ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের পর্যবেক্ষণ

ডলার সংকট ও বাজারগত ত্রুটির কারণে দাম কমছে না নিত্যপণ্যের

হাফিজুর রহমান

আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমলেও দেশের বাজারে ভোক্তারা এর সুফল পাচ্ছে না। ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা, পেঁয়াজ ও রসুনের মতো নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে ১৬-৬৩ শতাংশ দাম কমেছে, সে তুলনায় স্থানীয় বাজারে তার প্রতিফলন নেই বলে স্বীকার করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট, সময়মতো এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারা এবং পণ্য খালাসে বিলম্বের কারণে দেশে আমদানির পর পণ্যের মূল্য আগের চেয়ে বেশি পড়ছে। সেজন্য ভোক্তারা এর সুফল পাচ্ছে না। তবে বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বল মনিটরিং ও সিন্ডিকেশন কার্যক্রমকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্স সভার পর্যবেক্ষণে বলা হয়, গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন গমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে। সেখানে দেশের বাজারে প্রতি কেজি আটার দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ। চিনির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে ৩৩ শতাংশ বাড়লেও দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে দাম বাড়ে ৫৮ শতাংশ। সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে ৪৪ শতাংশ কমেছে, সেখানে দেশের বাজারে প্রতি লিটারে কমেছে মাত্র ২ শতাংশ। পাম অয়েলের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম টনপ্রতি ৪৯ শতাংশ কমে এর বিপরীতে দেশের বাজারে কমে লিটারপ্রতি ২০ শতাংশ। পেঁয়াজের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে টনপ্রতি ৬৩ শতাংশ কমে সেখানে দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে বাড়ে ৯৩ শতাংশের বেশি। রসুনের দাম বিশ্ববাজারে টনপ্রতি ১৬ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৯৩ শতাংশ। একইভাবে আদার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে ১৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, আর দেশে প্রতি কেজিতে বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৪৫ শতাংশ। 

নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসের উৎপাদন, আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশের বাজারে বছরে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন হলেও ১১ মাসে এর ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। একইভাবে আদার চাহিদা সাড়ে চার লাখ টন, সেখানে ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। বছরে গমের চাহিদা ৭০ লাখ টন, বিপরীতে এ সময়ে ঘাটতি রয়েছে ২৪ লাখ টন। এছাড়া দেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টন, এর বিপরীতে ১১ মাসে উদ্বৃত্ত ১১ লাখ টন। পেঁয়াজের চাহিদার চেয়ে বাজারে উদ্বৃত্ত থাকার পরও এ পণ্যের দাম ৯৩ শতাংশ বেড়েছে দেশের বাজারে। বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত দুই মাসে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ে প্রায় তিন গুণ। যদিও উৎপাদন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর গত ৫ জুন থেকে আমদানির অনুমতি দেয়া শুরু করে সরকার। একই সঙ্গে ভোজ্যতেলের চাহিদা বছরে ২২ লাখ টন ও রসুনের ছয় লাখ টন, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে এ দুটি পণ্যের ক্ষেত্রেই উদ্বৃত্তের পরিমাণ প্রায় দুই লাখ টন। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি মূল্যের তুলনায় খুচরা মূল্যের উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া মৌসুমি শুল্ক না থাকায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের উৎপাদন মূল্য ওই পণ্যের আমদানীকৃত মূল্যের ধারা অতিমাত্রায় প্রভাবিত। এছাড়া পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের বেশির ভাগ চাহিদা স্থানীয় উৎপাদনে মেটানো সম্ভব, তবে উৎপাদিত পণ্য যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়। এতে উৎপাদন মৌসুমে চাষী যথাযথ মূল্য পান না এবং লিন পিরিয়ডে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আমদানিকারকদের দাবি, যথাসময়ে ব্যাংকগুলো ডলার সরবরাহ করতে না পারায় আমদানি বিঘ্নিত হচ্ছে। শতভাগ এলসি মার্জিনের কারণে কস্ট অব ফান্ড বেড়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ডলার সরবরাহে ঘাটতির ফলে সরকারকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। এর ফলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের দাবি, আমদানীকৃত পণ্য যথাসময়ে খালাস করতে না পারায় জাহাজের ড্যামারেজ (ক্ষতিপূরণ) চার্জের কারণে আমদানীকৃত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমলেও সে অনুযায়ী শুল্ক কর্তৃপক্ষ শুল্কায়ন করছে না। এর ফলেও দাম বাড়ছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অসীম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী অসীম কুমার দাশ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিশ্ববাজারে দাম কমেছে এটা সত্য। কিন্তু বৈশ্বিকভাবে দাম কমলেও দেশে ক্রমাগত বাড়ছে ডলারের দাম। ফলে পণ্যের দাম অপরাপর দেশের সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবে না। ৮২-৮৪ টাকার ডলার বর্তমানে ১১২ টাকারও বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। এর মধ্যে ডলার সংকট, সময়মতো এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারার কারণেও দেশে আমদানির পর পণ্যের কস্টিং আগের চেয়ে বেশি পড়ছে। ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি করে মজুদ রেখে ব্যাংকের সুদ দেয়ার চেয়ে বিক্রির মাধ্যমে নতুন আমদানিতে বেশি আগ্রহী। তাছাড়া আমদানির সঙ্গে পণ্যের চাহিদার অসামঞ্জস্যতার কারণেও ভোক্তা পর্যায়ে গিয়ে দামের অসংগতি থাকতে পারে। সেটি আমদানিকারকদের দায় নয়।’

এছাড়া দাম বাড়ার কারণের মধ্যে রয়েছে বাজার ব্যবস্থাপনার কাঠামোগত ও নীতিগত দুর্বলতা, যথাযথ প্রতিযোগিতার অভাব, ক্রয়-বিক্রয়ের রেকর্ড সংরক্ষণের অভাব। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম কমানোর জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে জনবল বাড়িয়ে দেশব্যাপী কার্যকর মনিটরিং কার্যক্রম বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম কমলেও দেশে প্রভাব পড়তে বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন দ্য চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দেশে ভোগ্যপণ্যের দাম দৃশ্যত সময়ের মধ্যে সমন্বয় না হওয়ার জন্য এককভাবে ব্যবসায়ী বা আমদানিকারকদের দায়ী করা যাবে না। ডলার ও এলসি সংকটের কারণে একজন ব্যবসায়ীকে পণ্য আমদানিতে সবচেয়ে বড় জটিলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। রিজার্ভ সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো চাহিদামতো সহযোগিতা না করায় আমদানিকারকদের কারখানার ২৪ ঘণ্টার উৎপাদন প্রক্রিয়া চালিয়ে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ বিভিন্ন সংকটও পণ্যমূল্য বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। এসব সমস্যা সমাধান হয়ে গেলে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি করে অতিমুনাফার আশায় মজুদ রাখতেন না। এর পরও পাইকারি বাজারে কেউ অতিমুনাফার জন্য দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি করলে মনিটরিং জোরদার করে বাজার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা উচিত।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে আরো উঠে এসেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির মূল্যবৃদ্ধি বিবেচনায় আমদানি শুল্কে যে ছাড় দেয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে চিনি শিল্প সুরক্ষায় আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হলেও বর্তমানে স্থানীয় চিনির উৎপাদন মোট চাহিদার ১ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির মূল্যবৃদ্ধির বিবেচনায় আমদানি শুল্কে যে ছাড় দেয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া পেঁয়াজের স্থানীয় চাষী সুরক্ষায় কৃষি মন্ত্রণালয় আইপি ইস্যু করতে বিলম্বের সুযোগ নিয়েছে মধ্যস্বত্বভোগী।

এ পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের সুপারিশে বলছে, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে স্পেসিফিক শুল্ক আরোপ করা। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্য পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মজুদকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। চাষী সুরক্ষায় আমদানি বন্ধ না করে মৌসুমি কর আরোপ করা। ভোজ্যতেল ও চিনি বাজারজাতে শতভাগ কনজিউমার প্যাক নিশ্চিত করা। টিসিবির পণ্য স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সংগ্রহের ব্যবস্থা করা। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে টিসিবির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করে বাজার ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন পলিসিগত ও কাঠামোগত ঘাটতি অনুসন্ধান ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের এলসি খোলার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডলার সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং শতভাগ মার্জিনের শর্ত শিথিল করা দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডলার সরবরাহের ব্যবস্থা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সেই সঙ্গে এসব পণ্য শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ট্রানজেকশন ভ্যালুর পরিবর্তে ইনভয়েস ভ্যালু বিবেচনায় শুল্কায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। 

টাস্কফোর্সের সভাপতি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেই সঙ্গে সঙ্গে দেশে সেই পণ্যের দাম কমানো সম্ভব হয় না। এর কারণ আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে ডলারের দাম একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। এছাড়া শুল্কহার, অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যয় মূল্য নির্ধারণে প্রতিফলন ঘটে।’

তিনি বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ার পর পরই বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৩০ হাজার টন দেশে চলে এসেছে। অনুমোদনপ্রাপ্ত বাকি পেঁয়াজ দেশে এলে দাম আরো কমবে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘গত এক বছরে চাহিদা বিবেচনায় দেশে চিনি, গম ও আদা ছাড়া অন্য কোনো পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি নেই। ঈদুল আজহায় যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেগুলোর দাম স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের দামও স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে কথা হয়েছে। চীন থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় দেশে আদার সংকট আছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে। আমরা ব্যবসায়ীদের সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।’

সচিব জানান, দেশে এক বছরের ব্যবধানে গম আমদানি ২৪ লাখ টন এবং চিনি আমদানি কমেছে ৭২ হাজার টন। আমদানি কম হওয়ায় দামের প্রভাব পড়েছে বাজারে। দেশের চিনি চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম নির্ধারণ করতে হয়। বেশ কিছুদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম স্থির রয়েছে। 

কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাবের) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সমস্যা অনেক রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেল, চিনি, গম সবগুলোর দাম অর্ধেকের বেশি কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশেও দাম বাড়ে, সে পণ্য এখানে আসুক বা না আসুক। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে সেই অনুপাতে দাম কমে না। এ বিষয়ে যারা বিশ্লেষণ করছেন সে বিশ্লেষণগুলো সবই ব্যবসায়ীদের স্বার্থে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনেকদিন ধরে সমস্যাগুলোই স্বীকার করেনি। যে কারণে সমস্যাগুলো রয়ে গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোও বাজার নিয়ন্ত্রণে সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি।’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্থানীয় বাজারের একটা সময়ের বিলম্বিত প্রতিফলন থাকতে পারে। তবে আমাদের দেশে দাম বাড়ার প্রবণতা যৌক্তিক অবস্থাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখানে বাজার ব্যবস্থাপনার দিক থেকে ঠিক সময়ে আমদানি করা হয়েছে কিনা সেটা একটা ফ্যাক্টর। কারণ কিছু ক্ষেত্রে এলসি খুলতে দেরি হয়েছে এটার সুযোগও কেউ কেউ নিতে পারে। এছাড়া বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও অন্য কোনো সিন্ডিকেশন আছে কিনা সেটা প্রতিযোগিতা কমিশন ও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেখতে হবে। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠান কী ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সেটাও আমরা দেখছি না। কী কারণে এ রকম বাজার পরিস্থিতি সেটা খুঁজে বের করতে হবে। মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে আমদানিকারকরা বেশি দাম দিয়ে এলসি খুলছে। এরও একটা প্রভাব বাজারে থাকতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার না হয়ে কোনো কোনো পণ্য বাজারের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। এখানে বাজার ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণের ওপর সময়মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন