ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা ধৈর্য ও যত্নের সঙ্গে আমার চিকিৎসা করেছেন

ছবি : বণিক বার্তা

আমি মিসেস নাহার। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য নয় মাস আগে বগুড়া থেকে ঢাকায় আসি। প্রথম যেদিন জানতে পারি আমি স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত, স্বাভাবিকভাবেই অনেক বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম। কোথায় চিকিৎসা করাব, খরচ কেমন পড়বে—এসব নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না। দেশের বাইরে চিকিৎসা করানোর কথাও ভেবেছিলাম। ক্যান্সার ধরা পড়ার শুরুতেই ডাক্তাররা আমাকে বলেছিলেন দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে। তারপর ডাক্তার এবং কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে আমি ঢাকায় ল্যাবএইড ক্যান্সার হসপিটাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে চিকিৎসার জন্য আসি। সম্প্রতি আমার রেডিওথেরাপি শেষ হয়েছে, এখন আমি ফলোআপে আছি। তবে ক্যান্সারের প্রাথমিক ধাক্কাটা আমি সামলে উঠেছি। 

আমি যেদিন প্রথম ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে আসি সেদিন আমি তাদের নাম লেখা বোর্ডটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। বোর্ডে লেখা ছিল, ল্যাবএইড ক্যান্সার হসপিটাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার। সেদিন মনে হয়েছিল, অবশেষে আমি একটা ভরসার জায়গা পেলাম। শুধু ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য আমাদের দেশেই একটি আন্তর্জাতিক মানের স্পেশালাইজড হাসপাতাল আছে—বিষয়টি আমার মানসিক শক্তিকে দ্বিগুণ করে দিয়েছিল।

ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে যখন আমার চিকিৎসা শুরু হয় তখন আমি স্তন ক্যান্সারের দ্বিতীয় স্টেজে ছিলাম। তারা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রোগের মাত্রা নির্ণয় করে আমার চিকিৎসা শুরু করে। এখানকার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা অত্যন্ত ধৈর্য ও যত্নের সঙ্গে আমার চিকিৎসা করেছেন। উনারা প্রতিবারই অনেক সময় নিয়ে আমাকে চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধ সম্পর্কে বুঝিয়ে বলেছেন। সাহস দিয়েছেন। এছাড়া ২৪/৭ ডাক্তারদের সঙ্গে অনলাইন যোগাযোগ করার সুযোগ ছিল, যা অনেক বড় একটা পাওয়া। মূল কথা উন্নত চিকিৎসার পাশাপাশি ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালের সব বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্সসহ প্রতিটি স্টাফ আমাকে ক্যান্সার জয়ের পথে নিরলসভাবে সাহস ও মানসিক শক্তি জুগিয়ে গেছেন। 

ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে রয়েছে ডে কেয়ার সুবিধা ও সেই সঙ্গে এখানকার পরিবেশও অনেক সুন্দর ও স্বাস্থ্যসম্মত। পাশাপাশি রোগীর খাবারের ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হয়। প্রতিটি রোগীর বয়স, রোগের মাত্রা ইত্যাদি বিবেচনায় রেখে ডাক্তারের মাধ্যমে খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করে দেয়া হয়। 

আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে যে বিদেশী ডাক্তার-নার্সরা রোগীর সঙ্গে অত্যন্ত ভালো ব্যবহার করেন, যা বাংলাদেশে পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল সম্পর্কে জানলে কারো পক্ষে এ কথা বলা সম্ভব হবে না। একজন মা যেভাবে সন্তানের যত্ন করেন ঠিক সেভাবে এখানকার ডাক্তার, নার্স ও অ্যাটেন্ডেন্টরা প্রতিনিয়ত রোগীর যত্ন নেন। আমাকে অনেকেই বলেছিল, ক্যান্সার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা দেশে পাওয়া সম্ভব নয়। আমি মনে করি তাদের সবাইকে ভুল প্রমাণ করেছে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল। 

মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে যে প্রত্যাশা ও বিশ্বাস নিয়ে আমি ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে এসেছিলাম তার চেয়ে বহুগুণ প্রাপ্তি এবং প্রশান্তি নিয়ে আমি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছি। আমি মনে করি, আমাদের দেশেই এখন ক্যান্সারের আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ল্যাবএইড ক্যান্সার হসপিটাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যদিও আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ক্যান্সার চিকিৎসা এখনো অনেক ব্যয়বহুল, তবু দেশেই ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে পারলে রোগীর পক্ষে অনেক বাড়তি খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের ক্যান্সার রোগীদের জন্য ল্যাবএইড ক্যান্সার হসপিটাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার সেই সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন