৩৭ সপ্তাহ পর যুদ্ধজয়ী এক মানবীর গল্প

আইসিআরসি সেন্টারে জন্ম নেয়া টেস্টটিউব বেবির সঙ্গে ডা. রাশিদা বেগম

ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার লিমিটেডের (আইসিআরসি) যাত্রা শুরু ২০০২ সালে, একটি ভাড়া বাসায়। প্রাথমিক অবস্থায় অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। কীভাবে প্রতিষ্ঠানটি সাজানো হবে, কীভাবে আবহ তৈরি করতে হবে—এসব কিছুই তখন বুঝতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির চিফ কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগম। তিনি জানান, টেস্টটিউব বেবি নেয়ার দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি আইভিএফ আর অন্যটি ইকসি। আমার প্রতিষ্ঠানে এসব কাজ করা আমিই শুরু করেছি। ১৫ বছর ধরে ইকসি আমি করেছি। এর মধ্যেই অনেককে শিখিয়েছি। এমব্রায়োলজিস্ট তৈরি করা অনেক কঠিন কাজ। যাই হোক শেষ পর্যন্ত একজনকে তৈরি করতে পেরেছি যে পুরো সময় ল্যাবে দিতে পারে। ২০১৮ সাল থেকে সে একা একাই কাজ করে।

এর মধ্যে আবার বেশকিছু সফলতার গল্পও তৈরি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। সেই সফলতার একটি গল্প জানা গেল রাশিদা বেগমের বরাতে। জনৈক ডাক্তার, তার স্ত্রী ডাক্তার নয়। ২০১৯-এ এন্ডোমেট্রিওসিস নিয়ে এল, প্রোফাইল ভালো নয়।

আইভিএফ অফার করা হলো। গড়িমসি করে যখন ২০২১-এ আবার এল তখন প্রোফাইল আরো খারাপ হয়ে গেল। বয়স ৪১, এএমএইচ ০.১৭, বড় বড় চকোলেট সিস্ট, ইউটেরাসে এডিনোমায়োসিস সঙ্গে সিম্পটম ব্যথা। এমন প্রোফাইল দেখলে, চিকিৎসকেরও মাথাব্যথা হয়ে যায়। কাউন্সেলিং চলে ট্রাকশন ও কাউন্টার ট্রাকশনের মতো। এক চিমটি আশা আর তিন চিমটি নিরাশা দিয়ে। এ বাস্তবতা নিয়ে কেউ শুরু করেন, কেউ করেন না। দম্পতি শুরু করল। চকোলেট সিস্ট এবং এডিনোমায়োসিস ঠিকঠাক করতে গেল জুলাই থেকে অক্টোবর। ততক্ষণে আরো কিছু ডিম্বাণুর ক্ষয় হলো। নভেম্বরে শুরু হলো আসল চিকিৎসা। একটিমাত্র ডিম্বাণু অঙ্কুর দিল। সেটিকে নিয়েই যাত্রা শুরু। সেই একটিই বড় হলো, পাওয়া গেল, ইকসিতে নিষেক ঘটল, ভালো এমব্রায়ো হলো। তৃতীয় দিনে ট্রান্সফারের সিদ্ধান্ত হলো। এন্ডোমেট্রিওসিসের ইউটেরাস। আন্ডার জি এ, এই সুন্দর ব্লাস্টোসিসটা ডে ফাইভে ট্রান্সফার করা হলো। ৩৭ সপ্তাহ পরে যুদ্ধজয়ী এক মানবী এ ধরায় পদার্পণ করল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন