সমসাময়িক

বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের প্রাসঙ্গিকতা এবং সতর্কতা

ড. মোহাম্মদ দুলাল মিয়া

কিছুদিন আগেও বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল উদীয়মান অর্থনীতির উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হতো। নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার জোর প্রচেষ্টা প্রশংসনীয় হয়েছে দেশে-বিদেশে। উন্নয়নের সে মডেল এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ জনগণের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়নি আশানুরূপ। মজুরি বৃদ্ধি গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে। জনসংখ্যা-পিরামিডের নিচের দিকে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্য মূল্যস্ফীতি একটি গুরুতর হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতি দেশের মুদ্রাকে দুর্বল করেছে অনেকটাই। বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারী থেকে উদ্ভূত নেতিবাচক প্রভাবের সঙ্গে অধুনা অর্থনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশ লাখ লাখ মানুষকে নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান ধারা বজায় রয়েছে, বিশাল জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান খারাপ হয়েছে সে কথা পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে।

বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে সরকার এরই মধ্যে রিজার্ভ থেকে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে ছেড়েছে। এতে সরকারের রিজার্ভ কমেছে বৈকি, কিন্তু টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকানো যায়নি। ব্যাংকগুলোকে টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে দিলেও সরকারি বিনিময় হারে আমদানিকারকরাও এলসি খুলতে পারছেন না। বলা বাহুল্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া অর্থনৈতিক সংকটের ইঙ্গিত দেয়। তাই ঋণের জন্য সরকার এরই মধ্যে একাধিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ চাওয়া। আইএমএফের কাছে বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফ প্রতিনিধিদের একটি দল এরই মধ্যে ঢাকা সফর করেছে। আলোচনাকে আরো এগিয়ে নিতে আরেকটি প্রতিনিধি দলের শিগগিরই ঢাকা সফরে আসার কথা।

বর্তমানে (২০২০-২১ অর্থবছরের শেষে) বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ হাজার ১৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরে ছিল হাজার ১১৩ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাৎ গত এক বছরে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ প্রায় হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। বাকি ঋণ তিনটি ভারত, চীন এবং রাশিয়া থেকে নেয়া হয়েছে। চীন থেকে নেয়া হয়েছে হাজার ৭৫৪ কোটি মার্কিন ডলার, রাশিয়া থেকে হাজার ১৩৮ কোটি এবং ভারত থেকে ৭৩৬ কোটি। এটি অবশ্যই একটি ইতিবাচক দিক বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা এবং অংশীদার দেশগুলোর কাছে ঋণ পেতে সমর্থ। এটি মূলত সম্ভব হয়েছে দেশটির স্থিতিশীল ক্রেডিট রেটিংয়ের কারণে। বিশ্বের তিনটি প্রধান ক্রেডিট রেটিং এজেন্সির দৃষ্টিতে বাংলাদেশের সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিংস্থিতিশীল

বৈদেশিক ঋণ নেয়ার কিছু সুবিধা অসুবিধা রয়েছে। ঋণ নেয়ার প্রাথমিক সুবিধা হলো ঋণ গ্রহণকারী দেশ একসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার একটি বড় অংশ পায়, যা অবকাঠামো এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে কাজে লাগায়। রাশিয়া থেকে ঋণের অর্থ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যবহার হচ্ছে। চীনের ঋণে তৈরি হচ্ছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। সাধারণ অবস্থায় উন্নয়নশীল দেশের রাজস্ব আয় ধরনের মেগা প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান যথেষ্ট নয়। তাই বৈদেশিক ঋণ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের কাজকে সহজ করে, যা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন অবিরাম বিদ্যুতের সরবরাহ, কম খরচে পরিবহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা, বন্দর এবং অন্যান্য সুবিধাসহ বর্ধিত অবকাঠামো দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত। উন্নয়নশীল দেশগুলোর এসব অবকাঠামো নির্মাণকাজকে সহজ করে বৈদেশিক ঋণ।

কথা বলা যেতে পারে, দেশীয় সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে অবকাঠামোর নির্মাণকাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব। পদ্মা সেতু নির্মাণ তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কিন্তু সরকার যদি দেশীয় উৎস থেকে ঋণ নেয় প্রাইভেট সেক্টরের ঋণের উৎস সংকুচিত হয়। অন্য কথায় সরকার যদি দেশীয় আর্থিক বাজার থেকে ক্রমাগত এবং অধিক পরিমাণে ঋণ নিতে থাকে, তাহলে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের জন্য ঋণ নেয়ার সুযোগ কমে যায়, যা ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ তথা কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বৈদেশিক ঋণের একটি ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক ঋণের প্রবাহ দেশের মুদ্রাবাজারকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে। একটি মেগা প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিদেশী পরামর্শক জড়িত থাকে। পরামর্শক হিসেবে পদ্মা সেতুতে চীন জাপানের বেশকিছু কোম্পানি জড়িত ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংস্থা পদ্মা সেতুর জন্য টোল আদায় করছে। পরামর্শদাতাদের সম্মানী বৈদেশিক মুদ্রায় দিতে হয়। এছাড়া মেগা প্রকল্পে ব্যবহূত বেশির ভাগ উপকরণ, মেশিনারিজ এবং সরঞ্জাম বিদেশ থেকে কেনা বা ভাড়া করা হয়। এর জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ প্রদান প্রয়োজন। সুতরাং ডলার এবং অন্যান্য হার্ড কারেন্সিতে গৃহীত ঋণ এসব কাজে সরাসরি ব্যবহার করা যায়। ফলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ে না। অন্যথায় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগৃহীত অর্থ যদি বিদেশীদের প্রদান করা হয়, তখন স্থানীয় বাজারে বিদেশী মুদ্রার চাহিদা এবং দেশীয় মুদ্রার জোগান বাড়ে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটে।

বৈদেশিক ঋণ আবার অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ না হয়ে অভিশাপও হতে পারে। কথা বলা যেতে পারে, প্রচলিত অর্থে ঋণ নিজেই একটি অভিশাপ। প্রচলিত মতবাদ আধুনিক উন্নয়নতত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলো যদি তাদের আর্থিক ব্যয়ের মাত্রা অভ্যন্তরীণ সম্পদের পরিমাণ দ্বারা সীমাবদ্ধ করে রাখে, তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে যায়। বরং ঘাটতি বাজেটের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ব্যয় করলে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। পরবর্তী সময়ে অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ঘাটতি বাজেটের জোগান দেয়া যায়। তাই অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের বার্ষিক রাজস্ব আয়ের বেশি ব্যয় করার সুযোগ রয়েছে।

তবে বাস্তবতা বই-পুস্তকের এমন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। বৈদেশিক ঋণের বোঝা অনেক দেশের জন্য দারিদ্র্যের ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বর্তমান ঋণ গ্রহণের অর্থ হলো করদাতাদের ওপর ভবিষ্যতের করের বোঝা বৃদ্ধি। ঋণ পরিশোধে ভবিষ্যতে নাগরিকের ওপর করের বোঝা বাড়াতে হবে, যার বিনিময়ে কর দানকারীরা কোনো বর্ধিত সুবিধা পাবেন না। অর্থাৎ বর্তমানের ঋণ আগামী প্রজন্মের প্রকৃত আয় হ্রাস করবে। ভবিষ্যতে প্রকৃত আয় হ্রাসের অর্থ হচ্ছে সঞ্চয়ের ওপর ছুরি চালানো। ফলে জাতীয় পুঁজি গঠন হুমকির মুখে পড়বে। বেসরকারি পুঁজি গঠনের ঘাটতি মানে বেসরকারি বিনিয়োগ সংকোচন। ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হবে। শ্লথ অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সরকারকে আবারো ঋণের দ্বারস্থ হতে হয়। এটা একটা দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে পরিণত হয়। এশিয়া আফ্রিকায় অনেক দেশ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে এমন দুষ্টচক্রের প্রভাব রয়েছে।

তৃতীয়ত, বৈদেশিক ঋণে বিভিন্ন শর্ত থাকে। ফলে ঋণগ্রহীতা ঋণের অর্থ স্বাধীনভাবে ব্যবহার করতে পারেন না। শ্রীলংকার উদাহরণ এখানে উল্লেখযোগ্য। চীন শ্রীলংকার অনেক উন্নয়ন প্রকল্পে যথেষ্ট ঋণ দিয়েছে কথা সত্য। এদের মধ্যে একটি বহুল আলোচিত হাম্বানটোটা বন্দর। শ্রীলংকার পক্ষ থেকে ভুল ছিল যে প্রকল্পের আর্থিক সম্ভাব্যতা বাস্তবতার নিরিখে যথাযথ যাচাই করা হয়নি। কিন্তু প্রকল্পজুড়ে চীন শ্রীলংকাকে পরামর্শ পরিষেবা, যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামসহ চীনা সম্পদ ব্যবহার করতে এক রকম বাধ্য করেছে। এর অর্থ হলো, চীন শ্রীলংকাকে সত্যিকার অর্থে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেয়নি, বরং একটি বন্দর নির্মাণ করেছে। আর নির্মাণ ব্যয় বাবদ সব অর্থ শ্রীলংকার ওপর ঋণের বোঝা হিসেবে চেপে বসে। এমন শর্ত নির্দেশ করে যে বৈদেশিক ঋণ কখনো কখনো দেশের জন্য বোঝা হয়ে উঠতে পারে।

ভারত চীন থেকে বাংলাদেশের ঋণ বিভিন্ন শর্তের জালে আবদ্ধ, যা উন্নয়ন উপযোগী নাও হতে পারে শেষ পর্যন্ত। আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার ঋণের তুলনায় ভারত চীনের ঋণ অনেক কম সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এর অর্থ হলো অনেক বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা নিয়মিত ব্যবধানে কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে, যা বাংলাদেশের রিজার্ভের ওপর একটি বাড়তি চাপ তৈরি করবে। উপরন্তু দ্বিপক্ষীয় ঋণের জন্য গ্রেস পিরিয়ড সাধারণত কম হয়। এটি বৈদেশিক ঋণের আরেকটি বিরূপ প্রভাব। যেসব উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অর্থ ধার করা হয়েছে, সেসব প্রকল্প থেকে অর্থের আন্তঃপ্রবাহ শুরু হওয়ার আগেই ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় চলে আসে। এতে করে নগদ প্রবাহের একটা ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে, অর্থাৎ ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য সরকারকে হয়তোবা নতুন করে ঋণ চুক্তি করতে হয়। এভাবেই ঋণের একটা দুষ্টচক্র তৈরি হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে বৈরী প্রভাব ফেলে।

অবশ্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা যেমন আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংক থেকে নেয়া ঋণও শর্তের কঠিন বেড়াজালে আবদ্ধ। কথা মনে রাখতে হবে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা তাদের প্রধান দাতা দেশগুলো দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়ে থাকে। সুতরাং এসব উন্নয়ন সংস্থার কর্মদর্শন তাদের দাতা দেশগুলোর কর্মদর্শনকে প্রতিফলিত করে, যা মূলত পুঁজিবাদ। সূত্রে কথা বলা যায়, উন্নয়ন সংস্থার ঋণের সঙ্গে সমন্বিত শর্তগুলো অর্থনীতির এমন সব সংস্কারকে নির্দেশ করে, যা পুঁজিবাদের পথকে প্রশস্ত করবে। সংস্কারগুলো ঋণগ্রহীতার আর্থসামাজিক সংস্কৃতির সঙ্গে জুতসই কিনা সেটা প্রধান বিবেচ্য বিষয় নয়। অতীতের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে এসব কঠিন শর্ত মানতে অপারগ হওয়ায় মঞ্জুরীকৃত অনেক ঋণ কাজে লাগানো যায়নি।

আইএমএফের সঙ্গে বর্তমান ঋণ আলোচনায় এমন কিছু শর্তের কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে জ্বালানি এবং কৃষি খাত থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার সম্পূর্ণ বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া, ব্যাংকের সুদের হারের উদারীকরণ ইত্যাদি। আইএমএফের ঋণের শর্ত পূরণের প্রস্তুতি হিসেবে সরকার এরই মধ্যে সার জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে অনেকটাই। এমনিতেই চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাধারণ মানুষকে চরম বেগ পেতে হচ্ছে, তার ওপর আকস্মিক এসব সংস্কার তাদের আরো কঠিন অবস্থার দিকে ঠেলে দেবে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের হার যদি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়, তা বিনিময় হারকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন কেবল আমদানি মূল্য এবং মূল্যস্ফীতিই বাড়াবে না, বরং বৈদেশিক মুদ্রায় গৃহীত সরকারি ঋণকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে।

বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা যায়, আইএমএফের ঋণ বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু আরোপিত শর্তগুলো সাধারণ মানুষের ভোগান্তিকে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সরকারের উচিত হবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করা, যাতে বৈদেশিক ঋণের ইতিবাচক প্রভাব সাধারণ জনগণের জীবনমানে প্রতিফলিত হয়।

 

. মোহাম্মদ দুলাল মিয়া: সহযোগী অধ্যাপক বিভাগীয় প্রধান, ফাইন্যান্স অর্থনীতি বিভাগ, নিজওয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ওমান

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন