডিট কার্ডকে জনপ্রিয় করে তুলতেই এসব অফার ঘোষণা করা হচ্ছে। আবার গ্রাহকদের মধ্যে ঘোষিত অফারগুলো বেশ সাড়াও ফেলছে। ফলে উৎসবের সময়ে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটাসহ লেনদেন বাড়ছে। তবে ক্রেডিট কার্ড এখন শুধু উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। বরং সারা বছরই বিশেষ এ কার্ডে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থের লেনদেন হচ্ছে।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড এখন আর লাইফস্টাইল পণ্য নয়। এটি দৈনন্দিন জীবনযাপনের অপরিহার্য একটি অংশ। এখনো আমাদের দেশের বড় অংশের মানুষের কাছে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের ভীতি আছে। এ কারণে দেশের অর্থনীতি ও জনসংখ্যার অনুপাতে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা খুবই কম। আমরা মানুষের মধ্যে সৃষ্ট সংশয় দূর করার চেষ্টা করছি। দেশের গ্রামগঞ্জে সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

গত এক দশকে দেশের ডিজিটাল লেনদেনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে এমএফএস। মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে পরিচিত এ ব্যবস্থায় এখন প্রতি মাসে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত ডিসেম্বরে এমএফএসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। এর আগে নভেম্বরে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। বর্তমানে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা ২২ কোটি ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে দেশে ডিজিটাল কেনাকাটা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোও গ্রাহকদের কেনাকাটায় উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ধরনের ছাড়সহ অফার ঘোষণা করছে। ঈদকে কেন্দ্র করে এমএফএসের মাধ্যমে পণ্যের দাম পরিশোধ করলে ৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দেয়া হচ্ছে। 

আবার এমএফএসের বিকল্প হিসেবে ব্যাংকগুলো মোবাইল অ্যাপ নিয়ে এসেছে, যা ব্যবহার করেই যাবতীয় ব্যাংকিং লেনদেন করা যাচ্ছে। যেমন ইসলামী ব্যাংকের অ্যাপ ‘সেলফিন’-এর মাধ্যমে দৈনন্দিন লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। অন্য ব্যাংকগুলোও নিজেদের অ্যাপ জনপ্রিয় করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের অফার ঘোষণা করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন