দেশে গত এক সপ্তাহে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীর সংখ্যা ত্রিশের নিচে নামেনি একদিনও। আগস্টের প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যে এ সংখ্যা কয়েকদিন ৪০-এর ঘরেও উঠেছে বেশ কয়েকদিন। এর মধ্যে সংখ্যাটি অর্ধশতও ছুঁয়ে গিয়েছে একদিন। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণ দেখা না দিলেও মৃত্যুহার এখন বাড়ছে, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা পরিসংখ্যানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১৯ আগস্ট শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহারে পরিবর্তন আসে। প্রথম মৃত্যু রেকর্ড করার ঠিক পাঁচ মাস অতিক্রম করার দিনটিতে শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১ দশমিক ৩৩ শতাংশে। গতকাল তা আরেকটু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৩৪ শতাংশে।
দেশে কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব শুরুর পর পেরিয়েছে ২৪ সপ্তাহ। এখন পর্যন্ত প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের পর অতিক্রান্ত পাঁচ মাস চারদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৯০৭ জনের। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড করা গত ৩০ জুন। ওই দিন করোনা আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৬৪।
পরিসংখ্যান বলছে, দেশে করোনায় মৃতদের মধ্যে মার্চে মৃত্যু হয়েছে সর্বনিম্ন পাঁচজনের। এপ্রিলে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬৩ জনে। মে মাসে সংখ্যাটি ৫০০ অতিক্রম করে যায়। এরপর জুনে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১৯৭-এ। জুলাইয়ে মৃত্যুবরণ করেন ১ হাজার ২৬৪ জন। এদিকে আগস্ট মাসের প্রথম ২২ দিনে মৃত্যু হয়েছে ৭৯৬ জনের। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ কিছুটা কমলেও এ সময়ে সংক্রমণ বিবেচনায় মৃতের হারে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে।
সর্বশেষ গতকাল সকাল পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে আরো ৪৬ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরো ২ হাজার ২৬৫ জন। এ সময় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, প্রায় সোয়া দুই হাজার নতুন সংক্রমণ শনাক্তের পর দেশে এখন পর্যন্ত শনাক্তকৃত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৬২৫। এদিকে এ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে আরো ২ হাজার ৯৫২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৭-এ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সকাল পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারী ৪৬ জনের মধ্যে পুরুষ ও নারী যথাক্রমে ৩৬ ও ১০ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৪৫ জন। বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে একজনের।