মোছলেম উদ্দিন ছিলেন দল ও দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম- আসনের সদ্যপ্রয়াত সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মোছলেম উদ্দিন দল দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। চিরদিন তাকে জাতি স্মরণ করবে।

গতকাল জাতীয় সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা কথা বলেন। আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিনের মৃতুতে সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে সংসদে মিনিট নীরবতা পালন তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করা হয়। পরে চলতি সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুতে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।

মোছলেম উদ্দিন আহমদ গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও শোক প্রস্তাবের ওপর তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী . হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সামশুল হক চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ মসিউর রহমান রাঙ্গা বক্তব্য রাখেন।

অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও কিছুদিন আগে তাকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাকে সভাপতি করেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শেষ পর্যন্ত তিনি আমাদের ছেড়ে চলেই গেলেন।

মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদের সদস্য হতে পেরে খুবই আনন্দিত ছিলেন বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা তাকে নমিনেশন দিয়েছিলাম, তখন জয়ী হতে পারেননি। ২০২০ সালে নমিনেশন পেয়ে জয়ী হলে এলেন। তিনি খুবই খুশি ছিলেন যে তিনি সংসদ সদস্য হতে পেরেছেন। জনগণের কথা সংসদে বলতে পারবেন। আজকে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন।

সংসদ নেতা বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করে তিনি উঠে এসেছেন। ছাত্রলীগ, যুবলীগ আওয়ামী লীগ করেছেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বা তার আগের আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সব সময় সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় অপারেশন চালাতে গিয়ে তিনি মহিউদ্দিন চৌধুরী গ্রেফতারও হন। তারা সেখানে যথাযথ গেরিলার মতোই কাজ করেছিলেন। সেখান থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হন। মুক্ত হয়ে আবারো যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর যারা চট্টগ্রামে প্রতিবাদ করেছিলেন মোছলেম উদ্দিন তাদের সঙ্গেই ছিলেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলন, খালেদা জিয়ার ভোট চুরির বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার অবস্থান উপলব্ধি করেছি। সবসময় তাকে পাশে পেয়েছি। আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ একজন কর্মীকে আমরা হারিয়েছি। যিনি আমাদের দলের দুঃসময়ে পাশে যেমন ছিলেন জাতীয় স্বার্থেও যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেও আমার চট্টগ্রামের জনসভার আয়োজন করতে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তরিকতা দলের প্রতি কর্তব্যবোধ, দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ এটাই ছিল সব থেকে বড় কথা। আওয়ামী লীগের জন্য এটা বিরাট ক্ষতি।

চলতি সংসদে আওয়ামী লীগের ২১ জনসহ মোট ২৩ জন সদস্য মারা গেছেন। নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবারই সংসদে আসি। বহু নেতাকর্মীকে হারাই। একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে। তবে তার কর্মফলটাই মানুষ স্মরণ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন