টাকা পাচারে জড়িত কারা জানেন না অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারে কারা জড়িত তা জানেন না অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ব্যাপারে বিরোধী দলের সদস্যদের কাছে তালিকা আহ্বান করেছেন তিনি। আজ শনিবার জাতীয় সংসদে একটি বিল পাসের আলোচনার সময় এ আহ্বান করেন মন্ত্রী। 

ব্যাংকার সাক্ষ্য বহি বিল-২০২১ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু, রুস্তম আলী ফরাজী, রওশন আরা মান্নান, বিএনপির হারুনুর রশীদ, মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা অর্থ পাচার সম্পর্কিত অভিযোগগুলো করেন। তাদের অভিযোগ, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ ছাড়িয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। এসব বিষয়ে তারা অর্থমন্ত্রীর কাছে পরিস্কার জবাব চান এবং একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি তোলেন। 

শুরুতে অর্থমন্ত্রী এসব বিষয় নিয়ে নীরব থাকায় সংসদ সদস্যদের সমালোচনার মুখে পড়েন। পরে অর্থমন্ত্রী বলেন, কারা টাকা পাচার করে তা তিনি বলতে পারবেন না। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেন না, কীভবে জানবেন কে পাচার করে। এ সময় বিরোধী দলের সদস্যদের কাছে টাকা পাচারকারীদের তালিকা আহ্বান করেন মন্ত্রী। 

গত জুনে সম্পূরক বাজেট পাসের আলোচনার সময় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারে কারা জড়িত, তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য তার কাছে নেই। আজ এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অনেকভাবে বলেছেন, এই সংসদেও বলেছেন, দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমি আপনাদের বলেছি, যারা পাচার করে তাদের তালিকা আমাকে দেন। আমি তো পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও পাচার করে না। সুতরাং পাচার কে করে, আমি জানব কেমন করে, যদি আপনারা না দেন। 

আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালক হলো সে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর। সারা বিশ্বের অর্থনীতি যখন টালমাটাল অবস্থা সবাই কিন্তু বলছেন তখন আমরা ভাল করছি। আপনার কাছে যদি কোনো প্রমাণ থাকে বাংলাদেশের অর্থনীতি আমাদের আশেপাশের প্রতিবেশী দেশ, সাউথ এশিয়া, সাউথইস্ট এশিয়া, কোনো দেশের চাইতে যদি মনে করেন বা প্রমাণ থাকে যে আমরা তাদের চাইতে অর্থনৈতিক এলাকায় পেছনে আছি, তাহলে ইন দ্যাট কেস ইউ কাম টু মি, আই উইল গেট ইউ টু দ্যা সল্যুশন। অবশ্যই আমি দায়িত্ব নিয়ে সে কাজটি করব।

তিনি বলেন, অর্থনীতি এখন একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে। সারা বিশ্বের অর্থনীতি তিন শতাংশ কনট্র্যাকশন হয়েছে। কিন্তু দেশে এটি হয়নি। বলা হচ্ছে ২০৩৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিমাণ হবে সারা বিশ্বে ২৫তম। এই যে অর্জনগুলা, আপনারা যেভাবে বলেন মনে হয় যেন; দেশে কোনো অর্থনীতি নাই, দেশে কোনো ব্যাংকিং খাত নাই, দেশে কিছুই নাই। কিন্তু কিছুই যদি না থাকবে এগুলোবাদ দিয়ে আমরা উন্নতি করছি কীভাবে? এগুলো বাদ দিয়ে আমাদের প্রবৃদ্ধি আসছে কীভাবে? 

মন্ত্রী আরো বলেন, ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েছে, গ্রাহক বেড়েছে, আমানত বেড়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমান দেশসৃষ্টির পর থেকে সবচেয়ে কম এখন। ২০০৬ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। এখন সেপ্টেম্বর কোয়ার্টার পর্যন্ত এক লাখ এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এটা ৮ দশশিক ১২ শতাংশ। সবচেয়ে নিম্নে আছে এখন। প্রত্যেকটা ব্যাংক লাভে আছে। ঋণ নিয়ে যারা অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা করা হয়। ই-কমার্সের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। চলমান মামলা সংখ্যা ২ লাখ ৪৩ হাজার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন