এবার দেশে শুরু হচ্ছে ইউনিয়ন পর্যায়ে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম। আগামী ৭ আগস্ট সারা দেশে এ কার্যক্রম শুরু হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে গেলেই টিকা নেয়া যাবে। করোনা সংক্রমণের সার্বিক বিষয় নিয়ে সচিবালয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভা শেষে গতকাল এসব কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মন্ত্রী বলেন, টিকা কার্যক্রমের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার টিকা দেয়া হবে। টিকা কার্যক্রম সহজ করতে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে কেন্দ্রে গেলে তাকে টিকা দেয়া হবে। একই সঙ্গে সম্মুখসারিতে কর্মরত নাগরিকদের পরিবারের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সদস্যদের টিকার আওতায় আনা হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ টিকা কার্যক্রম মনিটরিং করবেন বলেও জানান তিনি।
সভাশেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে পঞ্চাশোর্ধ্ব ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেশি। এ বয়সের অনেকেই টিকা নেননি। এখন তাদের টিকাদানে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বিধিনিষেধ দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, চলমান বিধিনিষেধে শিল্প-কলকারখানা খোলার জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে যে অনুরোধ এসেছে তা গ্রহণ করা হবে না। ফলে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত অন্য সবকিছুর সঙ্গে শিল্প-কলকারখানাও বন্ধ রাখতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রফতানি বন্ধ করে দিলে সংকটে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর চীন থেকে উপহার ও কেনা ৫১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা পায় বাংলাদেশ। এর বাইরে কোভ্যাক্স থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের ১ লাখ ৬২০ ডোজ ও মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ টিকা এরই মধ্যে দেশে এসেছে। আগামী মাসের মধ্যে আরো দুই কোটি ডোজ টিকা দেশে আসবে। এছাড়া আগামী বছরের মধ্যে মোট ২১ কোটি ডোজ টিকা সরকারের হাতে আসবে বলে আগেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।