ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ ও উন্নয়ন অংশীদারদের এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটি বাস্তবায়নে অর্থায়ন থেকে শুরু করে জ্ঞান, প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সহযোগিতা অথবা অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত জীবন নিশ্চিত করতেই ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করছে সরকার।
গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দেশী-বিদেশী নীতিনির্ধারক, গবেষক, শিক্ষক, উন্নয়নকর্মী ও উন্নয়ন সহযোগীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ আন্তর্জাতিক সম্মেলন: সমস্যা ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এ আয়োজনে তিনি নিজের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস দূতাবাস যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ হলো ৭০০ নদী এবং বিস্তীর্ণ নিচু জমি ও জলাভূমিসংবলিত বদ্বীপ। আমাদের এটিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারে। আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক একটি টেকনোইকোনমিক মহাপরিকল্পনা। এর পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়নে ২০২৫ সাল নাগাদ জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থের প্রয়োজন হবে। ফলে অর্থায়ন থেকে শুরু করে জ্ঞান, প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের অংশগ্রহণ এবং সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। তিনি এজন্য বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম দেশ ও উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা না থাকা সত্ত্বেও এর প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যে দেশগুলো রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। সরকারপ্রধান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কথা চিন্তা করেই তার সরকার কিছু স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘয়োদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর সবই আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে তার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রতিনিয়ত বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন, লবণাক্ততা, পাহাড় ধস ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে চলতে হয়। ডেল্টা প্ল্যান এজন্যই করা হয়েছে, যেন শতবছরের বাংলাদেশ টেকসই হয়, উন্নত-সমৃদ্ধিশালী হয়।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যানি গেরাড ভান লিউয়েন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
