পাঁচ অপারেটরের কাছে পাওনা ১৩ হাজার কোটি টাকা —সংসদে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পাঁচ সেলফোন অপারেটরের কাছে সরকারের পাওনার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি অপারেটরও রয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে ডাক টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া একটিসহ পাঁচ সেলফোন অপারেটরের বকেয়ার পরিমাণ ১৩ হাজার ৪০৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। অপারেটরগুলোর মধ্যে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি বেসরকারি।

গতকাল কুষ্টিয়া- আসনের সংসদ সদস্য  সরওয়ার জাহানের প্রশ্নের জবাবে অপারেটরগুলোর কাছে পাওনার সর্বশেষ তথ্য দেন মোস্তফা জব্বার। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণফোনের কাছে সরকারের পাওনা ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ রবি আজিয়াটার কাছে ৭২৯ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকা। বাংলালিংক ডিজিটালের কাছে ২০২১ সালের নিলামে বরাদ্দকৃত তরঙ্গের দ্বিতীয় কিস্তি এবং ২০২২ সালের তরঙ্গ নিলামের ডাউন পেমেন্ট বাবদ ২৭৩ কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার ২৯২ টাকা পাওনা রয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর কোম্পানি টেলিটক বাংলাদেশে লিমিটেডের কাছে সরকারের পাওনা হাজার ৬৯৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, টেলিটকের কাছে পাওনার মধ্যে হাজার ৫৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা হলো থ্রিজি স্পেকট্রাম অ্যাসাইনমেন্ট ফি বাবদ। এছাড়া স্পেকট্রাম চার্জ বাবদ ২৭ কোটি ১৫ লাখ, রেভিনিউ শেয়ার বাবদ ৩৩ কোটি ৭৯ লাখ এসওএফ বাবদ ৪৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।

মন্ত্রী জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়া সেলফোন অপারেটর সিটিসেলের কাছে সরকার এখনো ১২৮ কোটি লাখ ৯৮ হাজার ৩২৩ টাকা পায়।

গত বছরের জুন সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া একটিসহ চারটি সেলফোন অপারেটরের কাছে সরকারের পাওনা ১৩ হাজার ৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৯৩৪ টাকা। সে সময় পর্যন্ত বেসরকারি অপারেটর বাংলালিংকের কাছে কোনো বকেয়া ছিল না।

এছাড়া সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোহম্মদ হাবিব হাসানের আরেক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডাক টেলিযোগ বিভাগের আওতাধীন বিটিআরসি কর্তৃক গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইস্যুকৃত বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা কলসেন্টার রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৭৯। অপারেশনাল কল সেন্টারের সংখ্যা ৬৮। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক কল সেন্টার ৪৫টি, অভ্যন্তরীণ কল সেন্টারের সংখ্যা ২৩।

ডাক অধিদপ্তরের প্রচলিত অর্থে কোনো কল সেন্টার নেই জানিয়ে ডাক টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, দেশের ডাকঘরগুলোকে কল সেন্টারে রূপান্তরের পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। সব ডাকঘরে ধরনের কল সেন্টার তৈরির জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল প্রয়োজন। এছাড়া ডাক বিভাগের প্রতিটি ইউনিটের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার নাম টেলিফোন নম্বর ওয়েবসাইটে দেয়া রয়েছে।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে ব্যান্ডউইডথ রফতানির বিষয়টি সত্য। ভারতের সঙ্গে আইপি ট্রানজিট লিজ প্রদান-সংক্রান্ত একটি চুক্তি ২০১৫ সালের জুন সই হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী দেশটির পূর্বাঞ্চলের প্রদেশগুলোর জন্য প্রাথমিক অবস্থায় ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ বাংলাদেশ থেকে লিজ দেয়া হয়। বিএসসিসিএল বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্র মালিকানাধীন কোম্পানি বিএসএনএলকে ত্রিপুরায় ২০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ রফতানি করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন