যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিরোধে ক্ষতি হবে কোরিয়ান টেক জায়ান্টদের

বণিক বার্তা ডেস্ক

স্যামসাংয়ের ৪০ শতাংশ ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ উৎপাদন করে চীন ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বর্তমানে চিপ যুদ্ধ চলছে। জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে এমন অভিযোগে প্রযুক্তি থেকে শুরু করে উপাদান সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। ফলে চীন এখন অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। এ দুই দেশের বিরোধের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেননা বড় ধরনের উৎপাদনের জন্য কোরিয়া মূলত চীনের ওপর নির্ভরশীল। খবর সিএনবিসি।

ফিচ রেটিংসের মতে, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিরোধের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি খাতে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রভাব পড়বে না। ৭ জুন প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, অ্যাডভান্সড সেমিকন্ডাক্টর চিপ উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ চীনে সরবরাহে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আর এর কারণে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস ও এসকে হাইনিক্স হুমকির মুখে রয়েছে।

বিশ্লেষক ম্যাট জেমিসন জানান, স্যামসাং যে পরিমাণ ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ উৎপাদন করে তার ৪০ শতাংশই চীন তৈরি করে। এছাড়া এসকে হাইনিক্সের ৪০-৫০ শতাংশ ডায়নামিক র‍্যান্ডম অ্যাকসেস মেমোরি (ডির‍্যাম ) চিপ ও ২০ শতাংশ ন্যান্ড চীনে উৎপাদিত হয়ে থাকে।

প্রতিবেদনে ক্রেডিট রেটিংস সংস্থাটি জানায়, বাণিজ্য বিরোধের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার খুব বেশি সমস্যা হবে না। কেননা নিজ দেশেই কোম্পানি দুটি নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

২০২২ সালের অক্টোবরে উন্নত প্রযুক্তির সেমিকন্ডাক্টর চিপ তৈরির প্রযুক্তি ব্যবহারে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মূলত এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চীনের সামরিক বাহিনী শক্তিশালী হয়ে উঠবে এমন শঙ্কার কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। জাপান ও নেদারল্যান্ডসও পরবর্তী সময়ে যুক্ত হয়।

বৈশ্বিকভাবে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস ও এসকে হাইনিক্স বিশ্বের অন্যতম দুটি মেমোরি চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এর পর তৃতীয় অবস্থানে আছে মাইক্রন। কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটে স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে মেমোরি চিপ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। চীনে কোম্পানিগুলোর ফ্যাব্রিকেশন প্লান্টগুলো সাধারণ ও উন্নত দুই ধরনের চিপই তৈরি করে থাকে। এগুলোর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়নি। এছাড়াও চীনে ব্যবহারের পাশাপাশি রফতানির জন্য মেমোরি চিপও তৈরি করা হয়ে থাকে।

কোরিয়া টাইমসের তথ্যানুযায়ী, চীনে থাকা কারখানায় উন্নত সরঞ্জাম আমদানির জন্য দুটি কোম্পানিই যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়পত্র পেয়েছে। অক্টোবর পর্যন্ত এ আমদানি অব্যাহত থাকবে। ফিচ রেটিংস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র যদি ছাড়ের মেয়াদ না বাড়ায় তাহলে চীনের কারখানায় বর্তমানে যে প্রযুক্তি রয়েছে তার মাধ্যমে উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারবে।

নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে চীনও নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। মে মাসে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোয় মাইক্রনের পণ্য ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন সরকার। ফিচ রেটিংস জানায়, নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনে উচ্চমূল্যে চিপ বিক্রির মাধ্যমে মূলত স্যামসাং ও এসকে হাইনিক্সই লাভবান হবে। এছাড়া মাইক্রন যদি চীনের বাইরে এর পণ্য বিক্রি শুরু করে তাহলে নেতিবাচক প্রভাব তেমন গুরুতর হবে না। এর ফলে বৈশ্বিক পর্যায়ে চিপের দামও উল্লেখযোগ্য হারে কমবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন