নদী খনন করে সব নৌপথ সচল করব: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নদীগুলো খনন করে দেশে সব নৌ-পথ সচল করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিভিন্ন ভাতা মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরাসরি প্রেরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে এক মতবিনিময়কালে কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সময় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সব থেকে বেশি উপকারভোগী জেলাগুলোর মধ্যে চাঁদপুর, পিরোজপুর, লালমনিরহাট নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল।

সময় লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিউর রহমান তিস্তা নদী খননের চুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হবে হবে, আমরা সব নদীই খনন করব। ব্যাপক কর্মসূচি নিচ্ছি। ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ নিয়েছি। কোনো নদী বাদ থাকবে না। নদীগুলো খনন করে আমরা নৌপথগুলো সচল করব। তিস্তা ব্রিজটাও আমার করে দেয়া।

মতবিনিময়কালে শেখ হাসিনা বলেন, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এসব এলাকা একসময় খুবই অবহেলিতই ছিল। আমরা এসব এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো বাড়ানো এবং আর্থসামাজিক উন্নতির ব্যবস্থা করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি সেই লক্ষ্য নিয়ে অনেক কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে অ্যাভিয়েশন ইউনিভার্সিটিটি খুব উপকার করবে। একটা ভালো প্রতিষ্ঠান হলে তাকে ঘিরে আরো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। আবার কুড়িগ্রামে দিচ্ছি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। লালমনিরহাটে আমরা পুরো পরিবর্তন করে দেব। অ্যাভিয়েশন ইউনিভার্সিটি হলে ওখানকার অবস্থাটাই বদলে যাবে। একসময় আমরা প্ল্লেন তৈরি করব, কোনো চিন্তা নেই।

তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হয়ে বলেছিলাম, দেশের মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করব। প্রধানমন্ত্রিত্ব আর কিছু না। প্রধানমন্ত্রিত্ব্ব আমার কাছে কাজ করার সুযোগ, কাজ করার ক্ষমতা। তাই মানুষের জন্য কাজ করব। মানুষের সেবা করব। আমার সরকার মানে মানুষের সেবক। সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই।

সরকারের মেয়াদে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, এর মাধ্যমে দেশের মানুষদের কেউ যেন নিজেকে একেবারে অপাঙেক্তয় মনে না করে। সবার যে একটা অধিকার আছে, প্রত্যেকের প্রতি রাষ্ট্রের যে একটা কর্তব্য আছে, সেটাই আমরা করতে চাই।

লক্ষ্যে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ২০০৭ সালে ইমার্জেন্সি ঘোষণা করা হয়। আমাকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও আমি বিরোধী দলে ছিলাম। সাধারণত আমাদের দেশে এটা হয় না। সবসময় দেখা যায়, যে ক্ষমতায় থাকে, যারা ক্ষমতায় থাকে তাকেই ধরে। কিন্তু সেবার আমাকেই আগে ধরল। কিন্তু আমি বসে থাকিনি। ওই কারাগারে থেকেই চিন্তা করেছিলাম, একদিন না একদিন তো এখান থেকে মুক্তি পাব। ক্ষমতায় এলে জনগণের কল্যাণে কী কী পরিকল্পনা গ্রহণ করব, তা কারান্তরীণ থাকাকালে নোট করে রেখেছিলাম।

দিনবদলের ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে অন্তত ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন

শুরু করলাম। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। তারা আমাদের বারবার ভোট দিয়েছে। আমাদের ওপর আস্থা বিশ্বাস রেখেছে। যে কারণে সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। আর একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আমরা উন্নয়নটা করতে পাচ্ছি মানুষের জন্য।

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে ভাতাগুলো দিচ্ছি, এটা যেন যথাযথ সঠিকভাবে যে মানুষটাকে আমরা দেব তার হাতে পৌঁছায়। মাঝে যেন আর কেউ না থাকে। তাদের অর্থটা তাদের হাতে যাবে। তাদের যেভাবে খুশি তারা সেভাবে ব্যবহার করবে। সেটার ব্যবস্থা করতে দীর্ঘদিন ধরে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি সেই ব্যবস্থাটা আপনারা নিয়েছেন।

দেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণের উদ্দেশে বলেন, আসুন, মুজিব বর্ষে আমরা এটাই আকাঙ্ক্ষা করি যে বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাকবে; সুস্থ থাকবে, উন্নত জীবন পাবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ ইনশা আল্লাহ আমরা গড়ে তুলব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন