কাভার্ড ভ্যানচাপায় বাবা-ছেলেসহ নিহত ৫

শোকের গ্রাম যশোরের মণিরামপুরের টুনিয়াঘরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

যশোরের মণিরামপুরে কাভার্ড ভ্যানচাপায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে বাবা-ছেলেসহ চারজনের বাড়িই টুনিয়াঘরা গ্রামে। একই সঙ্গে চারজনের মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। শুক্রবার রাতে একসঙ্গে তাদের জানাজা দাফন সম্পন্ন হয়েছে। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিহতদের ময়নাতদন্তসহ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের মরদেহ গ্রামে নেয়া হয়েছে। রাত ৮টায় স্থানীয় টুনিয়াঘরা ঈদগাহ মাঠে নিহতদের জানাজায় অংশ নেন শত শত গ্রামবাসী।

দুর্ঘটনায় টুনিয়াঘরা গ্রামের নিহতরা হলেন হাবিবুর রহমান তার ছয় বছরের ছেলে আরাবুর রহমান তাওসিন, মীর বাবুর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম, মীর রফিজ উদ্দীনের ছেলে শামছুর রহমান। নিহত অন্যজন জিয়াউর রহমানের নামাজে জানাজা দাফন তার নিজ গ্রাম উপজেলার জয়পুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এর আগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ কাভার্ড ভ্যানচাপায় নিহতদের বাড়িতে ছুটে যান। তারা নিহতদের স্বজনকে সান্ত্বনা দেন। দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলের একসঙ্গে মৃত্যুর ঘটনাটি ছিল হূদয়বিদারক। এভাবে বাবা-ছেলের মারা যাওয়ার ঘটনায় স্বজনকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে চোখের পানি সংবরণ করতে পারেননি অনেকেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের মণিরামপুরের ব্যাগারিতলা বাজারে কাভার্ড ভ্যানচাপায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল নিহতদের বাড়িতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা ছুটে যান। এক প্রকার দিনভর মানুষ শোকাহত বাড়িতে অবস্থান করেছে। সবাই অপেক্ষায় ছিলেন ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ কখন নিয়ে আসবেন স্বজনরা। পরে সন্ধ্যায় মরদেহ পৌঁছানোর পর স্বজনের আহাজারিতে আবারো হূদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। একই সঙ্গে একাধিক স্বজন হারানো পরিবারের সদস্যদের কান্নায় উপস্থিত মানুষের চোখও অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে। পরে দিনভর অপেক্ষায় থাকা স্বজন, স্থানীয় মানুষ এবং বিভিন্ন রাজনীতিক, সামাজিক নেতা নামাজে জানাজায় অংশ নেন।

সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলী হাসান, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. মুছা, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বশির আহম্মেদ খান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী জলি আক্তার, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা শ্রেণী-পেশার হাজারো নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান পাপ্পু জানান, তিনি যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিহতদের স্বজনের সঙ্গে ছিলেন। হাসপাতালে সব প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর মরদেহ বাড়িতে আনা হয়েছে। রাত ৮টায় স্থানীয় টুনিয়াঘরা ঈদগাহ ময়দানে নিহত চারজনের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত জয়পুর গ্রামের জিয়াউর রহমানের নামাজে জানাজা নিজ গ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন